নেই অজ্ঞানের ডাক্তার, জরুরী পরিস্থিতিতেও স্থানান্তরিত করতে হচ্ছে প্রসূতি মায়েদের।

0
175

নদীয়া, নিজস্ব সংবাদদাতা:- নেই অজ্ঞানের ডাক্তার, জরুরী পরিস্থিতিতেও স্থানান্তরিত করতে হচ্ছে প্রসূতি মায়েদের। চূড়ান্ত অব্যবস্থা শান্তিপুর স্টেট জেনারেল হাসপাতালে। রোগীর প্রাণহানি ঘটলে এর দায় কে নেবে? প্রশ্ন বিরোধী থেকে সাধারণ মানুষের।রাজ্য সরকার উদ্যোগী হয়েছে স্বাস্থ্য পরিকাঠামো ফেরাতে। বিশেষ করে প্রসূতি বিভাগ গুরুত্ব সহকারে দেখা হয়, স্বাস্থ্য দপ্তরের তরফে। কিন্তু চূড়ান্ত বেহাল দশা শান্তিপুর স্টেট জেনারেল হাসপাতালের প্রসূতি বিভাগের। অজ্ঞানের ডাক্তার না থাকার কারণে তিনদিন বন্ধ থাকছে সিজার। অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় সন্তানসম্ভবা গর্ভবতী মহিলাদের স্থানান্তরিত করা হচ্ছে অন্য হাসপাতালে। জরুরি অবস্থায় স্থানান্তর করার ফলে গর্ভবতী মহিলার যদি কোন দুর্ঘটনা ঘটে এর দায় কে নেবে ? সেই প্রশ্নই এখন সামনে এসেছে। পশ্চিমবঙ্গের প্রতিটি জেলার হাসপাতালে এখন অপারেশনের সুবিধা রয়েছে। অর্থাৎ জরুরি পরিস্থিতিতে চিকিৎসকরা সিজারের মাধ্যমে সন্তান প্রসব করাতে পারেন। নদীয়ার শান্তিপুর স্টেট জেনারেল হাসপাতালও তার ব্যতিক্রম নয়। পশ্চিমবঙ্গ সরকার এবং স্বাস্থ্য দপ্তরের তরফে হাসপাতাল চত্বরেই পরিষ্কার লেখা রয়েছে ২৪ ঘন্টা সিজারের পরিষেবা রয়েছে। কিন্তু দীর্ঘদিন ধরে অজ্ঞানের ডাক্তার না থাকার কারণে চূড়ান্ত দুর্ভোগে রোগী ও তার আত্মীয়রা। অভিযোগ অজ্ঞানের ডাক্তার তিনদিন না থাকার কারণে ওই তিন দিন কোন সিজার করা হয় না হাসপাতালে। কোন গর্ভবতী মহিলা যদি সেই সময় ভর্তি হয় তাহলে তার পরিবারের কাছ থেকে একটি মুচ লেখা লিখে নেওয়া হচ্ছে। অর্থাৎ নিজের দায়িত্বেই হাসপাতালে ভর্তি করানো হচ্ছে। সেখানে প্রশ্ন উঠছে যে হাসপাতালে ২৪ ঘন্টা সিজারের কথা বলা হচ্ছে সেখানে কেন রোগী ও তার আত্মীয়রা নিজের দায়িত্ব নিয়ে ভর্তি করাবেন। শুধু তাই নয়, জরুরি পরিস্থিতিতে বিভিন্ন সময় অন্য হাসপাতালে তড়িঘড়ি স্থানান্তরিত করা হচ্ছে। যার ফলে প্রাণ হানির একটি চূড়ান্ত সম্ভাবনা থেকে যাচ্ছে।
এ বিষয়ে শান্তিপুরের বাসিন্দা সুব্রত মৈত্র বলেন, শান্তিপুরবাসীর একমাত্র ভরসার জায়গা এই স্টেট জেনারেল হাসপাতাল। এখানে প্রচুর রোগীরা আসেন। বিশেষ করে প্রসূতি বিভাগ সবথেকে বেশি স্পর্শ কাতর। আর সেই বিভাগে যদি অজ্ঞানের ডাক্তার না থাকে তাহলে প্রস্তুতি চিকিৎসকের কোন কিছু করার থাকে না। অর্থাৎ জরুরী পরিস্থিতিতে যদি কোন অপারেশনের প্রয়োজন হয় তাহলে বাধ্য হয়ে তাকে স্থানান্তরিত করতে হবে অন্য হাসপাতালে। সেই কারণে শান্তিপুরবাসী হিসেবে বলব যত দ্রুত সম্ভব নিয়মিত অজ্ঞানের ডাক্তার শান্তিপুরে নিয়ে আসা প্রয়োজন, পাশাপাশি স্বাস্থ্য পরিকাঠামো যাতে আরো ভালো করা যায় সে দিকেও নজর রাখার অনুরোধ করবো।
তবে অসুবিধার কথা সহমত পোষণ করে শান্তিপুর স্টেট জেনারেল হাসপাতালের গাইনোকলজিস্ট ডক্টর পবিত্র বেপারী বলেন, অজ্ঞানের ডাক্তার সপ্তাহে তিন দিন না থাকার কারণে আমরা যারা শান্তিপুর হাসপাতালে প্রসূতি চিকিৎসক রয়েছে তাদের প্রত্যেককে কিছুটা হলেও অসুবিধায় পড়তে হয়। তার কারণ যে তিন দিন অজ্ঞানের ডাক্তার থাকে না সেই সময় যে প্রসূতি মায়ের সিজারের প্রয়োজন হয় তখন আমরা বাধ্য হয়ে অন্য হাসপাতালে স্থানান্তরিত করি। যদিও তখন আমাদের বিভিন্ন প্রশ্নের মুখে পড়তে হয়। তবে তিনি বলেন যেটুকু খবর রয়েছে স্বাস্থ্য দপ্তরও চিন্তা ভাবনা করছে অতি দ্রুত সমস্যার সমাধান হবে। তিনিও মেনে নেন জরুরী পরিস্থিতিতে স্থানান্তরিত করা প্রসূতি মা এবং বাচ্চার ক্ষেত্রে অনেকটা ঝুঁকিপূর্ণ। পাশাপাশি তিনি বলেন, আমরা স্থানান্তরিত করার পর যে হাসপাতালে তাকে পাঠানো হয় সেই হাসপাতালের সঙ্গে যোগাযোগ রেখে চলি এবং তার শারীরিক অবস্থার খবর নিয়ে থাকি।
রাজ্য সরকার ও স্বাস্থ্য দপ্তর কে কটাক্ষ করে এ বিষয়ে বিজেপি নেতা প্রসেনজিৎ দেউড়ি বলেন, গোটা রাজ্যজুড়ে দুর্নীতি চলছে। চোরেদের সামলাতেই ব্যস্ত রাজ্য সরকার। স্বাস্থ্য দপ্তর কিভাবে দেখবেন। শান্তিপুর স্টেট জেনারেল হাসপাতালেই শুধু নয়, গোটা রাজ্যের হাসপাতালে ই একই অবস্থা। তবে অজ্ঞানের ডাক্তার না থাকার কারণে যদি কোন প্রসূতি মায়ের দুর্ঘটনা ঘটে সেই দায়ভার স্বাস্থ্য দপ্তর কে নিতে হবে বলে কটাক্ষ করেন তিনি।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here