পশ্চিম মেদিনীপুর, নিজস্ব সংবাদদাতা:- মেদিনীপুর সদর ব্লকের অন্তর্গত মুড়াডাঙ্গা এলাকায় সোমবার অনুষ্ঠিত হতে চলেছে আদিবাসী সম্প্রদায়ের সারুল উৎসব যা শিকার উৎসব হিসেবেও পরিচিত। উৎসবের প্রাক্কালে বন্যপ্রাণী শিকার রুখতে বিশেষ অভিযানে নামলো মেদিনীপুর বন বিভাগ ও জেলা পুলিশের আধিকারিকেরা।
সোমবার সকাল থেকেই মেদিনীপুর সদর ব্লকের অন্তর্গত বিভিন্ন জঙ্গলমহল এলাকায় বন্যপ্রাণ রক্ষার বার্তা বনদপ্তর ও পুলিশের আধিকারিকরা।
মুড়াডাঙ্গা বীর বিরসা মহিলা কমিটির সহযোগিতায় আদিবাসী সম্প্রদায়ের মানুষজনদের দ্বারা অনুষ্ঠিত হতে চলেছে সারুল বা বাহা উৎসব। বসন্তকালে ফাল্গুনী পূর্ণিমায় এই উত্সব পালিত হয়। আদিবাসী সম্প্রদায়ের জীবনে শালগাছ বিশেষ তাত্পর্যপূর্ণ। কথিত আছে অত্যাচারী মাধো সিং-এর হাতে অত্যাচারিত হয়ে বনে বনে পাহাড়ে পাহাড়ে অসহায় ভাবে ঘুরতে ঘুরতে সাঁওতালরা ফাল্গুনী পূর্ণিমার দিন আকাশের দিকে একটি তীর ছোড়েন।তীরটি পড়ে এক শালগাছের নীচে। সেখানটাই হয় তাদের স্থায়ী বাসস্থান আর তখন থেকেই তাদের ধর্ম ‘সারনা ধরম’। শালগাছ তাদের আশ্রয় দিয়েছিল বলে শালগাছকে বলা হয় ‘সারি সারজম (সত্য শাল)। ফাল্গুনী পূর্ণিমার ওই চাঁদের নাম হয় ‘বাহাচাঁদ’। সাধারণ বাহা উত্সব তিন দিন ধরে চলে। তাই প্রতি বছরই নিয়ম মেনে আদিবাসী সম্প্রদায়ের মানুষেরা শাল গাছকে পুজো করে সারুল উৎসবে মেতে ওঠে। তবে এই তীর ছোড়ার ফলে মারা যায় জঙ্গলে বসবাসকারী বহু পশুপাখি। অনেকে আবার তীর ছোড়ে বন্যপ্রাণী শিকারের উদ্দেশ্যেই। তাই এইদিন শাহরুল উৎসবের আগের মুহূর্তে মানুষজনদের সচেতন করতে জঙ্গলমহল এলাকায় নজরদারি চালিয়ে বন্যপ্রাণীর শিকার নিয়ে বিশেষ সচেতনতা বার্তা দেন বনদপ্তরের আধিকারিকরা। জঙ্গলে শিকারের উদ্দেশ্যে বেরোনো বেশ কয়েকজন মানুষকে আটকে বন্যপ্রাণী শিকার থেকে বিরত থাকতে উপদেশ দেন তারা। পরবর্তীতে বন্যপ্রাণীর শিকার করলে করা আইনি পদক্ষেপ গ্রহণের হুঁশিয়ারিও দিয়েছেন বন দফতরের কর্তারা।
Leave a Reply