কোলাঘাটে সোনালি বর্ষের পুজোয় সিলভার জেট,নেওয়া হয়েছে,একাধিক সমাজ সেবক মূলক কর্মসূচি।

0
246

পূর্ব মেদিনীপুর, নিজস্ব সংবাদদাতা:- কলকাতা-হলদিয়া জলপথে একদা অত‍্যাধুনিক দ্রতগামি জলযান হিসাবে অস্ট্রেলিয়ায় তৈরি প্রায় দশকোটি টাকা মূল্যের সিলভার জেট হয়ে উঠে ছিল বহুল পরিচিত ও আলোচিত। সিলভার জেটের কেয়ার টেকার সেক সিরাজ জানান, সেই সময় মূখ্যমন্ত্রী জ‍্যোতি বসুও এই জলযানে একাধিকবার কলকাতা হলদিয়া যাতায়াত করেছেন। পরে বিভিন্ন করনে এটির পরিষেবা বন্ধ হয়ে যায়।
এই বৎসর পূর্ব মেদিনীপুর জেলার কোলাঘাটে সংকেত এবং ছাত্র সংঘ পরিচালিত দুর্গোৎসবের পঞ্চাশ তম বর্ষ।
এই উপলক্ষে তাদের মন্ডপ সংলগ্ন রূপনারায়নে নিয়ে আসছে প্রায় একশো ফুট লম্বা সেই “সিলভার জেট ” জলযানটি কে। সিলভারজেট সহ আরো দুটি বড় লঞ্চ এবং ভুটভুটির সাহায্যে নদের চওড়া বুকে প্রদর্শিত হবে লাইট অ্যান্ড সাউন্ড শো। মাঝ নদীর এই অনুষ্ঠান দেখার সুযোগ পাবেন দুই পাড়ের বিস্তীর্ণ এলাকার মানুষ জন। দর্শকদের সিলভার জেট বা সহযোগী লঞ্চে ওঠার কোন সুযোগ থাকবে না। সোনালী বর্ষ উদযাপনে এই মন্ডপে আসছে কলকাতার বিখ্যাত মৃৎশিল্পীর তৈরী বর্ণময় সাজে, প্রায় বাইশ ফুট উচ্চতার দূর্গাবাহিনী। প্রতিমা নির্মাণে কোলাঘাটে এই পর্যন্ত এটিই উচ্চ তম বলে আয়োজকদের দাবী। সমাজ কল্যাণ এবং বিভিন্ন বিষয়ে সচেতন তামূলক কর্মসূচিতে এই পূজো কমিটি গত ছয় বছরে সরকারি, বেসর কারি, বহুজাতিক সংস্থা ও বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান থেকে প্রায় ৩২ টি শারদ সম্মান অর্জন করার পাশাপাশি জেলায় বিশেষ স্থান করে নিয়েছে বলে পুজো কমিটির সম্পাদক শ‍্যামল আদক জানান। কোলাঘাটের সংকেত এবং ছাত্র সংঘ আয়োজিত পূজার সুবর্ণ জয়ন্তী বর্ষকে কেন্দ্র করে দুইমাস আগে থেকেই শুরু হয়ে গেছে জন কল্যাণ মূলক বিষয়ক বহুমুখী কর্মসূচী। রাজ‍্যের বারোটি জেলার দুর্ঘটনাগ্রস্থ প্রায় ১৬৭ জন অঙ্গহীনদের বিনাব‍্যয়ে কৃত্রিম অঙ্গ প্রতিস্থাপন, প্রায় একশ জন মানুষের মরণোত্তর দেহদানে অঙ্গীকার, রক্তদার শিবির।পাশাপাশি পথ নিরাপত্তা, পরিবেশ দূষন ও বাল‍্যবিবাহ রোধো পুজোর কদিন লাগাতার প্রচারের সাথে থাকবে প্রদর্শনী, পথ পরিক্রমা, কুইজ, বক্তব্য এবং অঙ্কন প্রতিযোগিতা। এই উপলক্ষে কোলাঘাটের উপর একশ বছরের ইতিহাস নিয়ে প্রকাশিত হয়েছে ইতিহাস ধর্মী গন্থ ” স্বর্ণালী স্মরণীকা “। সপ্তাহ ব‍্যাপী চিত্তাকর্ষক আগমনী বিষয়ক অনুষ্ঠানের আয়োজনও করা হয়েছে।
সেবামূলক কাজে থাকছে ঝুপড়িবাসিদের জন‍্য খাদ‍্য ও বস্ত্র প্রদান, প্রতিবন্ধী ও অথর্ব বয়স্কদের পুজো দেখার জন‍্য ক্র‍্যাচ, লাঠি, হুইলচেয়ার সহ সহায়ক অঙ্গ।
এলাকার ভবঘুরেদের জন‍্য নতুন বস্ত্র সহ উৎসবের কদিন রান্না করা খাবার পৌছে দেওয়া হবে তাদের খেয়াল খুশি মত অস্থায়ি ঠিকানায়‌। উৎসবের কদিন প্রায় পঞ্চাশ হাজার মানুষের হাতে হাতে ভোগপ্রসাদ বিতরণের পরিকল্পনা করা হয়েছে। পুজো কমিটির সভাপতি অভিজিৎ সামন্ত জানিয়েছেন, ” কেবল পূজা উৎসবের কদিনই নয়, এই শারদোৎসবকে কেন্দ্র করে আমরা সারা বছরই বহুমূখী প্রয়াস নিয়ে মানুষের পাশে থাকার চেষ্টা করি। ” তার সাথে এই পঞ্চাশতম বর্ষের শারদীয়ার যে আয়োজন আমরা করেছি, তাতে করে আগত মানুষ জন আনন্দ পাবে বলে আমাদের বিশ্বাস।” মহালয়ার পূণ্য প্রভাতে শতাধিক মানুষ মরণোত্তর দেহদানে অঙ্গীকারের মাধ‍্যমে সুবর্ণ জয়ন্তী বর্ষ শারদ উৎসবের সূচনা করবেন। শ্রীতমা মন্ডলের বাবা মা এদিন মরণোত্তর দেহদাতাদের উৎসাহদানে শুভেচ্ছা জানিয়ে দূর্গতিনাশিনী আরাধনার পঞ্চপ্রদীপ প্রজ্বলন করবেন। উল্লেখ্য, গত ৬ই জুন হাওড়া কদমতলার তেরো বছরের শ্রীতমা দূরারোগ্য ব‍্যাধিতে ব্রেনডেথ হওয়ার পর তার বাবা-মা এস এস কে এমে অ্যানাটমি বিভাগে তাদের প্রানহীন ছোট্ট শ্রীতমার দেহটি তুলে দিয়ে মানবতার শ্রেষ্ঠদানে দৃষ্টান্ত স্থাপন করে ছিলেন। উৎসবের কদিন উপস্থিত থাকবেন জেলা ও রাজ‍্যস্তরে প্রশাসনিক, জন প্রতিনিধি সহ বহু বিশিষ্ট ব‍্যাক্তিবর্গ। ইতিমধ্যেই তারই মন্ডপ এবং প্রতিমা তৈরিতে ব্যস্ততা তুঙ্গে শিল্পীদের।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here