দঃ দিনাজপুর, নিজস্ব সংবাদদাতাঃ- সরকারি সাবমারসিবল পাম্পে সমস্যা। বোরো ধান চাষে বিপাকে বালুরঘাটের চাষীরা। ইতিমধ্যেই বীজতলা প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ করে বোরো ধান রোপনের কাজ চলছে বালুরঘাটের কৃষি জমিতে। ভাটপাড়া গ্রাম পঞ্চায়েতের গাজীপুর এলাকায় রয়েছে সরকারি সাবমারসিবল। কিন্তু সেখান থেকে অত্যন্ত ধীর গতিতে জল সরবরাহ হচ্ছে। যার ফলে নির্দিষ্ট সময়ে কৃষি জমিতে জল দিতে সমস্যায় পড়ছেন চাষিরা। এমনকি জল কম থাকায় এবছর বোরো ধানের চাষাবাদ দেরি করে শুরু হয়েছে বলে কৃষকদের আক্ষেপ। বালুরঘাট ব্লক দপ্তরের তরফে বিষয়টি খতিয়ে দেখার আশ্বাস দেওয়া হয়েছে।
দক্ষিণ দিনাজপুর জেলায় আমন ও বোরো ধানের চাষ সবচেয়ে বেশি হয়। প্রায় জেলার ৭০ হাজার হেক্টর জমিতে বোরো ধান চাষ হচ্ছে। গতানুগতিক নিয়মে বালুরঘাট ব্লকের গাজীপুর গ্রামের বাসিন্দারা বোরো ধান চাষে নেমেছেন এবছরও। সেই এলাকায় সরকারি পাম্প হাউস বসানো হয়েছে। যেখান থেকে প্রতি বছর চাষাবাদের কাজের সুবিধার্থে জল সরবরাহ করা হয়। যদিও এর জন্য এক মরসুমে প্রতি বিঘা জমির হিসেবে ৪৫০ টাকা করে দিতে হয় কৃষকদের। এই পাম্প হাউজ স্থাপনের পরে কৃষি জমিতে জল সেচের অনেক সুবিধা হয়েছিল বলে মত তাদের। কিন্তু এবছরের বোরো ধান চাষের শুরুতেই সমস্যা শুরু হয়েছে সেই সাপমারসিবল পাম্প হাউসে। চলতি বছরের শুরুতেই প্রায় জল বন্ধ হয়ে গিয়েছিল সেখান থেকে। তারপরে নির্দিষ্ট দপ্তরে জানানোর পরে ইঞ্জিনিয়ার ও কর্মীরা এসে সেই সাবমারসিবল পাম্প সারিয়ে দেন বলে কৃষকরা জানান। কিন্তু তারপরে অন্য সমস্যা দেখা দিয়েছে। বর্তমানে সেই পাম্প হাউজের একদিকে মোটামুটি জল পাওয়া গেলেও অন্য প্রান্ত প্রায় জলের অভাবে শুকিয়ে আসছে। পাম্প হাউজের বাঁদিকে জলের অভাবে কৃষি কাজ ব্যাহত হচ্ছে বলে অভিযোগ কৃষকদের। এদিকে বোরো ধান রোপনের সময় প্রায় পেরিয়ে যাচ্ছে। ইতিমধ্যেই বীজতলার কাজ হয়ে গিয়েছে। এই মুহূর্তে পর্যাপ্ত পরিমাণে কৃষি জমিতে জল না পেয়ে কার্যত দিশাহারা অবস্থা কৃষকদের। বিষয়টি তারা ওই পাম্প হাউজের কর্মীদের জানিয়েছেন বলে জানান। কিন্তু তারপরেও জলের সমস্যা এখনও দূর হয়নি। প্রশাসনের এই বিষয়ে পদক্ষেপ আশা করছেন ভুক্তভোগী কৃষকরা।
স্থানীয় কৃষক কৃষ্ণপদ বর্মন বলেন, ‘প্রথম থেকেই এখানে জল সেচের সমস্যা। দেরিতে জল ছাড়ার জন্য গভীর সমস্যা রয়েছে। এখন কৃষকদের জল ঠিক মতো সরবরাহ করতে পারছে না। বর্তমানে ১০ জন কৃষক কাজ করলে হয়ত পাঁচজন কৃষকের জমিতে জল পাচ্ছে আর বাকি পাঁচজনের জমিতে জল আসছে না। এই কারণে এবার চাষাবাদে দেরি হয়ে গিয়েছে। এখন এটা স্থায়ীভাবে মেরামতি করলে বোঝা যাবে জল প্রবাহ কেমন আছে।’
বালুরঘাটের বিডিও সম্বল ঝা জানান, ‘সংবাদ মাধ্যমের কাছ থেকেই সমস্যার কথাটি জানলাম। আমাদের কাছে কৃষকরা সমস্যা জানিয়ে অভিযোগ করলে আমরা পদক্ষেপ করব। কৃষকদের চাষবাসে কোনও সমস্যা যাতে না হয় সেই দিকে আমরা সচেষ্ট থাকব। যদি অন্য কোনও দপ্তরের তরফে সেই পাম্প হাউস বসানো হয় তাদেরকেও আমরা সমস্যাটি জানাব।’
Leave a Reply