নিম্নমানের খাবার বিলির প্রতিবাদ করাই দুই আবাসিক পড়ুয়ার বাঁশ, লাঠি দিয়ে মেরে হাত-পা ভেঙে দেওয়ার অভিযোগ উঠলো বৈষ্ণবনগরের একটি বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে।

নিজস্ব সংবাদদাতা, মালদা:- নিম্নমানের খাবার বিলির প্রতিবাদ করাই দুই আবাসিক পড়ুয়ার বাঁশ, লাঠি দিয়ে মেরে হাত-পা ভেঙে দেওয়ার অভিযোগ উঠলো বৈষ্ণবনগরের একটি বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে। সংকটজনক অবস্থায় ওই দুই আবাসিক পড়ুয়াকে চিকিৎসার জন্য ভর্তি করানো হয়েছে মালদা শহরের গাবগাছি এলাকার একটি নার্সিংহোমে। দুইজনেরই আইসিইউতে চিকিৎসা চলছে। এই ঘটনায় ওই বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রধান শিক্ষক, হোস্টেল সুপার সহ দশ জনের বিরুদ্ধে বৈষ্ণবনগর থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন অসুস্থ দুই পড়ুয়ার পরিবার। অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে পুলিশ হোস্টেল সুপার শামসুজ্জোহাকে আটক করেছে।
এদিকে শনিবার সকালে ওই বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে দুই ছাত্রের ওপর নির্যাতনের ঘটনার প্রতিবাদ জানিয়ে স্থানীয় বাসিন্দারা তুমুল বিক্ষোভ দেখান। এমনকি ওই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সামনে ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ সোচ্চার হোন আক্রান্ত পড়ুয়ার পরিবার থেকে স্থানীয় বাসিন্দারা। অবিলম্বে ওই বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধের দাবি তোলেন স্থানীয় বাসিন্দারা। পরে বৈষ্ণবনগর থানার পুলিশ এসেছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
পুলিশ ওই স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, আহত দুই পড়ুয়ার নাম নাসিব রাইহান (১৬) এবং নাসিম আখতার (১৬)। এরা দুজনেই দশম শ্রেণীর ছাত্র। নাসিবের বাড়ি গাজোল থানার রামনগর এলাকায়। এবং নাসিমের বাড়ি মানিকচক থানার সাহাবাতটোলা এলাকায়।
আক্রান্ত ছাত্রের পরিবার জানিয়েছেন, দীর্ঘদিন বৈষ্ণবনগর থানার ১৬ মাইল এলাকার “টার্গেট পয়েন্ট আর” নামে একটি বেসরকারি স্কুল কর্তৃপক্ষ আবাসিক পড়ুয়াদের কাছ থেকে মোটা টাকা মাসিক খরচ হিসাবে নিচ্ছে ঠিকই। তাদের ভালো শিক্ষা কাঠামো দেওয়া হয় না। নিম্নমানের খাবার দেওয়া হচ্ছিল। শুক্রবার সকালে নিম্নমানের খাবার দেওয়া হয়েছিল। আর সেই বাসি খাবারই আবার রাতে দেওয়া হয় । এনিয়ে ওই দুই ছাত্র প্রতিবাদ করে। তারা বাইরে থেকে খাবার কিনে আনার কথা বলে। এরপরই ওই স্কুলের হোস্টেল সুপারের নেতৃত্বে রাত সাড়ে এগারোটা নাগাদ দুই পড়ুয়াকে বাঁশ, লাঠি দিয়ে ব্যাপক মারধর করা হয়। তাদের হাত-পা ভেঙে গিয়েছে। এরপরই নার্সিংহোমে ফেলে দিয়ে পালিয়ে যাই ওই শিক্ষা প্রতিষ্ঠান কর্তৃপক্ষ। পরে বিষয়টি জানতে পেরে আমরা মালদায় আসি। এই ঘটনায় “টার্গেট পয়েন্ট আর” স্কুলের প্রধান শিক্ষক উজির হোসেন, হোস্টেল সুপার শামসুজ্জোহা সহ দশ জনের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে।
বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রধান শিক্ষক উজির হোসেন জানিয়েছেন, ঘটনার সময় আমি ছিলাম না। রাতে হোস্টেল সুপারের উপস্থিতিতে কি ঘটেছে তাও পরিষ্কার করে বলতে পারব না। তবে ঘটনার অবশ্যই তীব্র নিন্দা করছি।
বৈষ্ণবনগর থানার পুলিশ জানিয়েছে, ওই বেসরকারি স্কুল কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দায়ের হয়েছে। হোস্টেল সুপারকে আটক করা হয়েছে। পাশাপাশি পুরো ঘটনাটি নিয়ে তদন্ত শুরু করা হয়েছে।

ছবি ———– আক্রান্ত দুই পড়ুয়া চিকিৎসাধীন নার্সিংহোমে বৈষ্ণব নগরে বেসরকারি স্কুল কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে প্রতিবাদে জাতীয় সড়ক অবরোধ। তদন্তে পুলিশ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *