শীতলকুচি ধর্ষণকাণ্ডে অভিযুক্তদের আদালতে তোলার সময় উত্তেজনা মাথাভাঙ্গায়।

0
353

মনিরুল হক, কোচবিহারঃ গত ২১ শে ডিসেম্বর শীতলখুচি কলেজের ছাত্রী কলেজে যাওয়ার সময় পূর্বপরিচিত দুইজন যুবক তাকে গাড়িতে তুলে নেয়। পরবর্তী সময়ে কলেজে না গিয়ে বামনঢোকা এলাকায় নিয়ে যায় তাকে। সেখানে রাসেল মিয়া নামে এক যুবক আগে থেকেই ওই বাড়িতে ছিল। সেখানে জমির মিয়া, ফিরোজ মিয়া, রাসেল মিয়া একটি ফাঁকা বাড়িতে কলেজছাত্রীকে ধর্ষণ করে। ধর্ষণ করার পর তাকে গর্ভ নিরোধক ঔষধ খাওয়ানো হয় জোর করে। ঘটনার একদিন পর অর্থাৎ ২৩ শে ডিসেম্বর মূল অভিযুক্ত জমির মিয়াকে শীতলকুচি থানার পুলিশ গ্রেফতার করতে সমর্থ হয়। বাকি দুজন নিজেদেরকে আড়াল করার জন্য অন্যত্র পালিয়ে যায়।বাকিদের গ্রেপ্তারের দাবিতে ডানপন্থী বামপন্থী ,বিভিন্ন রাজনৈতিক দল, অরাজনৈতিক স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন এবং শীতলখুচি কলেজের অধ্যাপক অধ্যাপিকা সকলে মিলে সর্ব মোট ১২ টি স্মারকলিপি জমা দেন শীতলকুচি থানায়।বাকি দু’জনকে খুঁজে পাওয়ার জন্য কলেজ ছাত্রীর অভিযোগের ভিত্তিতে সেদিন থেকেই পুলিশ তৎপর হয়ে ওঠে।অবশেষে গত কাল গোপন সূত্রে খবর পেয়ে শীতলকুচি থানার পুলিশ শিলিগুড়ি থেকে ধর্ষণ কাণ্ডে অভিযুক্ত বাকি দুই অভিযুক্ত রাসেল মিয়া ও ফিরোজ মিয়া কে গ্রেপ্তার করতে সমর্থ হয়। আজ অভিযুক্তদের আদালতে তোলার সময় আদালত চত্বরে বিক্ষোভ এবং স্লোগান দেয়।আদালত চত্বরে যাতে অপ্রীতিকর কোনো ঘটনা না ঘটে তার জন্য শীতলকুচি থানার ওসি মৃত্যুঞ্জয় চক্রবর্তী র নেতৃত্বে বিশাল পুলিশবাহিনী মোতায়েন ছিল। ধর্ষণ কাণ্ডে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে 376 D/120/B ধারায় মামলা রুজু করা হয়েছে। কেস নাম্বার 499/2021। যে তাদের আদালতে তোলা হলে বিচারক তাদের জামিন নামঞ্জুর করে ১০ দিনের পুলিশ রিমান্ডে পাঠানো হয়। অভিযুক্তদের আদালতে তোলার সময় বিশ্ব রাজবংশী উন্নয়ন মঞ্চ, রাজবংশী কালচারাল এন্ড স্পোর্টিং ক্লাব, এবং ডাঙ্গধরি মাও মহিলা বাহিনী সহ অন্যান্য সাধারণ মানুষ অভিযুক্তদের ফাঁসির দাবিতে স্লোগান দিতে থাকে এবং বিক্ষোভ দেখায়। ওই সময় আদালত চত্বর ছিল উত্তেজনাপূর্ণ।
এ ব্যাপারে মাথাভাঙ্গার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার অমিত ভার্মা বলেন, শীতলকুচি ধর্ষণকাণ্ডে সব মিলিয়ে তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাদেরকে পুলিশী রিমান্ডে নেওয়া হয়েছে।অভিযুক্তদের কাছ থেকে বিস্তারিত শুনে কি কি ঘটনা ঘটেছিল তা জানা যাবে। আজকে অভিযুক্তদের আদালতে তোলা হলে তাদের হয়ে কোনো আইনজীবী সাওয়াল করে নি।
এ প্রসঙ্গে মাথাভাঙ্গা বার অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি রবীন্দ্রনাথ রায় বসুনিয়া বলেন, তৃণমূল কংগ্রেসের শাখা সংগঠন এস সি সেলের পক্ষ থেকে সবাইকে অনুরোধ করা হয়েছিল যাতে আসামিদের হয়ে কেউ শাওয়াল না করে,তাই আমরা সকলে মিলে ঐক্যমত হয়ে আসামিদের হয়ে কেউ শাওয়াল করিনি। পাশাপাশি আসামী পক্ষে একজন সরকারী কৌশলী শাওয়াল করার কথা ছিল উনাকে অনুরোধ করি তিনিও আসামিদের হয়ে কোন শাওয়াল করেননি। আদালত আসামিদের দশ দিনের পুলিশি রিমান্ড দিয়েছে বলে জানান রবীন্দ্রনাথ রায় বসুনিয়া।
অন্যদিকে শীতলকুচি ধর্ষণকাণ্ডে আসামিদের আদালত চত্বরে নিয়ে আসা হলে মাথাভাঙা মহাকুমার আদালত চত্বরে ছিল টানটান উত্তেজনা। পুলিশি প্রহরা ছিল চোখে পড়ার মতো। যদিও শেষ পর্যন্ত কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি। আসামী দের পুনরায় শীতলখুচি পুলিশ কাস্টারিতে নিয়ে যাওয়া। এখন দেখার বিষয় ধর্ষণ কান্ডে অভিযুক্তদের কি সাজা হয় তার জন্য তাকিয়ে আছে শীতলখুচি সহ মাথাভাঙার নাগরিকেরা।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here