ফুটবলের অপূরণীয় ক্ষতি! ঘুমের দেশে চলে গেলেন বাংলার বিখ্যাত ফুটবলার ইস্টবেঙ্গলের সফল খেলোয়াড় ও কোচ সুভাষ ভৌমিক।

নদীয়া, নিজস্ব সংবাদদাতা:- ঘুমের দেশে চলে গেলেন বাংলার বিখ্যাত ফুটবলার ইস্টবেঙ্গলের সফল খেলোয়াড় ও কোচ সুভাষ ভৌমিক ।
প্রয়াত সাতের দশকের কিংবদন্তি ফুটবলার সুভাষ ভৌমিক। মৃত্যুকালে তাঁর বয়েস হয়েছিল ৭২ বছর। রেখে গেলেন স্ত্রী, এক পুত্র এবং এক কন্যাকে। বেশ কিছুদিন ধরে তিঁনি শারীরিক সমস্যায় ভুগছিলেন। কিডনির সমস্যা ছিল তাঁর। শনিবার ভোর রাতে দক্ষিণ কলকাতার এক নার্সিংহোমে তিঁনি শেষ নিঃস্বাস ত্যাগ করেন। সুভাষ ভৌমিকের মৃত্যুতে গভীর শোকের ছায়া ক্রীড়ামহলে। তাঁর মৃত্যুতে ইস্টবেঙ্গল ক্লাবের পতাকা অর্ধনমিত রাখা হয়। শোক জ্ঞাপন করেন দেশে বিদেশের নামিদামি ফুটবলাররা । মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় গভীর শোক প্রকাশ করেছেন। কোভিড বিধি মেনে প্রিয় ক্লাবে যেহেতু তাঁর নশ্বর দেহ আনা সম্ভব হয়নি, সেহেতু ক্লাব চত্বরে তাঁর প্রতিকৃতি রেখে সেখানে সভ্য এবং সমর্থকদের শ্রদ্ধা নিবেদনের বন্দোবস্ত করেছেন ক্লাব কর্তৃপক্ষ।
১৯৬৯ সালে উত্তরবঙ্গ থেকে ইস্টবেঙ্গল জার্সি গায়ে খেলতে আসেন সুভাষ ভৌমিক। এরপর তিন বছর মোহনবাগানে খেলার পর ফের তিঁনি ইস্টবেঙ্গলে ফিরে আসেন ১৯৭৩ সালে। লাল-হলুদ জার্সি গায়ে তাঁর দ্বিতীয় ইনিংসটি ছিল বেশ ঝকঝকে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো ১৯৭৫ সালের আই.এফ.এ. শিল্ড ফাইনাল। সেবার ইডেনে আয়োজিত শিল্ড ফাইনালে ইস্টবেঙ্গল ৫-০ গোলে পর্যুদস্ত করে মোহনবাগানকে। নিজে একটিও গোল না করলেও, পাঁচ গোলের অন্যতম কারিগর ছিলেন সুভাষ। সতীর্থ শ্যাম , সুরজিৎ সেনগুপ্ত, রঞ্জিত মুখার্জি, শুভঙ্কর সান্যালকে দিয়ে গোল করিয়েছিলেন তিঁনি। দুই প্রধানের জার্সি গায়ে দীর্ঘদিন খেললেও ফুটবলার এবং কোচ হিসেবে তাঁর সাফল্য বেশি ইস্টবেঙ্গল ক্লাবের হয়েই। কোচ হিসেবে ইস্টবেঙ্গলকে জাতীয় লিগে চ্যাম্পিয়ন করার পাশাপাশি ২০০৩ সালে আসিয়ান কাপে চ্যাম্পিয়ন করেছিলেন সুভাষ।
খেলোয়াড় সুভাষ ভৌমিক ১৯৭৯ সালে লাল-হলুদ জার্সি গায়ে অবসর গ্রহণ করেন। শুধু দুই প্রধানের জার্সি গায়েই নয়, বাংলা তথা ভারতীয় দলের হয়েও তাঁর সাফল্য ঈর্ষণীয়। সন্তোষ ট্রফিতে ফুটবলার এবং কোচ হিসেবেও সাফল্য রয়েছে তাঁর। ১৯৭০ সালে এশিয়াডে ব্রোঞ্জ জয়ী ভারতীয় দলের অন্যতম সদস্য ছিলেন তিঁনি। এমন কি ভারতের জার্সি গায়ে মারডেকা ফুটবলেও তাঁর পারফরম্যান্স ছিল অসাধারণ। লাল-হলুদ জার্সি গায়ে বিদেশী দলের বিরুদ্ধে তাঁর দাপট আজও ফুটবল অনুরাগীদের মুখে মুখে। বড় ম্যাচে ইস্টবেঙ্গলের হয়ে ৬ টি গোল করেছিলেন সুভাষ ভৌমিক। তার মৃত্যুতে ফুটবলের দুনিয়ায় অপূরণীয় ক্ষতি বলেই মনে করছেন ক্রীড়াপ্রেমী মানুষ। নদিয়ায় তাঁর সতীর্থ ও মোহনবাগান ফুটবলার কৃষ্ণ মিত্র কি জানালেন তা শুনে নেব।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *