মাহবুবা ফারুক-এর একগুচ্ছ কবিতা।

তুমি বটবৃক্ষ

আমি নাহয় ধুলোর কণা
ধুলো তোমার পায়ে
একটু নাহয়
বসতে দিলে তোমার ছায়ায়
উড়তে দিলে বসন্তে
তোমার পাতায় পাতায়
উড়লে কি আর ধুলো বটবৃক্ষ হয় বড় ছোট ব্যবধান যায় কি তবে ঘুচে !
ধুলোর উপর সদয় হতেও এত কেন দ্বিধা?

কাটাকাটি

জয়রামের মা আমার ধাত্রীমাতা আমাকে পৃথিবীর যোগ্য করার জন্যে নাড়ী কেটে মায়ের থেকে আলাদা করে দিয়েছিল – টেনে এনেছিল মায়ের উষ্ণ জঠর খালি করে মা’র বুক ভরে দিয়েছিল
নাড়ী কেটেই পাবার আনন্দ পূর্ণ হয়েছিল বড় হতে হতে কাটতে দেখেছি মায়া ভালোবাসা সুখ সম্পর্ক এমন অনেক কিছু কখনো ভাইবোন কখনো বন্ধু কখনো অন্য কেউ কেটে কেটে ছোট হয়ে গেছে মন যাবার পথ যাবার জায়গা আরো আরো— কেউ আবার পৃথিবীর সাথে সম্পর্ক কেটে বাড়িয়ে দেয় মায়া কষ্ট অন্যদের বুকে কাটা মানে বিচ্ছিন্ন হওয়া নয় জয়রামের মায়ের কাছে জেনেছি তবু সেই থেকে আমি কাটাকুটি খেলার ক্রীড়নক।

একাকীত্ব

আমার চাঁদে কি কোনো কলংক ছিল ?
ছিল ভাগ্যলিখা ভুল কিছু ? নাকি আকাশের সময় হয়নি আমাকে দেখার ?
তারপরও তো আলো দিয়েছি বনের মাথায় ।
পথে পথে ।
জোছনা ঢেলেছি নদীর চরে ।

বন আমার কেউ নয়।অমাবশ্যায় ঢাকে পথ অন্ধকারে।
সে নদীও আমার আপন কেউ নয় ।
জোছনা মেখে সে তুলেছে ঢেউ তার প্রিয় তিথিতে।
আমাকে ডাকেনি সে একবারও ।
সবাই জন্ম মৃত্যুর মত একা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *