জলযান হেলিকপ্টার সমস্ত কিছু নিয়ে প্রস্তুত জেলা প্রশাসন।

দক্ষিণ চব্বিশ পরগনা, নিজস্ব সংবাদদাতা:-  আসন্ন ঘূর্ণিঝড় অশনি মোকাবিলায় একগুচ্ছ পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে জেলা প্রশাসনের তরফ থেকে। জরুরী কালীন ভিত্তিতে বিভিন্ন প্রশাসনে আধিকারিকরা মঙ্গলবার সারাদিন ধরে  বৈঠক করেন বিভিন্ন এলাকায়।

জেলা প্রশাসন সূত্রে খবর, আসন্ন প্রাকৃতিক দুর্যোগের উদ্ধার কাজের জন্য নামখানা ও গোসাবা তে দুটি এনডিআরএফ টিম মোতায়েন করা হয়েছে। অন্যদিকে সাগর ও পাথর প্রতিমায় দুটি এসডিআরএফ টিম মোতায়েন রাখা হয়েছে। ছটি অতিরিক্ত কুইক রেসপন্স টিম মোতায়েন আছে জেলাতে। ১০৫  সাইক্লোন সেন্টার কে এবং ৬৪০ টি স্কুলে দুর্গতদের থাকার ব্যবস্থা করা হয়েছে।  প্রায় সাড়ে পাঁচ হাজার মানুষকে বিভিন্ন নিচু এলাকা থেকে সরিয়ে ফেলা হয়েছে। ঝড় বৃষ্টির ফলে যদি গাছ কাটার সমস্যা দেখা দেয় তার জন্য ৪০ টি গাছ কাটা দল কে তৈরি রাখা হয়েছে। সঙ্গে ২০০ টি বড় লাইটের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে বিভিন্ন এলাকার ত্রাণকার্য চালানোর জন্য। নদী বাঁধ মেরামতের জন্য ১৫ টি মাটি কাটার গাড়িকে এবং ৩৫ টি বড় লঞ্চ কে তৈরি লেখা আছে। এগুলিতে ১০০০ সিভিল ডিফেন্স ভলেন্টিয়ার ও কোস্টগার্ড কে তদারকির জন্য দেওয়া হয়েছে। শুধু তাই নয় কোস্টগার্ডের তরফ থেকে হেলিকপ্টার নিয়েও সমুদ্রে নজরদারির কাজ চালানো হচ্ছে।

দুর্গত মানুষদের যাতে কোন অসুবিধা না হয় তার জন্য তারপলিন, চাল, শুকনো খাবার, কাপড়, ওষুধ বিভিন্ন জায়গাতে বিশেষ করে দুর্গম ব্লকগুলিতে মজুদ রাখা হয়েছে। ২৪ ঘন্টা বিভিন্ন ব্লক ও মহকুমা শাসকের অফিসে কন্ট্রোল রুম খোলা থাকছে। সঙ্গে জেলাশাসকের অফিসেও কন্ট্রোল রুম খোলা হয়েছে। এদিন নামখানা বিডিও অফিসের দুর্যোগ মোকাবিলায় একটি জরুরী মিটিং এর আয়োজন করা হয়। মিটিংয়ে উপস্থিত ছিলেন সুন্দরবন উন্নয়ন মন্ত্রী বঙ্কিম হাজরা, জেলাশাসক পি উলগানাথান এবং গঙ্গাসাগর বকখালি উন্নয়ন পর্ষদের আধিকারিকরা। শুধু তাই নয় ইঞ্জিনিয়ার ও পুলিশদেরকে বিভিন্ন এলাকায় তদারকির জন্য থাকতে বলা হয়েছে।

অন্যদিকে নদী বাঁধের কাজ চলছে খুব দ্রুতগতিতে।যে এলাকাগুলি ভগ্নপ্রায় অবস্থা সেগুলিতে মাটি দিয়ে মেরামতি করা হচ্ছে কয়েক দিন ধরেই। অন্যদিকে দুর্যোগের সময় পানীয় জলের সরবরাহ ঠিক রাখার জন্য জলের পাউচ মেশিন বসানো হয়েছে ।  চারটি মেশিন বসানো হয়েছে সাগর, কাকদ্বীপ ,পাথরপ্রতিমা এবং গোসাবা তে। দু লাখেরও বেশি জলের বোতল মজুদ রাখা হয়েছে বিভিন্ন দুর্গত দ্বীপগুলিতে। শুধু তাই নয় বিভিন্ন হাসপাতালগুলোতেও মেডিকেল ও অন্যান্য সরঞ্জাম তৈরি রাখা হয়েছে। হাসপাতালে বেড বাড়িয়ে দুর্গত মানুষদের জন্য সংরক্ষন করা হয়েছে। বিভিন্ন মৎস্যজীবী যারা দুর্গম এলাকায় মাছ ধরতে যায় তাদের জন্য কয়েকদিন ধরেই প্রচার চালাচ্ছিল মৎস্য দপ্তর পুলিশ। সমস্ত মৎস্যজীবীরা যাতে দ্রুত ফিরে আসে তার জন্য কোস্টগার্ডের তরফ থেকে নজরদারি চালানো হচ্ছে। গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকাগুলিতে মাইকিং করা হচ্ছে। অতিরিক্ত জেলা শাসক ও অভিজ্ঞতাসম্পন্ন আধিকারিকদের কে নিয়োগ করা হয়েছে বিভিন্ন দুর্গম ব্লকগুলিতে। মূলত জেলাশাসকের সঙ্গে সম্পর্ক রেখে কাজ করবেন তারা।

এ বিষয়ে জেলাশাসক পি উলগানাথান বলেন, জেলা প্রশাসন সর্বত্র ভাবে প্রস্তুত আসন্ন দুর্যোগ মোকাবিলার জন্য। বিভিন্ন দপ্তরকে নজরদারি চালানোর জন্য বলা হয়েছে বিভিন্ন এলাকাগুলিতে। নিচু জায়গা থেকে মানুষদেরকে সরানোর কাজ চলছে। অবস্থার উপর নজর রাখা হচ্ছে কন্ট্রোল রুম থেকে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *