পণের দাবিতে এক মূক ও বধির গৃহবধূকে গলা টিপে হত্যা করার চেষ্টার পাশাপাশি গায়ে কেরোসিন তেল ঢেলে পুড়িয়ে মারার চেষ্টার অভিযোগ উঠেছে ওই গৃহবধূর স্বামী,শশুর ও শাশুড়ির বিরুদ্ধে।

নিজস্ব সংবাদদাতা, মালদাঃ- ২০২৩ সালে এসে সমাজ যতই উন্নত হোক,পণ প্রথার মতন অসামাজিক ব্যাপার যে সমাজের মন থেকে এখনও মুছে যায়নি,তা হরিশ্চন্দ্রপুর এলাকার এই ঘটনা প্রমাণ করে।পণের দাবিতে এক মূক ও বধির গৃহবধূকে গলা টিপে হত্যা করার চেষ্টার পাশাপাশি গায়ে কেরোসিন তেল ঢেলে পুড়িয়ে মারার চেষ্টার অভিযোগ উঠেছে ওই গৃহবধূর স্বামী,শশুর ও শাশুড়ির বিরুদ্ধে।ঘটনাটি ঘটেছে বুধবার হরিশ্চন্দ্রপুর থানার তুলসীহাটা গ্রাম পঞ্চায়েতের বসতপুর গ্রামে।এই নিয়ে এদিন এলাকায় চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়ে।মেয়ের পরিবার সূত্রে জানা যায়,প্রায় ছয় বছর আগে পিংকি দাসের সঙ্গে অমল দাসের বিয়ে হয়।অমল দাস পেশায় পরিযায়ী শ্রমিক।তাদের তিনটি নাবালক সন্তান রয়েছে।অভিযোগ,বিয়ে হওয়ার তিন মাস পর থেকে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন চালানো হত পিংকি দাসের ওপর।এমনকি পণের দাবিতে গতকাল শ্বাসরোধ করে খুন করার চেষ্টা
করে স্বামী সহ শ্বশুর বাড়ির লোকেরা।
পিংকির বাবা মা বিয়ের সময় নগদ এক লক্ষ আশি হাজার টাকা ও আসবাবপত্র সহ যাবতীয় জিনিসপত্র দেওয়া সত্ত্বেও আরও পণের দাবিতে অত্যাচার চালাতো স্বামী,শ্বশুর ও শাশুড়ি।তাদের দাবি মতো টাকা দিতে না পারায় একাধিকবার তাকে মারধর এমনকি ঘর থেকে বের করে দেওয়ারও অভিযোগ রয়েছে ।সাম্প্রতিককালে ১০ হাজার টাকা দিতে না পারায় পিংকি কে তার স্বামী ও‌ পরিবারের লোকেরা গলা টিপে শ্বাস রোধ করে খুন করার চেষ্টা করে বলে অভিযোগ।অপরদিকে স্বামী অমল দাস নয় মাসের তৃতীয় সন্তান কে নিজের পুত্র বলে গ্রহন করতে অস্বীকার করছে।

এদিন বধূর চিৎকার শুনে ছুটে আসেন স্থানীয় বাসিন্দারা।খবর দেওয়া হয় মেয়ের পরিবারকে।এরপর তাঁকে উদ্ধার করে হরিশ্চন্দ্রপুর গ্রামীণ হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে।পিংকি দাসের স্বামী, শ্বশুর ও শাশুড়ির বিরুদ্ধে নির্যাতিতা বধূর পরিবারের লোকজন হরিশ্চন্দ্রপুর থানায় খুনের চেষ্টা লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন।এই ঘটনায় পিংকির পরিবারের লোকেরা স্বামী,শ্বশুর ও শাশুড়ির বিরুদ্ধে উপযুক্ত তদন্ত করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছেন।

পিংকি দাসের বাবা কিশান দাস বলেন’বিয়ের সময় অনেক কিছু দেওয়া সত্ত্বেও আমার মেয়ের ওপর ওরা এতোটুকু অত্যাচার কম করেনি।আর গতকাল তো মেরে ফেলারই চেষ্টা করল। পুলিশের কাছে আবেদন করেছি যেন ওরা কঠোর শাস্তি পায়।’

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *