হরিহর ময়রা (ছোট গল্প) ::: আব্দুল রাহাজ।।

চার রাস্তার মোড় সেখানে একটা ছোট্ট মিষ্টির দোকান সেই দোকানে থাকতেন হরিহর চাটুজ্যে। খুব ভালো মিষ্টি বানাতেন এলাকায় খুব নামডাক এমনকি গ্রামের অনুষ্ঠান বাড়িতে হরি হর মশাইয়ের ডাক পড়ে। হরিহর মশাইয়ের নাকি সুরেশ হাবুল জগা ও বল্টুদের প্রত্যেকদিন দাদুর তৈরি করা গোটাকয়েক মিষ্টি ওদের জন্য বিকেল বেলা নদীর ধারে আনতো। ওরা সবাই বেশ মজা করে খেত একদিন বেচারা ধরাই পড়ে গেল দাদুর কাছে খেলো কান মলা আ উ উ করতে করতে দৌড় দিয়ে পালিয়ে গেল। পাড়ায় সেদিন অনুষ্ঠান হচ্ছে ওরা কয়েকজন যুক্তি করলো হরিয়র বাবুর মিষ্টি খাবে তোদের কাছে তো পয়সা নেই তা যা হয় হবে ওরা সবাই দোকানের সামনে গিয়ে দাঁড়ালো তখন হরিহর দাদু মিষ্টি বানাতে ব্যস্ত।ওরা চাপা গলায় বলল দাদু মিষ্টি খাব একটা করে দেবেন আরে চতুর্থ স্তম্ভ এসো এসো এসো আজ পাড়ায় অনুষ্ঠান বলে আমি তোমাদের মিষ্টি খেতে দেবো একেবারে কপাল খুলে গেল দাদু ওদের মিষ্টি খাইয়ে কাজে লাগালে ন। হাবুল বলল এটা কি হলো প্রথমে ভাবলাম ভালোই হলো এ তো দেখছি কান্ড হয়ে গেল আমাদের দ্বারা সব কাজ করিয়ে নিল পরেরদিন বিকেল বেলায় নদীর ধারে বসে এই কথা আলোচনা করছে ওরা এরমধ্যে বল্টু বলে উঠল একটা কাজ করবি দাদুকে ভয় দেখাতে হবে এমনিতে দাদু ভূত দেখলে ভয় করে তাহলে উচিত শিক্ষা পাবে সঠিক কথা জগা বলে উঠলো। তাহলে আজ রাতে দশটার দিকে করা যাক আকাশটা যেন কালো মেঘে ঢেকে আছে মনে হচ্ছে রাত্রে বৃষ্টি হবে তাহলে তো ভালই হবে। এমনিতে দাদুর শরীর রোগা পটকা দেখ না কি করি বাড়ি যাবে তো বাগান এর মধ্য দিয়ে একেবারে মোগমোলাই করব। সুন্দর দিকে খুব বৃষ্টি হচ্ছে এদিকে দশটা বেজে গেল ওরা সবাই সময়মতো পৌঁছে গেল সাদা কাপড় পড়ে লুকিয়ে থাকলো জগা একটা আস্তে করে আওয়াজ করে বললো আসছে আসছে দাদু আপন মনে আসছে ঝিরঝির বৃষ্টি পড়ছে হাবুল হুম হুম করে উঠলো দাদু পিছন ফিরে তাকাল কেউ নেই তারপর জগা হিহি করে উঠলো দাদু ভয়ে কুপোকাত আমরা সবাই হইহই করে পালিয়ে গেলাম হতচ্ছাড়া দল সব। পরের দিন সকালবেলা দাদুর সাথে দোকান খুলে বসে আছি ওরা পা টিপে টিপে দোকানের সামনে দিয়ে চলে গেল টের পেল না ওরা মহানন্দে স্কুলে গেল। বাড়ি ফেরার সময় সুরেশ কে ডাক দিল এই সুরেশ শুনে যা তোদের স্কুল নাকি আজ শেষ হলো ও বলল হ্যাঁ আমাদের ইস্কুল আজকে শেষ হলো ওদের কেউ ডাকলো হরিহর হ্যাঁ হ্যাঁ এবারে আমরা শহরের স্কুলে পড়বো বা বা। খুব ভালো মে তো তোরা একটু সন্দেশ খা আর তো আমারে জ্বালাতে পারবি না কালকেই তো সবাই চলে যাবে জগা বললো সুরেশ কোথায় পড়বে দাদুপুর পিসির বাড়ি চন্দননগরে সত্যিই তাই তোর পিসিরা বাড়িতে এসেছে তোর নিয়ে যায় বলে। ওরা দাদুকে জড়িয়ে ধরে রাখলো ওরা বলল দাদা তুমি খুব ভালো মানুষ খুব ভালো মানুষ আমরা শহর থেকে পড়াশোনা করে ফিরে আসা পর্যন্ত থাকবে তো আরে বাবা হ্যাঁ হ্যাঁ না থাকলে তোদের মনের মধ্যে স্মৃতি হয়ে থাকবো হরিহর ময়রা হিসেবে। তোদের মাঝেই আমি বেঁচে থাকব আজীবন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *