কলকাতার মল্লিক বাড়ির দুর্গা পুজো।

১৯২৫ সালে উমার আরাধনা শুরু করেন রাধামাধব মল্লিকের পুত্রেরা। ধীরে ধীরে বাড়তে থাকে জনপ্রিয়তা। এক পুজোকে কেন্দ্র করেই কলকাতার রূপে বদল এসেছে বহুবার। কিন্তু সেই পরিবর্তনের স্রোতে গা না ভাসিয়ে স্বাতন্ত্র্য বজায় রেখেই এগিয়ে চলেছে আজকের মল্লিক বাড়ির দুর্গাপুজো।

ভবানীপুরের মল্লিকবাড়ি মানে রঞ্জিত মল্লিক ও কোয়েল মল্লিকের বাড়ির পুজো। এখন আর তা মল্লিকবাড়ি বা ভবানীপুরের পুজো হিসাবেই আটকে নেই এখন তা খ্যাতির আর পরিচিতির শিখরে। দুর্গাপুজোর গল্প মানেই সেখানে একবার হলেও মল্লিকবাড়ির নাম উঠে আসবেই।
সেখানে পুজোর ক’টা দিন বাবা-মেয়ে কোনো জনপ্রিয় অভিনেতা অভিনেত্রী নন। এক্কেবারে বাড়ির ঘরোয়া মানুষ। পুজোর সমস্ত কিছুতে প্রত্যক্ষ ভাবে জড়িয়ে থাকেন তাঁরা। তা সে পুজোর জোগাড় হোক বা কাঁসর বাজানো, সকলের কাছে প্রদীপ নিয়ে যাওয়া বা সিঁদুর খেলা, সবেতেই মেতে থাকেন তাঁরা।
প্রতি বছর জন্মাষ্টমীর পর থেকেই দেবীর প্রতিমা তৈরির কাজ শুরু হয়ে যায়। মল্লিকবাড়িতে একচালা ও ডাকের সাজের প্রতিমার পুজো হয়।

বছরভর প্রতীক্ষার পর ষষ্ঠীতেই বিশুদ্ধ সিদ্ধান্ত পঞ্জিকামতে মল্লিকবাড়িতে শুরু হয় দেবী দুর্গার বোধন। বাড়ির আত্মীয়-পরিজনে ভরে ওঠে দুর্গাদালান। দুর্গতিহারিণীর প্রতি নিবেদিত ফুল-বেলপাতা-মন্ত্রে উদ্ভাসিত হয়ে ওঠে বাড়ি। এক একদিন একেক ফুলের মালা, এবং রুপোর ১০৮টি পদ্মমালায় দেবীকে সুসজ্জিতা করে তোলেন বাড়ির সদস্যরা। দেবীর পাশে রেখেই পুজো করা হয় শ্রীধর নারায়ণকে। গুপ্তিপাড়ার বৈষ্ণবমতেই পুজোর উপাচার চলে, তা সে সপ্তমীতে কলাবউ স্নান হোক, অষ্টমীতে কুমারী পুজো, অথবা নবমীতে হোম।

মল্লিক পরিবার বৈষ্ণবীয় মতে দীক্ষিত। তাই কোনো প্রাণী বলির প্রথা কোনো দিনই এই পুজোয় ছিল না, আজও নেই। তাই পুজোর ক’দিন বাড়ির প্রত্যেক সদস্য নিরামিষ খাবার খান। দশমীতে প্রতিমা বিসর্জনের পরেই আমিষ খাওয়া শুরু হয়।
পুজোর দিনগুলিতে আত্মীয়পরিজন, বন্ধুবান্ধব ছাড়াও বাড়িতে ভিড় হয় বহু অনুরাগী ও চেনা মানুষেরও।

।। সংগৃহীত ইন্টারনেট।।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *