৫০০ বছর ধরে অবশিষ্ট অংশকেই পুজো করছে কোচবিহার।

কোচবিহার, নিজস্ব সংবাদদাতা:-  কোচবিহারে এই কালী পুজো প্রায় ৫০০ বছরের পুরনো। লক্ষ্মী পুজোর দিন থেকে দীপাবলি পর্যন্ত বিশেষ পদ্ধতিতে পুজো হয় প্রাচীন এই শ্মশান কালী মাতৃমূর্তির।

১৫১৩ বঙ্গাব্দে প্রথম দিকে পুজো শুরু। এই পুজোর শুরুতে পেছনে কোচবিহারের মহারাজা গোপালকৃষ্ণ নারায়নের হাত রয়েছে। প্রথম দয়ালচন্দ্র সাধু এই পুজোর প্রচলন করেন।
শুধুমাত্র বাৎসরিক উদযাপন নয়, নিত্য পুজো পান এই জাগ্রত দেবী। পুজোর দায়িত্বে স্থানীয় বাসিন্দা গোপালচন্দ্র দাস।

এক সময় দেবীর পুজো হত তোর্সা নদীর মাঝখানে। ১৯৫৩ সালে বন্যার জেরে ভাঙনে তলিয়ে যায় মন্দির। নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যান দেবী। তবে দেবীমূর্তির অবশিষ্টাংশ আগলে রেখে আজও পুজো হয়ে আসছে কোচবিহারের হাজরাপাড়া এলাকার পুরনো এই শ্মশান কালী মন্দিরে। অতীতে মাটির তৈরি প্রতিমার আরাধনা করা হত। পরবর্তীকালে পাথরের প্রতিমা গড়া হয়।

এর আগে তোর্সা নদীর তীরে শ্মশানে প্রতিষ্ঠিত ছিলেন দেবী। তবে পরবর্তী কালে কোচবিহার মহাশ্মশানে,টাপুরহাট এলাকায় স্থানান্তরিত হয় মন্দির। নতুন করে এখানে পুজো শুরু হলেও ঐতিহ্য রক্ষার্থে আজও পুরনো শ্মশান কালীর পুজো করে আসছেন স্থানীয় বাসিন্দারা।

বলি প্রথার প্রচলন নেই এখানে। দীর্ঘদিন আগেই এই প্রথার বিলুপ্তি ঘটেছে। বর্তমানে বৈষ্ণব মতে আরাধনা করা হয় দেবীর। কোচবিহার দেবোত্তর ট্রাস্ট বোর্ড এই মন্দিরের দায়িত্ব নিতে চেয়েছিল এক সময়ে। কিন্তু এই পুজো ঘিরে অকৃত্রিম আবেগ স্থানীয় বাসিন্দাদের। তাই মন্দিরের ভার ট্রাস্টের হাতে তুলে দিতে অস্বীকার করেন তাঁরা।

জাঁকজমকহীন হলেও রাজ ঐতিহ্য, পরম্পরা বজায় রেখে আজও পুজো হয় পুরনো শ্মশান কালীর। স্থানীয় মানুষের বিশ্বাস, এই জাগ্রত শ্মশান কালী সমগ্র কোচবিহারের রক্ষাকর্ত্রী।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *