মুম্বাইয়ে পূজার প্যান্ডেলের কাজ করতে গিয়ে রহস্য মৃত্যু মাথাভাঙার শ্রমিকের।

মনিরুল হক, কোচবিহার: পরিচিত এক ঠিকাদারের তত্বাবধানে এলাকারই আরও কয়েকজনের সঙ্গে ট্রেনে করে মুম্বাই যাচ্ছিলেন মাথাভাঙার কুর্শামারি এলাকার বাসিন্দা খোকামণি পাটোয়ারী। পুজোর সিজনে সেখানে প্যান্ডেল তৈরির কাজ করে টাকা রোজগার করে পরিবারের সদস্যদের মুখে হাসি ফোটাতে চেয়েছিলেন তিনি। দশমীতে ফিরেও আসার কথা ছিল তাঁর। কিন্তু তা হলনা। মুম্বাই পৌঁছানোর আগের এক স্টেশনে ট্রেন থেকে নেমে পড়াই কাল হল তাঁর। প্রথমে নিখোঁজ এবং পরে বিনা মেঘে বজ্রপাতের মতো বাড়িতে পৌঁছাল তাঁর মৃত্যু সংবাদ। স্টেশন এলাকায় তাঁর মৃতদেহ উদ্ধার হয়েছে বলে খবর এসেছে। এতে ভেঙে পড়েছেন পরিবারের সদস্যরা। এলাকায় নেমে এসেছে শোকের ছায়াও। কী করে এমন ঘটনা ঘটল কিছুতেই বুঝে উঠতে পারছেন না মৃতের স্ত্রী ও আত্মীয় স্বজনরা। মৃতদেহ কী করে আনবেন তা নিয়েও ফাঁপড়ে পড়েছেন। এই রহস্য মৃত্যু নিয়ে দানা বেঁধেছে সন্দেহও।

মাথাভাঙ্গা থানার পুলিশ জানিয়েছে, ওখানকার পুলিশের কাছ থেকে তারা জানতে পেরেছেন ওই ব্যক্তি আত্মহত্যা করেছেন। মৃতের পরিবারকে সহযোগিতা করা হচ্ছে। মৃতের নিকট আত্মীয় তথা লোকশিল্পী প্রসার সমিতির কোচবিহার জেলা সভাপতি দুলালমণি পাটোয়ারীর বক্তব্য, এই মৃত্যু মেনে নিতে তাঁদের কষ্ট হচ্ছে। ঘটনার সঠিক তদন্ত হওয়া উচিৎ। মাথাভাঙ্গা-১ ব্লকের বিডিও সম্বল ঝা বলেন, যেকোনও মৃত্যুই দুঃখজনক। পরিবারের সদস্যদের সমবেদনা রইল।

ঠিক কী হয়েছিল ? মৃতের পরিবার সূত্রে খবর, ৩১ অগাস্ট নিউ কোচবিহার স্টেশন থেকে মুম্বাইয়ের উদ্দেশ্যে রওনা দিয়েছিলেন খোকামণি। চলতি মাসের ৩ তারিখ একটি মোবাইল নম্বর থেকে ফোন করে জানানো হয় খোকামণি মুম্বাই পৌঁছানোর আগে খাবার কেনার জন্য একটি স্টেশনে নামলে ট্রেনটি ছেড়ে দেয়। স্টেশন চত্বরে ঘোরাঘুরি করলে সন্দেহবশত পুলিশ তাঁকে আটক করে। পরে ছেড়েও দেওয়া হয়। কিন্তু তাঁর খোঁজ পাওয়া যাচ্ছিল না। ৭ সেপ্টেম্বর মাথাভাঙ্গা থানায় এই মর্মে মিসিং ডায়েরিও করা হয়। পরের দিনই মাথাভাঙ্গা থানার পুলিশের কাছে খবর আসে ওই এলাকায় এক ব্যক্তির দেহ উদ্ধার হয়েছে। মাথাভাঙ্গা থানায় মৃতের ছবিও পাঠানো হয়। তখন মৃতের স্ত্রী ও আত্মীয়রা মাথাভাঙ্গা থানায় এসে খোকামণির দেহ শনাক্ত করেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *