আবদুল হাই, বাঁকুড়াঃ বাঁকুড়া ১ নম্বর ব্লকের গৌরিপুরের মঙ্গলচণ্ডী কলোনি। এশিয়ার বৃহত্তম কুষ্ঠ হসপিটালের ঠিক পেছনে এই কলোনির অবস্থান। ইট-কাঠ অট্টালিকার এই বড় বাঁকুড়া শহরে তেমন কেউই খুব একটা জানেন না এই কলোনিতে কারা থাকেন ? কি ভাবে থাকেন ?
কুষ্ঠ রোগে আক্রান্ত কিন্তু বর্তমানে সুস্থ ২২ টি পরিবার বসবাস করে এই কলোনিতে। তবে ৮ টি পরিবার বাংলা আবাস যোজনায় বাড়ি পেলেও বাকি ১২ টি পরিবারের বাড়িঘর ছিল একেবারেই অস্বাস্থ্যকর ও বসবাসের অনুপযোগী। বর্ষার দিন গুলিতে অবস্থা হয়ে উঠত আরো ভয়াবহ, শোচনীয়।ছিলনা পানীয় জলের সঠিক ব্যবস্থা, রাত্রি হলেই টিমটিম করে অন্ধকার ঝুপড়িতে মাথার ওপর প্লাস্টিকের টেন্ট করে কোনরকমে জীবন অতিবাহিত করতেন এই কলোনির বারোটি পরিবারের সদস্যরা। আজ থেকে তিন- চার মাস আগে অবস্থাটা ঠিক এরকমই ছিল কিন্তু হঠাৎই বাঁকুড়া ১ নম্বর ব্লকের বিডিও অঞ্জন চৌধুরীর চোখে পড়ে তাদের এই দুরাবস্থার কথা। পরিদর্শনে আসেন তিনি… এই কলোনির বাসিন্দাদের দুরাবস্থার কথা তিনি তুলে ধরেন বাঁকুড়া জেলা শাসকের কাছে। অতি শীঘ্র সমস্যা সমাধানের আশ্বাস দিয়ে থেমে থাকেননি জেলাশাসক কে রাধিকা আইয়ার, তিন থেকে চার মাসের মধ্যে পাকা বাড়ি, রাস্তা, পানীয় জলের ব্যবস্থা, ইলেকট্রিক, কমিউনিটি বাথরুম তৈরি করে ফেলেন। বিডিও অঞ্জন চৌধুরী জানান আগে এই কলোনির বাসিন্দাদের ভিক্ষাবৃত্তিই ছিল জীবিকা, তবে বর্তমানে তাদের প্রত্যেকের রেশন এবং স্বাস্থ্য সাথী কার্ড তৈরি করে দেওয়া হয়েছে। এবং ওদের কিভাবে স্বনির্ভর করে তোলা যায় সেই চেষ্টা আমরা করছি এবং যাতে পরবর্তীতে কোন অসুবিধার সম্মুখিন না হতে হয় সেদিকে আমরা নজরে রাখবো।
আজ এই বারোটি রুমের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন বাঁকুড়া জেলা শাসকক রাধিকা আইয়ার, এবং মঙ্গলচণ্ডী কলোনির১২ টি পরিবারের হাতে নতুন বাসভবনের চাবি তুলে দেন। কলোনির এক বাসিন্দা জানান,_ সরকারকে অনেক ধন্যবাদ এত সুন্দর ভাবে মঙ্গল চন্ডী কলোনি কে সাজিয়ে দেওয়ার জন্য, আগের বর্ষার মতো এইবার সাপ ও ঝড় বৃষ্টির মধ্যে দিয়ে থাকতে হবে না। আজকের এই অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বাঁকুড়া জেলা শাসক কে রাধিকা আইয়ার, এক নম্বর ব্লকের পূর্ত কর্মাধ্যক্ষ সন্দ্বীপ বাউরী, বিডিও অঞ্জন চৌধুরী, মহকুমা শাসক সুশান্ত ভকত, পঞ্চায়েত প্রধান সহ অন্যান্য আধিকারিকরা।
Leave a Reply