মাদুলি কিনে পড়লেই চোখের নিমেষে উধাও হবে করোনা,সঙ্গে মানতেই হবে কিছু আচার, হলদিয়ায় মাদুলি বাবার সন্ধানে নামল পুলিশ।

নিজস্ব সংবাদদাতা,পূর্ব মেদিনীপুর:- মাত্র ১৫ হাজার টাকা খরচ করে মাদুলি কিনে পরলেই চোখের নিমেষে উধাও হয়ে যাবে মহামারী ভাইরাস করোনা। তবে সঙ্গে মানতে হবে কিছু আচার ও বিচার। এমনই দাবি করে মাদুলির ব্যবসা ফেঁদে বসেছিলেন পূর্ব মেদিনীপুরের হলদিয়া শিল্পাঞ্চলের পার্শ্ববর্তী সুতাহাটার রামচন্দ্রপুরের বাসিন্দা ৭৭ বছর বয়সী সৈয়দ আব্দুল কাদের । কাদেরের ‘কেরামতি’র খবর পেয়ে তৎপর হয়েছে পুলিশ। এর পরই উধাও হয়েছেন মাদুলি বাবা।
কাদের দাবি করেছেন, ‘‘করোনা কোনও ভাইরাসঘটিত রোগ নয়। এটা আল্লাহর গজব। আমার মাদুলিতেই এই সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব। কলকাতা, বাটানগর, দক্ষিণ ২৪ পরগনা এবং পূর্ব মেদিনীপুরের বহু মানুষ এই মাদুলি নিয়েছেন। তাঁরা সকলেই সুস্থ আছেন।’’ তাঁর আরও দাবি, ‘‘আমার পরিবারের সদস্য এবং অনেককে মাদুলি দিয়েছি। মাদুলি, তেলপড়া, জলপড়া দেওয়া হচ্ছে। তাতে কাজ হচ্ছে। এতে মানুষের উপকার হবে।’’ সেই সঙ্গে তাঁর প্রশ্ন, ‘‘সন্তানের করোনা হলে কি তাকে বাঁচানোর জন্য ১৫ হাজার টাকা দিতে পারবেন না?’’
বিষয়টি নিয়ে সোচ্চার হয়েছেন জেলার চিকিৎসক মহল এবং বিজ্ঞান মঞ্চ। পশ্চিমবঙ্গ বিজ্ঞান মঞ্চের পূর্ব মেদিনীপুর জেলা কমিটির সহ-সভাপতি সুব্রতকুমার মাইতির বক্তব্য, ‘‘কোভিড ১৯ একটি ভাইরাস জনিত রোগ। অতিমারির হাত থেকে রক্ষার পথ মাস্ক পরা, হাত ধোওয়া, শারীরিক দূরত্ব বজায় রাখা এবং টিকা নেওয়া। কিন্তু কিছু মানুষ মাদুলি, তাগা-তাবিজ দিয়ে, করোনা দেবীর পুজো করে পয়সা উপায় করছেন। এটা কুসংস্কার ছাড়া আর কিছু নয়। যাকে মূলধন করে এই সমস্ত ব্যবসায়ীরা ব্যবসা করছেন। প্রশাসনের উচিত কড়া ব্যবস্থা নেওয়া, তবে এই কারবারের খবর ছড়িয়ে পড়তে খুব বেশি সময় লাগেনি। বিষয়টি প্রশাসনের নজরে আসতেই কাদেরের সন্ধানে নামে সুতাহাটা থানার পুলিশ। এর পর সোমবার সকাল থেকে অবশ্য আর বাড়িতে দেখা যায়নি ওই বাবার। তাঁর পরিবারের দাবি, উনি বিশেষ কাজে বাইরে গিয়েছেন। তবে তিনি কোথায় গিয়েছেন তা তাঁর পরিবারের সদস্যরা জানান নি, তদন্ত শুরু করেছে সুতাহাটা থানার পুলিশ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *