পূর্ব মেদিনীপুর, নিজস্ব সংবাদদাতা:- বৃহন্নলা সমাজের প্রতিনিধিরা করলেন দুর্গা প্রতিমার আবরণ উন্মোচন মহিলা স্বাস্থ্যকর্মীর প্রজ্বলন করলেন মঙ্গলদ্বীপ,বিরামহীন বয়ে চলা পূর্ব মেদিনীপুর জেলার রূপনারায়ণের পাড়ে কোলাঘাট নতুন বাজার সংকেত ক্লাব এবং ছাত্র সংঘ আয়োজিত আগমনী উৎসব এই বৎসর ৫৩ তম বর্ষে পদার্পণ করল। এমনিতেই সারাবছর বহুমুখী জনকল্যাণমূলক এবং সমাজ সচেতনতার কাজে এই ক্লাবের নাম জেলা ছাড়িয়ে বহুদূর বিস্তৃত।
এই বৎসর এই পুজোর সূচনা করলেন বৃহন্নলা সমাজের প্রায় পনেরোজন প্রতিনিধি এবং এলাকার সরকারি মহিলা স্বাস্থ্যকর্মীবৃন্দ।
এরপর উদ্বোধকদের ফুল, চন্দন, উত্তরীয়, নববস্ত্রে, স্মারক ও মিষ্টান্নের শারদ সম্মানে সম্বর্ধনা দেওয়া হয়।
এই পুজো কমিটির সম্পাদক সম্রাট ভৌমিক জানিয়েছেন,-
“কেবলমাত্র জন্মগত কারণে ভিন্ন লিঙ্গ ও শারীরিক গঠনের জন্য একশ্রেণীর মানুষ আজো সামাজিকভাবে বৈষম্যের স্বীকার হয়ে আসছেন। নিত্যজীবনে বিভিন্নভাবে তারা লাঞ্ছিত বঞ্চিত অবহেলিত। আমরা এই উদ্যোগের মাধ্যমে এই বার্তাই দিতে চাই যে, ওনারা এই সমাজের এবং আমাদেরই কাছের মানুষ।
এছাড়াও যে সমস্ত সরকারি মহিলা স্বাস্থ্যকর্মী মানুষের সেবায় দায়িত্ব ও কর্তব্য পালনে দিবারাত্র এবং সাধ্যাতীতভাবে কাজ করে চলেছেন তাদের উদ্বোধক সম্মানে সম্মানিত করে আমরা পাশে থাকার বার্তা দিতে চেয়েছি। অন্যদিকে সহ সভাপতি শ্যামল আদক জানিয়েছেন,-
” আমরা একমাস পূর্বেই শারদোৎসবের সূচনা করেছি পূর্ব মেদিনীপুর জেলার বিভিন্ন ব্লকের দুঃস্থ টি বি পেসেন্টদের পুষ্টিযুক্ত খাদ্যসামগ্রী বিতরণের মাধ্যমে। যা চলবে আগামী বছর পুজোর মাস পর্যন্ত এক বছর ধরে। এই মর্মে জেলা মূখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিকের সাথে একটি মৌ স্বাক্ষর সম্পন্ন হয়েছে।” এছাড়াও উৎসবের জনকল্যাণমূলক কর্মসূচিকে গুরুত্ব দিয়ে প্রায় তিনশজন দুঃস্থ বয়স্ক মানুষের চোখে পাওয়ার ম্যাচিং চশমা, বয়স্ক অথর্ববেদ হাতে লাঠি, দুঃস্থ ছাত্রছাত্রীদের হাতে লেখাপড়ার সামগ্রী তুলে দেওয়া হবে বলে জানানো হয়েছে। সাজ সজ্জায় সারা মন্ডপজুড়ে শোভা পাবে
বাল্য বিবাহ প্রতিরোধ, বিবাহ অনুষ্ঠানে পণ প্রথার বিরুদ্ধে, ডেঙ্গু প্রতিরোধ, প্লাস্টিক দূষণ রোধে, পথ নিরাপত্তা নিয়ে বিভিন্ন মডেল সহ চিত্র প্রদর্শনী। অনুষ্ঠিত হচ্ছে মরনোত্তর অঙ্গদান অঙ্গীকার শিবির।
সভাপতি অভিজিত সামন্ত জানিয়েছেন,- এবারের অন্যতম আকর্ষণ,চন্দননগরের জগদ্ধাত্রী ঘরানার প্রায় বিশ ফুট উচ্চতার স্বর্ণালী গহনার সাজে সজ্জিতা দূর্গা বাহিনী।
এলাকাজুড়ে থাকবে অত্যাধুনিক বৈচিত্র্যময় ডিজিটাল লাইট এ্যান্ড সাউন্ড সিস্টেম। মহালয়ায়র দিন উদ্বোধনের দিন থেকে মহাষষ্ঠীর দিন পর্যন্ত আটদিন ধরে অনুষ্ঠিত হবে শারদোৎসব বিষয়ক বসে আঁকো, দুর্গা সাজো প্রতিযোগিতা থেকে নানা অনুষ্ঠান। ” উল্লেখ্য রূপনারায়ণ পাড়ে সংকেত নির্মিত গৌরাঙ্গ ঘাটে এদিন মহালয়ার স্মৃতি তর্পণে ভোর থেকেই উপচে পড়া মানুষের ভিড় লক্ষ্য করা যায়। সবমিলিয়ে মহালয়ার পবিত্র সকাল থেকেই এই উদ্বোধনের মাধ্যমে কোলাঘাটে পুজো উৎসবের আমেজ ও মেজাজ ছড়িয়ে পড়ল বলা যায়।
দেবীপক্ষের সূচনাতেই কোলাঘাট পুজোর অভিনব উদ্বোধন কোলাঘাটে।

Leave a Reply