ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামে অন্যতম ভূমিকা রাখা বৈপ্লবিক বাড়ি বাঁকুড়া শহরের বুকে পড়ে রয়েছে ভুতুড়ে বাড়ির মত।

আবদুল হাই, বাঁকুড়াঃ আগে দেখা যেত এই বাড়িটির সামনে লেখা রয়েছে “বিপ্লবী বাড়ি”। বর্তমানে ঘন পাতার আবরণে ঢেকে গেছে সেই লেখা। বাঁকুড়া শহরের বুকে বড় কালিতলা এলাকায় রয়েছে মুখার্জি দের বাড়ি। ইতিহাসের পাতা ঘাঁটলে জানা যাবে যে বাবু হরিহর মুখোপাধ্যায় বাড়ি ছিল এই ঐতিহাসিক বাড়ি। হরিহর মুখোপাধ্যায় নিজেই ছিলেন বাঁকুড়া শহরের প্রথম ভারতীয় পৌর প্রশাসক। তার পৃষ্ঠপোষকতায় বাঁকুড়া থেকে বাঁকুড়ার বিপ্লবী বাড়িকে কেন্দ্র করে স্বাধীনতা সংগ্রাম এক অন্য মাত্রা পেয়েছিল। এই বাড়িটি একসময় বিপ্লবীদের গোপন আস্তানা ছিল। নাম জাদা প্রথম সারির বিপ্লবীরা এখানে ঘাঁটি গাড়তেন এবং অনুশীলন করতেন। এলাকার বড় কালিতলা মন্দিরে শক্তি পূজা করতেন বিপ্লবীরা। শক্তি আরাধনা করে দেশ স্বাধীন করতে অনড় ছিলেন তাঁরা। বর্ধমানের চাননা গ্রামের সন্তান যতীন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায়, যাকে বিপ্লবীদের ব্রহ্মা বলা হত, তিনিও এসেছিলেন এই বিপ্লবী বাড়িতে।

এই বাড়ি থেকে কয়েক গজ দূরেই অবস্থান করছে বড়কালিতলা। বড় কালিতলা মন্দিরের নামেই তৈরি হয়েছে এই এলাকার নাম। বিপ্লবী বাড়ির সঙ্গে বড় কালিতলা মন্দিরের যোগ সূত্র গভীর। এই বাড়িতেই বিপ্লবীরা আসতেন শক্তির আরাধনা করতে। এই মন্দিরেই তৈরি হত আধ্যাত্মিক একতা।


বড় কালিতলা মন্দির আজও পূজিত হয় ভক্তি ভরে তবে ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামে অন্যতম ভূমিকা রাখা বৈপ্লবিক বাড়ি বাঁকুড়া শহরের বুকে পড়ে রয়েছে ভুতুড়ে বাড়ির মত। জঙ্গলে গেছে গোটা বাড়িটি, বাড়িতে ঘেরা রয়েছে প্রায় সাত ফুট উঁচু প্রাচীর দিয়ে। মুখ্য ফটকে ঝলানো রয়েছে তালা। উঁকিঝুঁকি মারলে দেখা যাবে জঙ্গলে ঢেকে গেছে গোটা বাড়ি। ছেয়ে ফেলেছে লতাপাতা। তৈরি হয়েছে সাপের আস্তানা। তবে বিপ্লবীদের এই ইতিহাস আজও গর্বের সাথে স্মরণ করেন বাঁকুড়াবাসি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *