সুভাষ চন্দ্র দাশ ,ক্যানিং – দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলা বন বিভাগের অধীনস্থ সুন্দরবন জঙ্গলে বাঘ শুমারির কাজ শুরু হল। মঙ্গলবার থেকেই বাঘের ছবি তুলতে ম্যানগ্রোভ অরণ্যের জঙ্গলে ক্যামেরা লাগানোর কাজ শুরু করলেন বনদফতরের কর্মীরা। এদিন এই কাজ শুরু হওয়ার আগে রায়দিঘী রেঞ্জের চিতুরি বিট অফিসে বনবিবি’র পুজো দেন বনকর্মীরা। তারপরেই বন আধিকারিকরা এবং বনকর্মীরা জলযানে চেপে ক্যামেরা সহ অন্যান্য সরঞ্জাম নিয়ে কুলতলির হেড়োভাঙা ৮ নম্বর জঙ্গলে গিয়ে ক্যামেরা লাগানোর কাজ শুরু করেন। ফলে এদিন থেকেই জেলা বনবিভাগের অধীনস্থ সুন্দরবন জঙ্গলে বাঘের ছবি তুলতে শুরু করেছে ক্যামেরা। বন বিভাগের তরফে জানানো হয়েছে, এবার জেলা বন বিভাগের অধীন কোর জঙ্গলের ৮ টি বিভিন্ন জায়গায় ১৬১ জোড়া ক্যামেরা বসানো হবে। এদিন তারই কাজ শুরু করা হয়েছে। আগামী ৪ দিন ধরে জেলা বন বিভাগের অধীনস্থ মাতলা, রামগঙ্গা, রায়দিঘী, ঝড়খালি সহ প্রভৃতি রেঞ্জ গুলিতেও এই ক্যামেরা লাগানোর কাজ চলবে। তারপর টানা ৩০ দিন ধরে জঙ্গলে বসানো এই ক্যামেরায় বাঘের ছবি বন্দী হবে। এজন্য বন দপ্তরের ১০০ জন কর্মীকে ৮ টি দলে ভাগ করে ক্যামেরা লাগানোর কাজে নামানো হয়েছে। শুধু বাঘের ছবি তোলাই নয়, এবার এই বিশেষ প্রযুক্তির ক্যামেরা থেকে বাঘের অবস্থানও বোঝা যাবে। নির্দিষ্ট সময় ধরে ক্যামেরায় বাঘের ছবি বন্দি হওয়ার পর সেই ছবি পাঠানো হবে ওয়াইল্ডলাইফ ইনস্টিটিউট অফ ইন্ডিয়াতে। সেখানে উন্নত প্রযুক্তির ব্যবহার করে বাঘের ছবিকে নিখুঁতভাবে বিশ্লেষণ করা হবে। আর সেই বিশ্লেষণের পরেই নির্ণয় করা হবে সুন্দরবনের দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলা বন বিভাগের অধীন জঙ্গলে বাঘের সংখ্যা ঠিক কত। তা জানিয়ে দেওয়া হবে ন্যাশানাল টাইগার কনজারভেশন অথরিটিকে। শেষ বাঘ শুমারিতে ভারতীয় সুন্দরবনে বাঘের সংখ্যা ছিল মোট ৯৬ টা। তার মধ্যে জেলা বন বিভাগে বাঘের সংখ্যা ছিল ২৭ টি। এবার সেই সংখ্যা বাড়বে বলেই মনে করছেন বনআধিকারিকরা। বন আধিকারিক মিলন মণ্ডল জানান, গোটা দেশে বাঘ শুমারির কাজ শুরু হয়েছে। তার অঙ্গ হিসাবেই জেলা বন বিভাগে এদিন থেকে এই কাজ শুরু করা হয়েছে। ১০ জন বনকর্মী নিয়ে মোট ৮ টি দল এবং শতাধিক কর্মী এই কাজে যুক্ত হয়েছেন। রায়দিঘী রেঞ্জের হেড়োভাঙা ৯ নম্বর জঙ্গল থেকে এই কাজ শুরু করা হলো। বিভিন্ন রেঞ্জের বিভিন্ন গ্রিডে এই ক্যামেরা বসানো হবে। একটি ক্যামেরা থেকে অন্য ক্যামেরার দূরত্ব দেড় কিলোমিটার রাখা হচ্ছে। যাতে একটা ক্যামেরা ছবি তুলতে না পারলেও অন্য ক্যামেরায় তা ধরা পড়ে। দিনে ও রাতে ওই ক্যামেরা কাজ করবে। স্টিল এবং ভিডিও দুটোই রেকর্ড হবে।