জন্ম থেকেই বধির,তবুও দেশপ্রাণ ব্লকের অযোধ্যাপুর গ্রামের কন্যা ঈশিতা এবার মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী।

পূর্ব মেদিনীপুর, নিজস্ব সংবাদদাতা:– মুখে নেই ভাষা, জন্ম থেকেই বধির। মানুষের মুখে উচ্চারিত কোনো শব্দ শোনার সৌভাগ্যও হয়নি তাঁর। মনের কথা মুখ ফুটে বলতেও পারেনা কাউকে। মানুষের মুখের ইশারা দেখেই অনেক কষ্টে সবকিছু বুঝতে হয় তাঁকে। জন্মগত প্রতিবন্ধকতাকে কাটিয়ে জীবন যুদ্ধে জয়ী হতে চায় ঈশিতা। পূর্ব মেদিনীপুর জেলার কাঁথি দেশপ্রাণ ব্লকের অযোধ্যাপুর গ্রামের লালমোহন মন্ডলের কন্যা ঈশিতা মন্ডল, এবারের মাধ্যমিক পরিক্ষার্থী। জন্ম থেকেই মুক ও বধির ঈশিতা। পিতা লালমোহন মন্ডল পেশায় কাঁথি পৌরসভার অস্থায়ী কর্মী। স্ত্রী ও দুই কন্যা নিয়ে অভাব অনটনের সংসার লালমোহন বাবুর। মেয়ে জন্মের পর লালমোহন বাবু যখন জানতে পারেন, মেয়ে শ্রবণ শক্তি ও বাক শক্তি হারিয়েছে। তখন থেকেই লালমোহন বাবুর জীবনে শুরু হয় এক নতুন সংগ্রাম। মেয়েকে বাক শক্তি ও শ্রবণ শক্তি ফিরিয়ে দিতে ছুটে বেড়িয়েছেন দেশের বিভিন্ন প্রান্তে থাকা চিকিৎসকদের কাছে। কিন্তু শেষমেষ সব চেস্টা ব্যর্থ হয়।চিকিৎসকরা জানিয়ে দেন মেয়ে চিরতরে বাক শক্তি হারিয়ে বধির হয়ে গেছে। চিকিৎসকদের কথা শুনে মানসিক ভাবে ভেঙে পড়েন লালমোহন বাবু। নিজের মনকে শক্ত করে মেয়েকে পড়াশোনায় উৎসাহ জোগাতে থাকেন। জন্মগত ভাবে মুক ও বধির শিক্ষার্থীরা স্বাভাবিক শিক্ষার্থী দের থেকে আলাদা। এই কারণে এদের শিক্ষাদান পদ্ধতিও আলাদা। প্রাথমিক শিক্ষা মুক ও বধির স্কুলে নিলেও পরে সাধারণ ছাত্রীদের সঙ্গে কাঁথি চন্দ্রামনি ব্রাহ্ম বালিকা বিদ্যালয়ে পঠন পাঠন শুরু করে ঈশিতা। স্কুলের শিক্ষিকাদের সহযোগিতায় প্রতিবন্ধকতার সঙ্গে লড়াই করতে করতে, ঈশিতা আজ মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *