নিজস্ব সংবাদদাতা, মালদাঃ-খবরের জেরে অবশেষে অচল অবস্থা কাটলো। সমস্যা মিটলো শ্রমিক পক্ষের সঙ্গে মালিক পক্ষের। স্থানীয় প্রশাসন এবং শাসকদলের নেতাদের সহায়তায় মধ্যস্থতা করা হলো। কাজে ফিরলেন শ্রমিকরা। উল্লেখ্য, মালদা জেলার হরিশচন্দ্রপুর থানা এলাকায় বিগত কয়েকদিন ধরে পাট ব্যবসায় অচল অবস্থা তৈরি হয়েছিল। শ্রমিকদের মজুরি বৃদ্ধি নিয়ে শ্রমিক পক্ষের সঙ্গে মালিক পক্ষের সমস্যা হয়। শাসকদলের শ্রমিক সংগঠন আইএনটিটিইউসির নেতৃত্বে বিক্ষোভ মিছিল করে কর্মবিরতির ডাক দেন পাট শ্রমিকরা। এমনকি পাটগোলা মালিকদের পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হয় হুমকি দেওয়া হয়েছে শাসকদলের শ্রমিক সংগঠনের পক্ষ থেকে ব্যবসা বন্ধ রাখার জন্য। গত রবিবার হাটে কেনা-বেচা বন্ধ থাকে। ফলে সমস্যার মধ্যে পড়তে হয় পাট চাষীদের। হাট থেকে পাট বিক্রি করতে না পেরে ঘুরে যায় পাট চাষীরা। সেই খবর সম্প্রচারিত হয় সংবাদ মাধ্যমে। আর তারপরেই কার্যত নড়েচড়ে বসে স্থানীয় প্রশাসন। অবশেষে সেই সমস্যার সমাধান হলো। শুক্রবার রাতে হরিশ্চন্দ্রপুর থানা এলাকার পাটগোলা মালিকদের সঙ্গে শ্রমিকদের বৈঠক হয় স্থানীয় প্রশাসন এবং শাসকদলের নেতাদের মধ্যস্থতায়। বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন মালদা জেলা তৃণমূলের সাধারণ সম্পাদক জম্মু রহমান, হরিশ্চন্দ্রপুর অঞ্চল তৃনমূল কংগ্রেসের চেয়ারম্যান সঞ্জীব গুপ্তা, আইএনটিটিইউসি পাট শ্রমিক সংগঠনের সভাপতি জাকির হোসেন, জুট মার্চেন্ট অ্যাসোসিয়েশন সংগঠনের সম্পাদক গোপাল ভগত, ব্যবসায়ী বসন্ত জৈন সহ অন্যান্য নেতৃত্ব। বৈঠকে শ্রমিক মালিক উভয় পক্ষের সম্মতিতে শ্রমিকদের মজুরি ১০% এবং ৫% করে বৃদ্ধি করা হয়। হুমকি প্রসঙ্গে মালিক পক্ষের কাছে ক্ষমা চেয়ে নেন শ্রমিকরা। এবার থেকে এলাকায় একদম স্বাভাবিক থাকবে পাট ব্যবসা। কাজে যোগদান করেছেন পাট শ্রমিকরা। পাট কেনা-বেচাতে কোন রকম আর সমস্যা থাকবে না।
জেলা তৃণমূলের সাধারণ সম্পাদক জম্মু রহমান বলেন, আজ প্রশাসন এবং আমাদের মধ্যস্থতায় সমস্যার সমাধান করা হলো। মজুরি বৃদ্ধি নিয়ে শ্রমিকদের যে দাবি ছিল সেই দাবি মেটানো হলো। হুমকি এবং পাট কেনা-বেচা বন্ধ থাকার ব্যাপারটি সঠিক ভাবে জানা নেই। তবে আর সমস্যা থাকবে না পাট ব্যবসায়।
হরিশ্চন্দ্রপুর ১ নম্বর ব্লক পাট শ্রমিক সংগঠনের সভাপতি জাকির হোসেন বলেন, আজ মালিক পক্ষের সঙ্গে বৈঠক ছিল। সকলের সম্মতিতে আমাদের মজুরি বৃদ্ধি করা হয়েছে। যেহেতু আমরা কর্ম বিরতিতে ছিলাম সেই জন্য আলোচনা হয়নি। কোন শ্রমিক হয়তো উল্টাপাল্টা বলেছে, তার জন্য ক্ষমা চেয়ে নিয়েছি মালিক পক্ষের কাছ থেকে। আমরা ফের কাজে যোগ দেওয়ার পরই আলোচনা হলো।
জুট মার্চেন্ড অ্যাসোসিয়েশন সংগঠনের সম্পাদক গোপাল ভগত বলেন, আজ জম্মু রহমানের মধ্যস্থতায় বৈঠক হলো। বৈঠকে সমস্যার সমাধান হয়েছে। বার্ষিক ১০ শতাংশ এবং ৫ শতাংশ করে মজুরি বৃদ্ধি করা হয়েছে। হুমকি দেওয়ার ব্যাপারটা শ্রমিকরা ক্ষমা চেয়ে নিয়েছে আমাদের কাছে।এবার থেকে পাট কেনা-বেচা স্বাভাবিক থাকবে।
শ্রমিক পক্ষের সঙ্গে মালিক পক্ষের সংঘাতের ফলে বিপাকে পড়তে হয়েছিল চাষীদের। হাটে পাট এনে বিক্রি করতে না পারায় কার্যতা মাথায় হাত ফেলে ছিল তারা। সেই খবরই সম্প্রচারিত হয়েছিল সংবাদমাধ্যমে। অবশেষে খবরের জেরে শাসকদলের নেতা জম্মু রহমানের মধ্যস্থতায় সেই সমস্যার সম্পূর্ণ রূপে সমাধান হলো।