গীতিকার পুলক বন্দ্যোপাধ্যায়ের বাড়ির দুর্গাপুজো।

সেলিব্রিটি দের পুজোর মধ্যে জনপ্রিয় পুজো হলো গীতিকার পুলক বন্দ্যোপাধ্যায়ের বাড়ির দুর্গাপুজো।মহালয়ার পরের দিন থেকে বাড়ির ঠাকুর ঘরে পুজো শুরু হয়। ষষ্ঠীতে বরণ করে শুরু হয় পুজো। সপ্তমীতে কলা বউ স্নান হয় গঙ্গায় নিজেদের বারুজ্জে ঘাটে। অষ্টমীতে কুমারী পুজো ও ধুনো পোড়ানো হয়। সধবা পুজো এবং সন্ধি পুজো হয়৷ নবমীতে হয় ফল বলি। তবে আগে মোষ বলি হত বলে জানান তিনি। পুজোর প্রতিদিন চণ্ডী পুজো হয়। দশমীর দিন দেবীকে দেওয়া হয় বিশেষ বাসি ভোগ, যা নবমীর দিন তৈরি করেন বাড়ির মহিলারা। সেই ভোগে থাকে পান্তা ভাত, চালতা দিয়ে মুসুর ডাল, কচুর শাক, চচ্চরি আর মূল হল ল্যাটা মাছ পোড়ানো৷

এরপর দশমীতে সন্ধ্যেবেলা বরণ হয়ে বারুজ্জে ঘাটে দেবীর নিরঞ্জন হয়। সুস্মিতবাবুর ছেলে সম্পদ বন্দ্যোপাধ্যায় জানায়, পুলক বন্দ্যোপাধ্যায়কে সে দেখেনি৷ তবে তাঁর গান এখনও শুনতে ভালো লাগে। এখন বাড়িতে শুধু তাঁদের পরিবার থাকে এবং পুজোটি তাঁরা চালিয়ে যাচ্ছেন। আগামী দিনে ঐতিহ্য বজায় রেখে সেও চালিয়ে যাবে বলে জানায়।

প্রয়াত গীতিকার পুলক বন্দ্যোপাধ্যায়ের বাড়ির দুর্গাপুজো যা বাবুদের বাড়ি নামে পরিচিতি। প্রায় তিনশো বছর আগে এখানে আসেন জমিদার রাধামোহন বন্দ্যোপাধ্যায়। বাড়ি তৈরি করেন। বাবুদের বাড়ি বলে এলাকাটি বাবুডাঙা বলে পরিচিত হয়। এরপর এখানে শুরু করেন দুর্গাপুজো। প্রাচীন এই পুজো শুরু থেকেই ঐতিহ্য মেনে এখনও হয়ে আসছে বংশ পরম্পরায়। তবে এই পুজো সবচেয়ে জমজমাট হয় পুলক বন্দ্যোপাধ্যায়ের সময়।পুজোর সময় এখানে আসতেন বহু বিশিষ্ট মানুষ। বসত গানের আসর। এই বাড়িতে আসতেন উত্তম কুমার। গান গাওয়া ছাড়াও ঘুড়ি ওড়াতেন ছাদে। এই বাড়িতে এসে গান গেয়েছেন অপরেশ লাহিড়ি, তবলা বাজিয়েছেন বাপি লাহিড়ি।পুজোর দিনগুলো ছিল একেবারে অন্য রকম। ১৯৯৯ সালে ৭ সেপ্টেম্বর পুলক বন্দ্যোপাধ্যায় গঙ্গায় ঝাঁপ দিয়ে আত্মহত্যা করেন। এরপর থেকে পুজোর জৌলুস কমেছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *