হলদিয়া বন্দরের মৌ চুক্তি স্বাক্ষর,নয়া প্রকল্পের সূচনা করেন কেন্দ্রের জাহাজ মন্ত্রী সর্বানন্দ সোনেওয়াল।

নিজস্ব সংবাদদাতা,পূর্ব মেদিনীপুর:- বন্দর বাণিজ্যে গতি আনতে বুধবার অসমের বৃহত্তম পেট্রোকম সংস্থার সঙ্গে কলকাতা পূর্ব মেদিনীপুর জেলার হলদিয়া বন্দর কর্তৃপক্ষের মৌ চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। একই সঙ্গে হলদিয়া থেকে উত্তর-পূর্ব ভারতে নদীপথে নিয়মিত পন্য চলাচল শুরু করতে এইদিন নয়া প্রকল্পের সূচনা করেন কেন্দ্রের জাহাজ মন্ত্রী সর্বানন্দ সোনেওয়াল, জাহাজ প্রতিমন্ত্রী শান্তনু ঠাকুর জাহাজ মন্ত্রকের সচিব ও ইনল্যান্ড ওয়াটার ওয়েজ অর্থনীতির চেয়ারম্যান প্রমুখ।
বন্দরের অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন হলদিয়া ও রাজ্যের বিভিন্ন শিল্প সংস্থার তারা তাদের সঙ্গে রাজ্যের বন্দর বাণিজ্য নিয়ে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী ও সচিবের মুখোমুখি আলোচনা হয়।
হলদিয়া বন্দরের জেনারেল ম্যানেজার প্রভীন কুমার দাস বলেন জাহাজ মন্ত্রকের উপস্থিতিতে অসমের ব্রহ্মপুত্র প্রিয়াঙ্কার এন্ড পলিমার লিমিটেডের সঙ্গে শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায় পোর্ট ট্রাষ্ট্রের মৌ চুক্তি হচ্ছে। এইদিন হলদিয়া বন্দর থেকে স্টিল বোঝাই বার্জ নদীপথ দিয়ে অসমের পান্ডু নদী বন্দরের উদ্যেশে রওনা দেয়।
জাহাজ মন্ত্রী সোনিওয়াল ফ্ল্যাগ অফ করে ওই বার্জের যাত্রার সূচনা করেন। ওই বার্জে করে টাটাস্টীলের ১৮০০ মেট্রিক টন ইস্পাত অসমের পাঠানো হয়।
সুন্দর এর ১৩নম্বর বার্থ থেকে দুপুর ১টা নাগাদ এটি রওনা দেয়। হলদিয়া থেকে নদীপথে ইন্দো-বাংলাদেশ প্রোটোকল রুট হয়ে এইবার নিয়মিত যাতায়াত করবে।
বন্ধুর সূত্রে জানা যায় হলদিয়া পেট্রোকম এর মত ব্রহ্মপুত্র ক্যাঙ্কার বা বিপিএল উত্তর-পূর্ব ভারতের বৃহত্তম রাষ্ট্রায়ত্ত পেট্রোকম সংস্থা। এর ৭০ শতাংশ অংশীদার গেইল এবং ১০ অংশীদার অসম সরকার। সংস্থার কাঁচামাল ও উৎপাদিত পণ্য হলদিয়া বন্দর মারফত আমদানি ও রপ্তানি জন্য চুক্তি হয়। বন্দরের ডেপুটি চেয়ারম্যান অমল কুমার মেহেরা বলেন ব্রহ্মপুত্র ক্রেঙ্কার তাদের কাঁচামাল ন্যাপথা নিয়মিত সরবরাহের জন্য হলদিয়া বন্দরের ওপর ভরসা করেছে। জাহাজে করে বিদেশ থেকে তারা প্রায় আড়াই লক্ষ টন ন্যাপথা আমদানি করবে। নদীপথে এবং রেলপথের এই কার্গো পাঠানো হবে অসমের ডিব্রুগড়ের লেপটেকাটায়। পণ্য বিদেশে রপ্তানি হবে হলদিয়া বন্দর দিয়ে।
বন্দরের পণ্য পরিবহন বাড়াতে পূর্ব ভারতের পণ্যের উপরে গুরুত্ব দিচ্ছে জাহাজ মন্ত্রক, জাহাজ মন্ত্রট নিজে উদ্যোগী হয়েছেন। পশ্চিমবঙ্গ আসাম সহ উত্তর পূর্ব ভারতের শিল্পায়নের ক্ষেত্রে বন্ধুর কি পাখির চোখ করেছেন মন্ত্রী। তাই বাংলাদেশের মধ্য দিয়ে নদী পথে পণ্য চলাচল নিয়মিত করতে নয়া প্রকল্প নেওয়া হয়। ওই প্রটোকল রুট ধরেই অপেক্ষাকৃত কম খরচে উত্তর-পূর্ব ভারতে পণ্য পৌঁছাবে। পণ্য পরিবহনের ক্ষেত্রে শিলিগুড়ি হয়ে সড়কপথে যানজটের কারণে নদীপথ এই বাড়তি গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে।
বন্দর আধিকারিকরা জানান গত দু’দশক ধরে হলদিয়া থেকে নদীপথে বাংলাদেশ রপ্তানি হচ্ছে। ওই দেশের সিমেন্ট শিল্প ও রাস্তাঘাট তৈরির জন্য রপ্তানি হয় বজবজ এবং কলাঘাট থার্মাল প্লান্ট থেকে। বছরে প্রায় 25 লক্ষ টন ফ্লাই অ্যাশ বা তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্রের রপ্তানি হয়। নদীপথে চাই এবং অন্যান্য দ্রব্য রপ্তানির জন্য হলদিয়া বন্দরের 500 কোটি টাকা ব্যয়ে একটি মাল্টি মোডাল হাব অর্থাৎ মাল্টিপারপাস জেটি তৈরি হয়েছে। বাংলাদেশ ছাড়াও নদীপথে বিহার, উত্তর প্রদেশ,নেপাল, উত্তর-পূর্ব ভারতে পন্য পাঠাতে এই জেটি ব্যবহার শ্রীঘ্রই শুরু হবে। বন্দর বিশেষজ্ঞরা জানান প্রটোকল রুট বা হলদিয়া বানারাসি রুটে নদীপথে পণ্য পরিবহনের আগে নদী ড্রেজিং জরুরী। ড্রেজিং না হলে কিভাবে অসম পর্যন্ত পণ্য চলাচল করবে তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *