ফুটপাথে পড়ে থাকা অসুস্থ মহিলা কে প্রাণে বাঁচালেন মানবিক অটো চালকরা।

0
386

দক্ষিণ চব্বিশ পরগনা, নিজস্ব সংবাদদাতা:-অসুস্থ অবস্থায় দীর্ঘ প্রায় ত্রিশ মিনিট অচৈতন্য হয়ে এক মহিলা পড়ে ছিলেন রাস্তার ফুটপাথে। সাধারণ পথচারীরা উঁকি মেরে যে যার গন্তব্যে চলে যাচ্ছিলেন।বড়সড় দুর্ঘটনা ঘটে যেতে পারতো। এমত অবস্থায় অটো চালক’রা অচৈতন্য মহিলা কে উদ্ধার করে চিকিৎসার জন্য নিয়ে গেলেন ক্যানিং মহকুমা হাসপাতালে।হাসপাতালের চিকিৎসা পরিষেবা পেয়ে সুস্থ হওয়ার পথে ওই মহিলা। স্থানীয় সুত্রে জানাগিয়েছে ক্যানিং থানার অন্তর্গত ইটখোলা গ্রাম পঞ্চায়েতের উত্তর রেদোখালি গ্রামের বাসিন্দা প্রতিমা সরদার। তাঁর বাপের বাড়ি ক্যানিংয়ের গোপালপুর পঞ্চায়েতের বদুকুলা গ্রামে। বছর সতেরো আগে বিয়ে হয়েছিল।তাঁর দুটি নাবালক পুত্র সন্তান রয়েছে।গত প্রায় পাঁচ বছর আগে ওই মহিলার স্বামী সুদর্শন সরদারের মৃত্যু হয়। পরিবারে একমাত্র উপার্জনকারী মৃত্যুতে সংসারের হাল ধরেন প্রতিমা সরদার। তিনি কলকাতার ঢাকুরিয়াতে পরিচারিকার কাজ করেন। প্রতিদিনই প্রায় ১৫ কিলোমিটার সাইকেল চালিয়ে ক্যানিংয়ে আসতেন। সেখান থেকে ট্রেনে চেপে ঢাকুরিয়ায় কাজের বাড়িতে যেতেন। অন্যান্য দিনের মতো বুধবার সকালে কলকাতায় গিয়েছিলেন।সন্ধ্যা ছটা নাগাদ ক্যানিংয়ে ফিরে সাইকেল চালিয়ে বাড়ির উদ্দ্যেশে রওনা দিয়েছিলেন। পথেই ক্যানিং-বারুইপুর অটো ষ্ট্যান্ডে অসুস্থ হয়ে পড়েন। সাইকেল থেকে নেমে রাস্তার ফুটপাথে পড়ে গিয়ে অচৈতন্য হয়ে যায়।স্থানীয় পথচারীরা উঁকি দিয়ে যে যার গন্তব্যে রওনা দেয়। দীর্ঘ প্রায় ত্রিশ মিনিট এমন অসহায় ভাবে পড়ে থাকেন ওই মহিলা। কেউই সাহায্যের হাত বাড়ায়নি। অগত্যা লোকের ভিড় দেখে এগিয়ে আসেন অটোচালক দুলাল চন্দ্র সাউ,বাপি মাইতি,বাবলু হালদার,জহিরুল গায়েন সহ অন্যান্য অটোচালকরা। তাঁরাই প্রতিমা কে উদ্ধার করে চিকিৎসার জন্য ক্যানিং মহকুমা হাসপাতালে নিয়ে যায়। সেখানেই বর্তমানে তিনি চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
জ্ঞান ফিরতেই হাসপাতালের বিছানায় শুয়ে প্রতিমা সরদার জানিয়েছেন ‘কলকাতা থেকে কাজ সেরে ক্যানিংয়ে ফিরেছিলাম। ক্যানিং থেকে সাইকেল চালিয়ে বাড়ি ফেরার উদ্দ্যেশে রওনা দিই।বুকে প্রচন্ড ব্যথা হচ্ছিল।ক্যানিং অটো ষ্ট্যান্ডে পড়ে গিয়েছিলাম। তারপর আর কিছু মনে নেই।জ্ঞান ফিরতেই জানতে পারি ক্যানিংয়ের অটোচালক দাদারা আমাকে উদ্ধার করে চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে ভর্তি করিয়েছেন।দাদারা পাশে না দাঁড়ালে আমি হয়তো মারা যেতাম। অনাথ হয়ে পড়তো আমার দুই নাবালক সন্তান।অটোচালক দাদাদের অসংখ্য ধন্যবাদ।আমি সুস্থ হয়ে গেলে দাদাদের খোঁজ নেবো।আমার পাশে এভাবে দাঁড়ানোর জন্য তাঁদের কে ডেকে ভাইফোঁটা দেবো।’
অন্যদিকে সহৃদয় মানবিক অটোচলক দুলাল চন্দ্র সাউ জানিয়েছেন ‘কেউ বিপদে পড়লে তার পাশে দাঁড়ানো উচিত বলে মনে করি। তেমন ভাবে ওই দিদির পাশে দাঁড়িয়েছি। তিনি সুস্থ হয়ে উঠেছেন শুনে ভালো লাগছে।’