শ্রীরাধাপ্রেমরস-রসিক প্রভুপাদ শ্রী শ্রীজীব ::: রাধাবিনোদিনী বিন্তি বণিক।।।

0
724

(ইনি হলেন শ্রীধাম নবদ্বীপের শ্রীবাস অঙ্গনের প্রভুপাদ শ্রীনিমাই চাঁদ গোস্বামীর পুত্র। সিদ্ধ তিনকড়ি গোস্বামী প্রভুর থেকে ভজনশিক্ষায় শিক্ষিত একান্তভাবে রাধাদাস্যনিষ্ঠ । তাঁর দিব্য জীবনী স্মরণ করা হচ্ছে।)

ষাট অথবা সত্তরের দশকের কথা । রাধাকুন্ডে পাঠ চলছে শ্রীল রঘুনাথ দাস গোস্বামীর লিখিত বিলাপকুসুমাঞ্জলীর। পাঠক প্রভুপাদ শ্রীআনন্দ গোপাল গোস্বামী। পাঠের নিত্য শ্রোতা ছিলেন পন্ডিত শ্রীঅনন্ত দাস বাবাজী মহারাজ। যিনি রাধাকুন্ডস্থ দাস-গোস্বামী-গাদির মোহান্ত মহারাজ হন পরবর্তীতে। তিনি লক্ষ্য করলেন পাঠের আসরে একজন রূপবান যুবক আসেন আর হাতে গামছা নিয়ে বসেন । যতক্ষণ পাঠ চলে ততক্ষণ ধরে গামছা দিয়ে নয়নাশ্রু মুছতে থাকেন। যে স্থানে বসতেন সে স্থান যেন আলো হয়ে যেত। পরিচয়ে জানলেন তিনি শ্রীজীব গোস্বামী প্রভু। তখনই তাঁর মন যেন জুড়িয়ে গেল প্রভুর প্রেমাবিষ্টতা অনুভব করে। রঘুনাথ দাস গোস্বামীজীর অন্তরের আর্তির যেন বহিঃপ্রকাশ দেখলেন শ্রীজীব প্রভুর মধ্যে।

২০০০ সালের ২১শে জানুয়ারী শ্রীজীব প্রভু অপ্রকট হন। শেষ রাত্রিতে কুঞ্জভঙ্গ লীলার মধ্য দিয়ে তিনি চিরন্তন নিত্যলীলায় প্রবেশ করেন। একান্ত ভাবে রাধাদাস্যনিষ্ঠ মহাসাধক এক তাঁর ভজনদীপের শিখা নির্বাপিত করলেন ইহলোক থেকে। ফিরে গেলেন শ্রীরাধার সেই নবনিকুঞ্জের নিভৃত লোকে নিজের রাধাদাস্য অভিমান সমেত সেবার নিমিত্ত।

সেই বৎসর অর্থাৎ ২০০০সালেই শ্রীজীবপ্রভুর স্মরণোৎসব পালিত হয় রাধাকুন্ডে ২২শে এপ্রিল থেকে ১লা মে পর্যন্ত। সেসময় অনন্ত দাসজী বিলাপকুসুমাঞ্জলী পাঠ করেছিলেন সাত দিন ধরে। প্রসঙ্গতঃ, উল্লেখ করি যাঁর অনুরোধে প্রভুপাদ শ্রীজীব গোস্বামীর জীবনী সম্পর্কে কিছু কথা জানাবার চেষ্টা করলাম , তিনি প্রভুপাদের কনিষ্ঠ ভ্রাতা প্রভুপাদ শ্রীরামানন্দ গোস্বামীর শিষ্য ভক্তপ্রবর শ্রীকিশোর ঘোষ মহাশয়। ইনি শ্রীজীব গোস্বামীর একান্ত স্নেহপাত্র ছিলেন। তাঁকে প্রভুপাদ ‘পাগলা’ বলে স্নেহ-সম্বোধন করতেন । নিজে সাথে করে প্রভুপাদ শ্রীকানুগোপাল গোস্বামীর গৃহমন্দিরে নিয়েও গিয়েছেন বেশ কতবার। প্রচারবিমুখ কিশোর ঘোষ মহাশয় দাদা হয়তো বা রাগ করতে পারেন তাঁর এই বোনের প্রতি তাঁর নাম লেখায়। কিন্তু, শ্রীজীব প্রভুর মত এমন একজন মহাসাধকের স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে যে আনন্দানুভূতি আস্বাদন করলাম (বা আপনাদেরও যদি করিয়ে থাকি)—তার জন্য কিশোর দাদার কাছে কৃতজ্ঞতা যদি স্বীকার না করি তবে অপরাধী হব নিজের কাছে নিজে। একারণেই তাঁর নামোল্লেখ করলাম।

ভক্তকৃপাপ্রার্থিনী—
রাধাবিনোদিনী বিন্তি বণিক।