প্রত্যয়ের পথে : সুচেতা বিশ্বাস চৌধুরী।

জং ধরা ভাগ্যের দিনলিপিতে লিখিত পূর্ব নির্ধারিত অশনিসংকেত যেন..
বিদ্রুপকারী অবাধ্য নিয়তির জ্বলন্ত এক হস্তাক্ষর।
ঈশান কোণে লাঞ্ছনার মেঘ জমেছিল বহুদিন আগেই,
বেলা বাড়তেই সম্পৃক্ত জলীয়বাষ্প কানায় কানায় ভরে, ঝরে পড়েছে ঊষর ধরিত্রীর ছেঁড়া আঁচলে।
সোনালী ধানক্ষেত শূন্য করে কবেই উড়ে গিয়েছে পরিযায়ী ইচ্ছেডানা,
জমা খরচের পান্ডুলিপি জুড়ে এখন কেবল পড়ে রয়েছে একমুঠো হা’হুতাস আর রক্তাক্ত ঋণের দাপট।
সুযোগ বুঝে প্রতিবাদী শব্দেরাও আজ বেছে নিয়েছে হোম কোয়ারেন্টাইনের সুখ।
ক্রমশ পাল্টে যাচ্ছে গায়ের রঙ, বদলে যাচ্ছে গলার স্বর।
পঙ্কিল এই নিয়তির চৌকাঠ পেরিয়ে তবুও আমি একাকী ঠায় দাঁড়িয়ে প্রাণহীন এই উপত্যাকায়,
খোলা আকাশকে সাক্ষী রেখে লোকচক্ষুর আড়ালে আগলে রেখেছি নকল বুঁদির গড়।
দূরে থেকে ভেসে আসা নোনা হাওয়ার ফিসফিস শব্দে তাই যখনই পেতেছি কান;
ভাষাদের অনুচ্চারিত শব্দতরঙ্গে প্রতিধ্বনিত হয়েছে পরিবর্তনের পদধ্বনি।
আশ্রয়ের খোঁজে দু’একটা বর্ণমালা যখনই সাঁতার কেটেছে স্রোতের বিপরীতে,
খুব সন্তপর্ণে তাদের দেহরসে ডুবিয়ে নিয়েছি কলম;
ক্ষয়িষ্ণু শিলালিপির শরীরের প্রতিটি ভাঁজে ক্রমশ জেগে উঠেছে অবন্তি নগরীর সমাধিস্থ কাহিনী।
সময়ের অভিধানে তাই স্তূপীকৃত ক্ষোভের উত্তাপে..
কম্পমান মােমের শিখায় চোখে চোখ রেখে বেনামী ঈশ্বরের কাছে আমি হাত পেতে চেয়ে নিয়েছি হেমলকের পাত্র।
এবার শুধু পোষাক পরিবর্তনের পালা।
রেনেসাঁ…. তুমি অপেক্ষা করো।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *