তৈরি হলেও চালু হয়নি বেলপাহাড়ির বাসস্ট্যান্ড!

তৃণ্ময় বেরা, (বেলপাহাড়ি) ঝাড়গ্রাম: পরিকল্পনায় গলদ। পাশাপাশি দু’টি বাস ঢোকা ও বেরোনোর রাস্তা নেই। তাই উদ্বোধনের তিন বছর পরও চালু হয়নি বেলপাহাড়ি বাসস্ট্যান্ড। সেখানে প্রায় কোনও বাসই যায় না।
জঙ্গলমহলের গুরুত্বপূর্ণ ব্লক সদর বেলপাহাড়িতে যানজট সমস্যা মেটাতে তৈরি হয়েছিল ওই বাসস্ট্যান্ড। বেলপাহাড়ি ব্লক সদরকে কেন্দ্র করে ঝাড়গ্রাম, মেদিনীপুর, পুরুলিয়া, কাঁকড়াঝোড়, বাঁশপাহাড়ি রুটের প্রায় ৫০টি বাস প্রতিদিন যাতায়াত করে। প্রতিদিন গড়ে হাজার তিনেক যাত্রী বেলপাহাড়ির উপর দিয়ে যান। অথচ সেখানেই দীর্ঘদিন কোনও বাসস্ট্যান্ড ছিল না। জানা গিয়েছে, দিনের বেলায় ২০টি ও রাতের বেলা ১৩টি বাস ‘হল্ট’ করে বেলপাহাড়িতে। বাসস্ট্যান্ড না থাকায় সেগুলি যেখানে-সেখানে দাঁড়িয়ে থাকত। কিন্তু বাসস্ট্যান্ড তৈরি হয়েও চালু না হওয়ায় ছবিটা বদলায়নি বললেই চলে।
প্রশাসন সূত্রে খবর, তিন বছর আগে বেলপাহাড়ির ইঁদকুড়ি মাঠে দু’একর খাসজমিতে ৩১ লক্ষ টাকা ব্যয়ে ওই বাসস্ট্যান্ড ও যাত্রী প্রতিক্ষালয় তৈরি হয়েছিল। বিনপুরের তৎকালীন বিধায়ক খগেন্দ্রনাথ হেমব্রমের তহবিল থেকে ১৪ লক্ষ টাকা, পঞ্চায়েত সমিতির তহবিল থেকে ১২ লক্ষ টাকা ও জঙ্গলমহল আ্যকশন প্ল্যান থেকে ৫ লক্ষ টাকা বরাদ্দ করা হয়েছিল। বাস দাঁড়ানোর জায়গা, যাত্রী শেড, একটি একতলা ভবন, শৌচাগার তৈরি করা হয়। রয়েছে পানীয় জলের ব্যবস্থাও। কিন্তু আসল জায়গাতেই গলদ। প্রধান রাস্তা থেকে ওই বাসস্ট্যান্ড যাওয়ার প্রায় তিনশো মিটার রাস্তাটি খুবই সরু। এমনই অবস্থা যে একটি বাস গেলে পাশ দিয়ে সাইকেল যেতেও অসুবিধা হয়।
বাসস্ট্যান্ডমুখী ওই রাস্তাটি আগে সেটি মোরাম ছিল। এখন সেটির একাংশ ঢালাই হয়েছে। বেলপাহাড়ির বাস চালকরা বলছেন, ‘‘বাসস্ট্যান্ড যাওয়ার রাস্তাটি খুবই সরু। অনেক সময় লোকজনের বাড়িতে ঠোকা লেগে যায়। এরকম রাস্তা দিয়ে বাস নিয়ে যাওয়া খুবই মুশকিল।’’ তাই বাসস্ট্যান্ডটি সব সময় ফাঁকাই থাকে। শুধুমাত্র স্থানীয় কিছু বাস রাতে সেখানে ‘হল্ট’ করে। রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে বাসস্ট্যন্ডটি এখন প্রায় নষ্ট হতে বসেছে। ঝাড়গ্রাম জেলা বাস ওনার্স ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক দিলীপকুমার পাল বলেন, ‘‘পরিকল্পনামাফিক কাজ হয়নি। এরকম জায়গায় বাসস্ট্যান্ড হয় না। ওই স্ট্যান্ডটি ছোট গাড়ির জন্য করা হোক। বেলপাহাড়ির হদরা এলাকায় সরকারি জমিতে বাসস্ট্যান্ড হলে সবার সুবিধা হবে।’’
বিনপুরের বিধায়ক তৃণমূলের দেবনাথ হাঁসদা বলেন, ‘‘আমি বিষয়টি নিয়ে খোঁজ নিয়ে দেখব। বাস মালিক সংগঠন ও প্রশাসনের সঙ্গে কথা বলে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেব।’’

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *