রাতের অন্ধকারে মাখনা বোঝাই একটি লরিকে আটকে চালককে মারধোর।

0
100

নিজস্ব সংবাদদাতা, মালদা;;২৫ফেব্রুয়ারী: রাতের অন্ধকারে মাখনা বোঝাই একটি লরিকে আটকে চালককে মারধোর।ধারালো অস্ত্র দিয়ে আঘাত।চালকের কাছ থেকে ছিনতাই ২২ হাজার টাকা। আহত লরি চালককে রক্তাক্ত অবস্থায় উদ্ধার করে চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে নিয়ে যায় পুলিশ। পরবর্তীতে লরি চালকের অভিযোগের ভিত্তিতে রাতেই গ্রেফতার ৩। ধৃত তিনজনই শাসকদলের শ্রমিক সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত। তার মধ্যে একজন আইএনটিটিউসির অঞ্চল সভাপতি। যদিও ধৃত অঞ্চল সভাপতির দাবি দলের মধ্যে থেকেই তাকে ফাঁসানো হয়েছে এই ঘটনায়। সমগ্র ঘটনায় তৃণমূলকে খোঁচা বিজেপির। পাল্টা সাফাই তৃণমূলের। যা নিয়ে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক চাপানোতোর।মালদা জেলার হরিশ্চন্দ্রপুর থানা এলাকার ঘটনা।হরিশ্চন্দ্রপুর থানা এলাকার হরিশ্চন্দ্রপুর সদরের মাখনা ব্যবসায়ী বসন্ত কেডিয়ার কাছ থেকে মাখনা বোঝাই করে একটি লরি লখনৌর উদ্দেশ্যে রওনা দেয়। রাত ১০:৩০ নাগাদ হরিশ্চন্দ্রপুর কিরণবালা বালিকা বিদ্যালয়ের সামনে বাইকে করে তিনজন এসে লরিটিকে আটকায়। লরি চালক মধু সিং এর কাছে টাকার দাবি করে।চালক টাকা দিতে না চাইলে লরি থেকে নামিয়ে তাকে বেধড়ক মারধর করা হয়। এমনকি ধারালো ছুড়ি দিয়ে আঘাত করা হয় বা কানের পাশে। তারপরেই চালকের কাছে থাকা নগদ ২২ হাজার টাকা নিয়ে চম্পট দেয় তিনজন। স্থানীয়রা হরিশ্চন্দ্রপুর থানায় খবর দিলে হরিশ্চন্দ্রপুর থানার আইসি দেওদূত গজমেরের নেতৃত্বে বিশাল পুলিশ বাহিনী এসে পৌঁছায় ঘটনাস্থলে। আহত লরি চালককে উদ্ধার করে নিয়ে যাওয়া হয় হরিশ্চন্দ্রপুর গ্রামীণ হাসপাতালে। সেখানে তার চিকিৎসা হয়। তারপর ওই লরি চালক হরিশ্চন্দ্রপুর থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। সেই অভিযোগের ভিত্তিতে রাতেই তিনজনকে গ্রেফতার করে হরিশ্চন্দ্রপুর থানার পুলিশ। ধৃতদের নাম সুন্দর দাস(৩৮), শেখ রাসুল(৩২), রণবীর দাস ওরফে বান্টি(৩২)। তিনজনেরই বাড়ি হরিশ্চন্দ্রপুর সদর এলাকায়। রণবীর দাস হরিশ্চন্দ্রপুর অঞ্চল আইএনটিটিইউসির সভাপতির দায়িত্ব রয়েছেন। বাকি দুইজনও সক্রিয় ভাবে শাসকদলের সঙ্গে যুক্ত। আর এই ঘটনা সামনে আসতেই শোরগোল পড়ে গেছে রাজনৈতিক মহলে। সঙ্গ দোষে লোহা ভাসে। তৃণমূলকে খোঁচা বিজেপির। আইন আইনের পথে চলবে সমগ্র ঘটনা খতিয়ে দেখা হবে সাফাই তৃণমূলের। যদিও রণবীর দাসের দাবি দলের মধ্যে থেকেই তাকে ফাঁসানো হচ্ছে। শনিবার ধৃতদের ৭ দিনের পুলিশি হেফাজতের আবেদন জানিয়ে চাঁচল মহকুমা আদালতে পেশ করা হয়েছে। হরিশ্চন্দ্রপুর থানার পুলিশ জানিয়েছে রাতেই তিনজনকে গ্রেফতার করে করা হয়েছে। অভিযোগ জমা পড়েছে। অভিযোগের ভিত্তিতে মামলা রুজু করা হয়েছে। যদিও ছিনতাই হওয়া ২২ হাজার টাকা এবং যে অস্ত্র দিয়ে আঘাত করা হয়েছিল তা এখনো উদ্ধার হয়নি।পুলিশের সক্রিয়তায় খুশি হরিশ্চন্দ্রপুর ব্যবসায়ী সংগঠন। প্রসঙ্গত হরিশ্চন্দ্রপুর এলাকায় বারবার শাসকদলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব সামনে আসছে।ধৃত অঞ্চল সভাপতিই দাবি করছেন দলের মধ্যে থেকেই তাকে ফাঁসানো হয়েছে। তবে কি তিনি গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের শিকার? নাকি এই ঘটনার সঙ্গে তাদের সত্যিই যোগ ছিল? তা নিয়ে উঠেছে প্রশ্ন।

অভিযোগকারী লরি চালক মধুসিং বলেন, আমি এখান থেকে মাখনা নিয়ে যাচ্ছিলাম। তিনজন এসে আমার গাড়ি আটকায়। আমাকে মারধর করে আমার কাছে থাকা টাকা নিয়ে চলে যায়। তাদেরকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। আমি তিনজনকেই চিনতে পেরেছি।

মাখনা ব্যবসায়ী বসন্ত কেডিয়া বলেন, আমার কাছ থেকে মাখনা নিয়ে যাচ্ছিল। সেই সময় এই ঘটনা ঘটে। পুলিশ এত দ্রুত পদক্ষেপ নিয়েছে তাই আমরা খুশি। ব্যবসায়ীদের নিরাপত্তা দরকার।

ধৃত আইএনটিটিইউসির অঞ্চল সভাপতি রণবীর দাস বলেন, আমি এই ঘটনার সঙ্গে কোনো ভাবেই যুক্ত নয়। দলের মধ্যে থেকেই আমাকে কেউ ফাঁসিয়েছে। এলাকায় এরা শ্রমিক সংগঠন তুলে দিতে চাইছে।

হরিশ্চন্দ্রপুর ১ নম্বর ব্লক আইএনটিটিউসির সভাপতি সাহেব দাস বলেন, যারা গ্রেপ্তার হয়েছে প্রত্যেকেই ভালো ছেলে বলেই জানি। পুলিশ সমগ্র ঘটনা তদন্ত করে দেখুক। এর আগে এদের নামে এই ধরনের কোন অপবাদ নেই। যদি সত্যিই এমন হয়ে থাকে তবে দল কঠোর পদক্ষেপ নেবে।

উত্তর মালদা সাংগঠনিক জেলা বিজেপির সম্পাদক রূপেশ আগরওয়াল বলেন, বান্টি কে আমি ব্যক্তিগত ভাবে চিনি।সে এই ধরনের কাজ করবে না। কিন্তু সঙ্গ দোষে লোহা ভাসে। এটাই তৃণমূলের সংস্কৃতি। দুষ্কৃতীদের পাল্লায় পড়ে তাকেও ফাঁসতে হলো।

তবে সমগ্র ঘটনা নিয়ে অস্বস্তি বাড়ছে শাসকদলের।এলাকার নিরাপত্তা নিয়েও উঠছে প্রশ্ন। তবে পুলিশের তদন্তের পড়েই সমগ্র ঘটনা স্পষ্ট হয়ে যাবে। ঘটনার মোড় কোন দিকে নেই তাকিয়ে সকলে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here