রিলায়েন্স ফাউন্ডেশনের প্রশিক্ষণ থেকে উপকৃত স্বনির্ভর গোষ্ঠীর সদস্য জয়ন্তী বিশ্বাস।

নদীয়া, নিজস্ব সংবাদদাতা:-  নদীয়া জেলার রানাঘাট-১ ব্লকের অন্তর্গত ভাদুড়ী গ্রামের মধ্য চল্লিশের গৃহবধূ জয়ন্তী বিশ্বাস পাঁচ সদস্যের পরিবারের জীবন-জীবিকার জন্য অনেক দিন ধরেই বিকল্প রোজগারের সন্ধান করছিলেন। প্রান্তিক কৃষিজীবি পরিবারের সদস্য জয়ন্তী দারিদ্রের কারণে প্রাথমিক শিক্ষার পর আর পড়াশোনা চালিয়ে যেতে পারেন নি – যদিও স্বনির্ভর হওয়ার সুপ্ত বাসনা ছিলই !! জয়ন্তীর পিতার সামান্য কৃষিজমির পাশাপাশি পশু পালন ছিল মূল জীবিকা – যদিও ১১-সদস্যের পরিবারের ভরণ পোষণের পক্ষে নিতান্তই অপর্যাপ্ত। ১৬ বছর বয়সে বিবাহ হওয়ার পর কয়েক বছর পর সন্তানের মা হন জয়ন্তী – আর তারপর থেকেই বাড়তে থাকে আর্থিক চাহিদা। ভাগ্য পরিবর্তনের লক্ষ্যে জয়ন্তী ২০১৬ সালে যুক্ত হন “জোনাকি স্বনির্ভর গোষ্ঠীর” সাথে এবং সাধ্যমতো সঞ্চয় করতে শুরু করেন ।
ইতিমধ্যে গ্রামেরই এক কৃষক ভাইয়ের কাছ থেকে জয়ন্তী জানতে পারেন রিলায়েন্স ফাউন্ডেশনের তথ্য পরিষেবা এবং বহুমুখী জীবন জীবিকা বিকাশ কার্যক্রমের কথা। পরবর্তী কালে ফাউন্ডেশনের কর্মী সুজয় বিশ্বাসের সহযোগিতায় গত বছর জয়ন্তী একটি পশুপালন সংক্রান্ত প্রশিক্ষণে অংশগ্রহণ করার সুযোগ পান এবং গাভী ও ছাগল পালনের অজানা বিষয়গুলি রপ্ত করেন – বিশেষ করে জৈব সুরক্ষা, ঘরোয়া পশুখাদ্য তৈরির পদ্ধতি, টিকাকরণ সূচি এবং চিকিৎসা পদ্ধতি। এর পাশাপাশি হেল্পলাইন নম্বর ১৮০০ ৪১৯ ৮৮০০ নম্বরে যোগাযোগ করে এবং প্রশিক্ষণের মাধ্যমে ফাউন্ডেশনের রিসোর্স পার্সন রাজকুমার লস্কর-এর কাছ থেকে স্বনির্ভর গোষ্ঠী – ব্যাঙ্ক সংযোগ, বিনিয়োগ পরিকল্পনা, ক্যাশ ক্রেডিট ঋণের সীমা বৃদ্ধির পদ্ধতি সহ গোষ্ঠী সংক্রান্ত বিষয়গুলিও রপ্ত করেন। স্বাভাবিকভাবেই তথ্য সমৃদ্ধ জয়ন্তীর পক্ষে ঋণের সীমা বৃদ্ধির আর কোনো অসুবিধা হয় নি। দলীয় ঋণের থেকে নিজের অংশ বাবদ ৪০০০০/- টাকা নিয়ে জয়ন্তী দুটি গরু কেনার পাশাপাশি পশু খামারটিও মেরামতি করেন। পাশাপাশি চলতে থাকে পশু পালক বিশেষজ্ঞদের সাথে ফোনালাপ এবং তথ্য আদান প্রদান। স্বাভাবিকভাবেই আধুনিক এবং ব্যয় সাশ্রয়ী পশু পালন পদ্ধতি অবলম্বন করে একদিকে যেমন প্রাণিস্বাস্থ্যের উন্নতি ঘটে, তেমনই বাড়তে থাকে দুধের উৎপাদন। আজ জয়ন্তীর মাসিক গড় রোজগার ৮০০০/- টাকা – যেটা পাঁচ সদস্যের পরিবারে এনেছে স্বচ্ছলতার দিশা। আজ জয়ন্তী স্বপ্ন দেখে এলাকায় “মডেল ডেয়ারি ফার্ম” গঠনের ।
রিলায়েন্স ফাউন্ডেশনের প্রতি কৃতজ্ঞ জয়ন্তী বলেন ” ছোট বেলাতেই স্কুল ছাড়ার পর স্বনির্ভর হওয়ার স্বপ্ন শেষ অবধি স্বপ্নই থেকে যেত যদি রিলায়েন্স ফাউন্ডেশন পাশে না থাকতো। আজ আমি রিলায়েন্স পরিবারের সদস্য জোটে পেরে গর্বিত”।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *