খেজুর গুড়ের পাউডার তৈরি করে স্বনির্ভরতার পথ দেখছে শবর গ্ৰাম।

আবদুল হাই,বাঁকুড়া: বাঁকুড়া জেলাতে তৈরি হচ্ছে খেজুর গুড়ের পাউডার। অন্যান্য হেলথ ড্রিংকের মতই দুধের সঙ্গে কিংবা চায়ের সঙ্গে মিশিয়ে খাওয়া যেতেই পারে এই পাউডার। এমনটাই বলছে প্রস্তুতকারক ফার্মার্স প্রডিউসার কোম্পানি। বাঁকুড়া জেলার ইন্দপুর ব্লকের সরবেড়িয়া শবর গ্রাম সংলগ্ন এলাকায় সঞ্জীবনী ফার্মার্স প্রডিউসার্স কোম্পানির তত্ত্বাবধানে তৈরি হচ্ছে খেজুর গুড় এবং খেজুর গুড় জাত বিভিন্ন খাদ্যদ্রব্য। বোতলবন্দী খেজুর গুড়, পাটালি, খেজুর গুড়ের বরফি ছাড়াও সবথেকে বেশি জনপ্রিয়তা পেয়েছে খেজুর গুড়ের পাউডার। বিক্রি হচ্ছে কলকাতার বাজারেও। বিপুল চাহিদা বাঁকুড়া জেলাতে। খেজুর গাছ থেকে পাড়া হচ্ছে জিরান কাঠের রস। প্রথম কাঠের রস ফুটিয়ে জাল দিয়ে সম্পূর্ণ আর্দ্রতা বের করে তারপর পাত্রে ঘষে শুকিয়ে নেওয়া হয় গুড়। এবার শুকনো খেজুর গুড় কে গুড়িয়ে নিয়ে ছাঁকনি দিয়ে ছেঁকে তৈরি করা হচ্ছে খেজুর গুড়ের পাউডার। এই পদ্ধতিতে কোনও রকম কেমিক্যাল ব্যবহার করা হয় না।

ফার্মারস প্রোডিউসার কোম্পানির সি ই ও রানা পন্ডা জানান, “খেজুর গুড় এবং খেজুর গুড়ের পাটালিতে আদ্রতা থাকে। অতিরিক্ত আদ্রতা থাকার কারণে গুড় নষ্ট হয়ে যায় কিছুদিনের মধ্যেই। আমরা চাইছিলাম খেজুরগুর কে সংরক্ষণ করে রাখতে। সংরক্ষণ করার জন্যই খেজুর গুড় থেকে সম্পূর্ণ আদ্রতা বের করে পাউডার করা হচ্ছে। এই পাউডার প্রায় ৮-৯ মাস থাকবে।”

সরবেড়িয়া শবর গ্রামে প্রায় আড়াইশো শবর পরিবারের বাস। মুখ্য জীবিকা ছিল দিনমজুরি এবং খেজুরের রস তৈরি করা। কোনমতেই সংসার চলছিল না এই দুই কাজ করে। সারা বছরে বিক্ষিপ্ত ভাবে কাজ পেতেন এই গ্রামের মানুষ। খুব কষ্ট করেই চলত জীবন যাত্রা। বর্তমানে সঞ্জীবনী ফার্মাস প্রডিউসার কোম্পানির হাত ধরে ১২ জন পুরুষ এবং দশ জন শবর মহিলা তৈরি করছেন খেজুর গুড়ের পাউডার , পাটালি এবং বরফি। তারা বোতলবন্দী করছেন খেজুর গুড়। স্বনির্ভরতার পথ দেখছে শবর গ্রাম।

এবার প্রশ্ন হচ্ছে কোথায় এবং কিভাবে পাবেন খেজুর গুড়ের পাউডার? উত্তরটা খুবই সহজ। বিষ্ণুপুর মেলা ২০২৩ এ উদ্যান পালন দপ্তরের যে স্টল রয়েছে সেখানে পেয়ে যাবেন পাউডারটি। রানা পন্ডা জানান, বাঁকুড়া উদ্যানপালন দপ্তর এই কর্মকাণ্ডে যথেষ্ট সহায়তা করেছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *