কয়েকদিন ধরে স্বামীর মৃতদেহ আগলে ধরে রাখলো স্ত্রী।

আবদুল হাই, বাঁকুড়া :- বাঁকুড়া শহরের সিনেমা রোড চন্ডীদাস সিনেমা হলের কাছে বসবাসকারী এক বৃদ্ধ বয়স জনিত কারণে কর্মহীন হয়ে পড়েন । ভদ্রলোকের নাম সাধন চন্দ্র বরাট । এলাকার মানুষের দাবী তাঁর স্ত্রী আংশিক মানসিক ভারসাম্যহীন । পাড়ার লোকের বক্তব্য আনুমানিক কয়েকদিন ধরে স্বামীর মৃতদেহ আঁকড়ে বসে রয়েছেন অবশ্য তাঁর মানসিক অবস্থার কারণে তিনি নিজেও জানেন না যে তাঁর স্বামী মারা গেছেন। এই বিষয়ে স্থানীয় এক বাসিন্দা প্রদীপ প্রামাণিক বলেন যে তাঁরা যখন এই খবরটি পান তাঁরা গিয়ে দেখেন যে ভদ্রলোক মৃত । তিনি বলেন যে যেহেতু তাঁর বযস হয়েছিল তাই তিনি বযসজনিত কারণে মারা যান । তিনি বলেন যে পাড়ার ছেলেরা খবর পেয়ে গিয়ে যখন দেখে তারা দেখতে পায় যে তিনি মারা গেছেন । অন্যদিকে মৃত সাধন চন্দ্র বরাটটের স্ত্রী বেরা বরাট বলেন যে তাঁর স্বামীর হাত পা ঠান্ডা হয়ে গেছে । কিন্তু তাও তিনি বুঝতে পারেন নি । তিনি বলেন যে তাঁর স্বামীর মাথাটি ঠান্ডা । তিনি বলেন যে এই বিষয়ে তিনি পাড়ার কাউকে বলেন নি । কিন্তু পরে পাড়ার লোক খবর পেয়ে গিয়ে দেখেন বরাটবাবু মারা গেছেন । এই বিষয়ে মৃতের নাতি বলে যে সে কালনাতে থাকে তাই যখন সে কাল জানতে পারে যে তার দাদু মারা গেছেন তিনি আজ সকালে বাস ধরে আসেন । তিনি বলেন যে তিনি এর বেশি কিছু জানেন না । অন্যদিকে স্থানীয় রাজেন্দ্র ক্লাবের সেক্রেটারি শিবশঙ্কর দত্ত বলেন যে ভেবেও খারাপ লাগছে যে তিনি এই ভাবে কাল থেকে মরে পড়ে আছেন । তিনি বলেন যে তাঁরা কালই মৃতদেহের সৎকার করতে চেয়েছিলেন কিন্তু তার মেয়ে এলাহাবাদ থেকে আসছে তাই তাঁরা তাঁর অপেক্ষা করছেন । তিনি বলেন যে ছেলের কোনো পাত্তা নেই । তিনি আরও বলেন যে দম্পতি কপর্দকশূন্য হয়েছিলেন তাঁর আশঙ্কা যে স্বামীর পর এবার স্ত্রীও মারা যাবেন । তিনি বলেন যে তাঁরা কালই মৃতদেহের সৎকার করে দিতেন কিন্তু তাঁর মেয়ের জন্য অপেক্ষা করছেন । আরও এক স্থানীয় বাসিন্দা সঞ্জয় সিং বলেন কাল বাজার যাওয়ার সময় ভদ্রমহিলার সাথে দেখা হয় । তিনি তাঁকে জানান যে তাঁর স্বামীর শরীর খারাপ । তিনি বলেন যে তিনি ও তাঁর দু একজন বন্ধু যখন গিয়ে দেখেন তখন তাঁরা বুঝতে পারেন যে তিনি মারা গেছেন । তাঁর অনুমান যে কাল তাঁর মৃত্যু হয়েছে । তিনি বলেন যে বিষয়টি নিয়ে তাঁরা স্থানীয় ক্লাব ও কাউন্সিলরকে জানিয়েছেন । ঘটনার বিষয়ে পুলিশকে জানান হলে বাঁকুড়া সদর থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে যান ও পুলিশের পক্ষ থেকে খবর নেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *