বাংলাদেশের সমুদ্র সৈকত বাঁশবাড়িয়া ভ্রমণ।

বাংলাদেশের চট্টগ্রাম জেলার সীতাকুন্ড উপজেলা বিভিন্ন কারনে পর্যটকদের কাছে আর্কষণীয় স্থান হিসেবে বিবেচিত। নৈসর্গিক সৌন্দর্যের লীলাভূমি সীতাকুন্ডে রয়েছে অশেষ নয়নাভিরাম চন্দ্রনাথ পাহাড়, ইকোপার্ক সবুজ বনাঞ্চল বেষ্ঠিত আঁকা-বাঁকা পাহাড়ী পথ, পাহাড়ী লেকের মনোরম দৃশ্য। কিছুদিন আগে নতুন একটি পর্যটন স্থান যুক্ত হয়েছে আগের লিস্টে, আর সেটা হলো বাঁশবাড়িয়া সমুদ্র সৈকত।

ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে চট্টগ্রাম শহর থেকে ২৫ কিঃমি উত্তরে একটি ছোট্ট বাজারের নাম বাঁশবাড়িয়া বাজার। এই বাজারের মধ্য দিয়ে সরু পিচ ঢালা পথে মাত্র ১৫ মিনিটে পৌঁছানো যায় বাঁশবাড়িয়া সমুদ্র উপকুলে। এই সমুদ্র সৈকতের মুল আকর্ষণ হল, প্রায় আধা কিলোমিটারের বেশি আপনি সুমুদ্রের ভিতর হেটে যেতে পারবেন। যদিও সবাই এইটাকে সুমুদ্র বলে কিন্তু গুগল ম্যাপে এটাকে খাল হিসেবে দেখায়। তবে সুমুদ্রের মতই বড় বড় ঢেউ আছে। এখানে এসে নির্বিঘ্নে ঘুরে বেড়ানো যাবে, আহরন করা যাবে প্রকৃতির শোভা। ঝাউ বাগানের সারি সারি ঝাউ গাছ ও নতুন জেগে উঠা বিশাল বালির মাঠ, সব মিলিয়ে এ এক অপূর্ব সৌন্দর্য অপেক্ষা করছে দর্শনার্থীদের জন্য।

কখন যাবেন
বাঁশবাড়িয়া সৈকতের সবচেয়ে আকর্ষণীয় বিষয় হচ্ছে সেখানকার সূর্যাস্ত দেখা তাই দুপুরের পর সেখানে যেতে পারেন। সেখানে আছে একটি লোহার ব্রীজ, যা দিয়ে আপনি হেঁটে যেতে পারবেন সমুদ্রের উপর দিয়ে। মূলত এটিই সবচেয়ে বেশি আকর্ষিত করে পর্যটকদের। এছাড়া চাইলে স্পিডবোটে করে ঘুরে দেখতে পারবেন চারপাশ। শীতের সকালে গেলে সদ্য গাছ থেকে নামানো খেজুর রস খাওয়ার সুযোগ পাবেন। কিনতে চাইলে প্রতি লিটার খরচ পড়বে মাত্র ২০ টাকা! আর সন্ধ্যার পরপরই ফিরে আসা উচিত কারণ পরবর্তীতে ফিরে আসার সিএনজি পেতে সমস্যা হতে পারে। সবচেয়ে ভাল হয় সিএনজি রাত কয়টা পর্যন্ত চলাচল করে সেটা জেনে নেয়া।

কিভাবে যাবেন
চট্টগ্রাম এর অলংকার থেকে সীতাকুণ্ড যাওয়ার যেকোন বাস বা টেম্পুতে করে বাঁশবাড়িয়া নামতে হবে। ভাড়া ৩০-৪০ টাকা। অলংকার থেকে চট্টগ্রাম হাইওয়ে ধরে ২৩ কিঃমিঃ যেতে হবে। এটা বাড়বকুন্ডের একটু আগে। বাঁশবাড়িয়া নামার পর সিএনজি তে করে আরো ২.৫ কিঃমিঃ গেলে বেড়িবাঁধ পাওয়া যাবে। সিএনজি ভাড়া জনপ্রতি ২০টাকা করে। চাইলে রিজার্ভও নেওয়া যায়। ওখানেই বাঁশবাড়িয়া সমুদ্র সৈকত। সিএনজি রিজার্ভ করে নিতে পারেন তাহলে আপনাকে বাঁধের সামনে পযর্ন্ত নিয়ে যাবে। রিজার্ভ ভাড়া ৩০০ টাকা নিবে।

ভ্রমণ পরিকল্পনা
সীতাকুন্ড উপজেলায় দেখার মত অনেক দর্শনীয় জায়গা আছে। সীতাকুন্ডের পাশেই মিরেরসরাই ও ভাটিয়ারিতেও আছে অনেক দর্শনীয় স্থান। শুধু সীতাকুন্ডেই আছে দেখার মত, গুলিয়াখালি সী বিচ, সীতাকুণ্ড ইকো পার্ক, মহামায়া লেক, চন্দ্রনাথ মন্দির, কুমিরা ঘাট, কমলদহ ঝর্ণা, ঝরঝরি ঝর্ণা সহ আরও অনেক কিছু। আপনি আপনার ভ্রমণ পরিকল্পনা সেইভাবেই সাজিয়ে নিতে পারেন। শুধু বাঁশবাড়িয়া সী বিচ দেখার পরেও আপনার হাতে কত সময় আছে, সেই হিসেব করেই আগে বা পরে সাজিয়ে নিতে পারেন আপনি অন্যান্য কি কি দেখবেন তার ট্যুর প্ল্যান।
কোথায় থাকবেন
মীরসরাই বা সীতাকুন্ডে নিন্মমানের হোটেল পাবেন। সীতাকুণ্ড বাজার গেলে সেখানে হোটেল সাইমুন আছে। ভালো হোটেলে থাকতে চাইলে চট্টগ্রাম চলে আসতে হবে। নয়দুয়ারি বাজারে খুজলে মধ্য মানের থাকার হোটেল পাওয়া যেতে পারে। চট্টগ্রামে নানান মানের হোটেল আছে।

।।সংগৃহীত।।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *