উত্তর দিনাজপুর জেলার কালিয়াগঞ্জ ব্লকের মালগাঁও পঞ্চায়েতের দক্ষিণ পলিহার কর্মকার পাড়া গ্রামটি নারকেলের শলার ঝাঁটা তৈরির ক্ষেত্রে একটি উল্লেখযোগ্য স্থান দখল করেছে।

0
318

উঃ দিনাজপুর, রাধারানী হালদারঃ- সমাজ জীবনে নারকেল ফলকে কল্পতরু বৃক্ষ বলা হয়ে থাকে তার নানান গুণের কারণে।এই নারকেল গাছের কচি ফল ডাব হিসাবে,পাকা ফল নারকেল হিসাবে,নারকেলের ছোবড়া গদি তৈরীতে,আবার নারকেল পাতার মধ্যে শলা ঝাঁটা তৈরীর ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে।
উত্তর দিনাজপুর জেলার কালিয়াগঞ্জ ব্লকের মালগাঁও পঞ্চায়েতের দক্ষিণ পলিহার কর্মকার পাড়া গ্রামটি নারকেলের শলার ঝাঁটা তৈরির ক্ষেত্রে একটি উল্লেখযোগ্য স্থান দখল করেছে। কালিয়াগঞ্জ ব্লকের মালগাও গ্রাম পঞ্চায়েত যেমন টেরাকোটার জন্য বিখ্যাত ঠিক একই রকমভাবে মালগাও গ্রাম পঞ্চায়েতের পলিহার গ্রামের কর্মকার পাড়া নারকেলের শলার ঝাঁটা তৈরীর ক্ষেত্রে গ্রামের মানুষরা বিশেষভাবে দক্ষ। নারকেলের শলার ঝাঁটা সাবেককাল থেকেই প্রতিটি পরিবারের নয়নের মনি।কারন প্রতিদিন সকাল, দুপুর ও বিকেলে প্রতিটি পরিবারের অত্যন্ত প্রয়োজনীয় বস্তু হয়ে থাকে বাড়িঘর পরিষ্কারের ক্ষেত্রে যেমন, তেমনি বিছানা পরিপাটি করে রাখার কারনে। ঘরবাড়ি পরিষ্কারের ক্ষেত্রে অপরিহার্য এই ঝাঁটা নিয়ে সঙ্গীত রসিকদের মন মাতানো সঙ্গীত “মার ঝাড়ু মার ঝাড়ু মেরে ঝেঁটিয়ে বিদায় কর” গানটি ঝাঁটা গুরুত্ব যে সমাজ জীবনে অপরিহার্য সেটা বুঝিয়ে দিয়েছে।কর্মকার পাড়ার অর্চনা,রাজো,তশিলরা জানায় তাদের বাড়ির পুরুষরা রায়গঞ্জ থেকে নারকেলের শলা কিনে আনে।নারকেলের শলার প্রতি কুইন্টাল দাম চার হাজার টাকা। পালিহার গ্রামের কর্মকার পাড়ার গৃহবধূ অর্চনা জানান প্রতিদিন ৫০ থেকে ৬০টি নারকেলের শলার ঝাঁটা তারা তৈরি করতে পারে।
গৃহ বধূ অর্চনা কর্মকর বলেন বিয়ে হয়ে আসার প্রথম দিন থেকেই দেখছি আমার শ্বশুর বাড়িতে নারকেলের ঝাঁটা তৈরি হয়ে থাকে।কিছু দিন যেতে না যেতেই আমারও ঝাঁটা বানানোর দিকে মন চলে যায়।অর্চনা দেবী বলেন ।আমাদের এই গ্রাম নারকেলের ঝাঁটা তৈরির জন্য দীর্ঘদিন থেকেই সুনামের সাথে আমরা কাজ করে আসছি।আমাদের এই শিল্পের উন্নয়নে সরকার থেকে যদি ঋণ দেবার ব্যবস্থা করে তাহলে এই শিল্পের আরো প্রসার ঘটতে পারে।
কর্মকার পাড়ার রাজো কর্মকার বলে।কালিয়াগঞ্জ ব্লকের ধনকোল ,কুনোর হাট,দুর্গাপুরহাট,পতিরাজ্ হাটে আমরা আমাদের তৈরি
ঝাঁটা বিক্রি করে থাকি। এক একটি ঝাঁটা যেমন ৫০ টাকাতেও বিক্রি করা হয় আবার কোনটা ৬০টাকাতেও বিক্রি করা হয়।এক একটি ঝাঁটা বিক্রি করে কোনটা থেকে ৫টাকা আবার কোন ঝাঁটা থেকে ১০ টাকাও লাভ হয়ে থাকে।তিনি বলেন সরকার কুটির শিল্পের মাধ্যমে এই শিল্পের উন্নয়ন করার চেষ্টা করলে এলাকার মানুষেরা ভীষন ভাবে উপকৃত হতে পারবে। রাজো কর্মকার জানায় ঝাঁটা বিক্রি করেই তাদের সংসার চলে,চলে ছেলেমেয়েদের পড়াশোনা।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here