গরুর ঝামেলা ঝঞ্ঝাট ছাড়াই গরু প্রতিপালন করার প্রবণতা বাড়ছে শহরাঞ্চলে, গরুর মৃত্যুতেও নেই তাদের হেলদোল।

নিজস্ব সংবাদদাতা, নদীয়া:- ঘরের খেয়ে বনের মোষ তাড়ানো তো শুনেছেন! কিন্তু রাস্তার খেয়ে ঘরে এসে দুধ দেওয়া কখনো শুনেছেন?
ইদানিং শহরাঞ্চলের বেশকিছু মানুষ গরু পুষে থাকেন এভাবেই‌। তাদের অনেকের গোয়াল ঘর পর্যন্ত নেই অথচ অবলা প্রাণীর সরলতার সুযোগ নিয়ে ধূর্ত মণিরা তাদের স্বার্থ সিদ্ধি করছেন। সারাদিন রাস্তার পাশে উচ্ছিষ্ট খেয়ে, কখনো রাস্তার ধারে কখনো বা বড় মাঠে নিশিযাপন করে মাঝে মধ্যে সামান্য ফ্যান জল এবং কিছু আনাজ এর বাদ দেওয়া অংশ খেতে আসে বাড়িতে আর তখনই দুধেল গাইয়ের দুধ দুইয়ে নেয় তারা। খোল জল ম্যাস কাঁচা ঘাস বিচুলি খাওয়ানো তো দূরে থাক শরীর খারাপ অসুখ-বিসুখ কিছুই খোঁজ রাখেন না তারা। এমনকি মরে গেলে পর্যন্ত পৌঁছান না তারা। এইরকমই অমানবিক চিত্র ধরা পরলো আমাদের ক্যামেরায়। নদীয়ার শান্তিপুর শহরের আগমেশ্বরী বড় গোস্বামী পাড়া এলাকায় ইতস্তত ঘুরে বেড়াতে দেখা যায় বেশ কিছু গরুকে। যার মধ্যে গতকাল মধ্য রাতে এক গাভী ও বাছুর ছিলো। ওই এলাকার স্থানীয় কিছু যুবক লক্ষ্য করে রাস্তার পাশে শারীরিক অসুস্থতার কারণে বাছুরটি কাতরাচ্ছে, আর তার মা গাভী অসহায়ের মতো ডাকছে। স্থানীয় শান্তিপুর হাসপাতাল থেকে নানান রকম ওষুধ খাওয়ানোর পরেও বাঁচানো সম্ভব হয়নি ওই বাছুরটিকে। খোঁজ করেও মেলেনি তাদের প্রকৃত মালিক কে, অথচ পথচলতি সাধারণ মানুষ পাড়া ঘরের সকলেই চোখের সামনে মৃত বাছুরটিকে দেখছেন সকাল থেকেই। অবশেষে স্থানীয় ছেলেরা রাস্তার সারমেয় দের নিয়ে কাজ করা রাজু দাস কে খবর দেয় । তিনি এসে শান্তিপুর পৌরসভা কে ফোন করে সৎকারের ব্যবস্থা করেন, এবং গাভীকে খাওয়া-দাওয়া দিয়ে রাস্তার পাশে একটি গাছের সঙ্গে বেঁধে রাখে শান্তিপুর থানার অনুমতিক্রমে। তিনি জানান লিখিত মুচলেখা ছাড়া কোনভাবেই হস্তান্তর করা হবে না গরুর মালিকানা। এলাকার যুবকরা জানান এটা অভ্যাসে পরিণত হয়েছে বড় গোস্বামী বাড়ির মাঠে সারাদিন এমনকি রাতেও দেখা যায় বেশ কিছু গরুকে।
বিকাল 4 টা পর্যন্ত কেউ এসে এখনও মালিকানা দাবি করেননি, অথচ এলাকাবাসীদের অনুমান গরু এবং বাছুরটি পাশের পাড়ার এক ব্যক্তির, আত্মসম্মানের বোধেই হয়তো দিনের আলোয় আসতে পারছেন না। রাতেই হয়তো যোগাযোগ করবেন তারা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *