নিজস্ব সংবাদদাতা, আরামবাগ:- বর্তমানে সাংবাদিকদের হুমকি দেওয়া যেন এক ‘রেওয়াজে’ পরিণত হয়েছে। রাজনীতির অলিন্দে এই প্রবণতা ক্রমেই বাড়ছে। কিন্তু এবার আর চুপ করে থাকছে না সংবাদমাধ্যম। সাংবাদিকদের কাজ করতে বাধা দিলে প্রতিবাদে গর্জে উঠবে আরামবাগ জেলা প্রেস ক্লাব—এমনই বার্তা দিল সংগঠন।
সম্প্রতি আরামবাগের এক ডিজিটাল মিডিয়ার সম্পাদক সুরজ আলী খান-কে হুমকি দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে এক টোটো ইউনিয়নের নেতা শেখ সাদ্দাম-এর বিরুদ্ধে। অভিযোগ, রাতে টোটো ভাড়া বৃদ্ধি নিয়ে একটি প্রতিবেদন তৈরি করছিলেন সুরজ, সেই কারণেই তাঁকে ফোনে হুমকি দেওয়া হয়।
ইতিমধ্যে আরামবাগ থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন ভুক্তভোগী সাংবাদিক। সেই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে মঙ্গলবার আরামবাগ থানার আইসির সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন জেলা প্রেস ক্লাবের সম্পাদক সজল সামন্ত-সহ অন্যান্য সাংবাদিকরা। ক্লাবের তরফে জানানো হয়েছে, রাজনৈতিক নেতাদের এই হুমকির সংস্কৃতি গণতন্ত্রের পক্ষে বিপজ্জনক।
সজল সামন্ত বলেন,
“এই ধরনের কালচার আমাদের সমাজকে বিপদের দিকে ঠেলে দিচ্ছে। সাংবাদিকদের হুমকি দেওয়া মানেই গণতন্ত্রে আঘাত। যে নেতা গণতন্ত্রের কথা বলেন, তিনিই যদি সংবাদমাধ্যমের কণ্ঠরোধ করেন, তাহলে সেটা মেনে নেওয়া যায় না। আমরা তৃণমূল নেতৃত্বের কাছে দাবি জানাই, অভিযুক্ত নেতা যদি দলের পদে থাকেন, তাঁকে অপসারণ করুন। আর না থাকলে দল জানাক—এই মন্তব্য তাদের দায় নয়।”
তিনি আরও বলেন,
“আমরা আরামবাগ থানার আইসির সঙ্গে দেখা করেছি। তিনি আশ্বাস দিয়েছেন, সাংবাদিকরা যেন স্বাচ্ছন্দ্যে কাজ করতে পারেন, সে বিষয়ে প্রশাসন সচেষ্ট থাকবে। অভিযোগের যথাযথ তদন্ত করে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
উল্লেখ্য, আরামবাগ জেলা প্রেস ক্লাবে রাজ্যের প্রথম সারির দৈনিক ও স্যাটেলাইট টিভি চ্যানেলের সাংবাদিকদের পাশাপাশি বিভিন্ন ডিজিটাল মিডিয়ার প্রতিনিধিরাও সদস্য। এই ঘটনার প্রতিবাদে সকল স্তরের সাংবাদিক একত্রিত হয়ে সুরজ আলী খানের পাশে দাঁড়িয়েছেন।
গণতন্ত্রের চতুর্থ স্তম্ভের উপর আঘাত মানেই সমাজের ভিত নড়ে যাওয়া। এই বার্তা নিয়েই এবার রাস্তায় নামলো আরামবাগ জেলা প্রেস ক্লাব।
গানে গানে প্রতিবাদ!
এই প্রতিবাদ এবার থামেনি শুধু কথায় — যুক্ত হল গানেও।
আরামবাগে সাংবাদিককে হুমকির ঘটনার প্রতিবাদে পথে নামলেন রাষ্ট্রপতি পুরস্কারপ্রাপ্ত প্রখ্যাত বাউল শিল্পী স্বপন দত্ত বাউল।
তাঁর প্রতিবাদী গান শুধু ক্ষোভই নয়, উজাড় করে দিল ভালোবাসা ও গণতন্ত্রের বার্তা।
রাস্তায় দাঁড়িয়ে গাওয়া তাঁর গান ছুঁয়ে গেল পথচারীদের হৃদয়।
গণতন্ত্রের কণ্ঠরোধের চেষ্টার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ চলছে নানা ভাষায় — কখনো সংবাদে, কখনো সুরে!
Leave a Reply