আবদুল হাই, বাঁকুড়াঃ বসন্ত মানেই নতুনের আহ্বান, রঙের ছোঁয়া, আর উচ্ছ্বাসে ভরা হৃদয়। প্রকৃতির এই রঙিন উৎসবকে কেন্দ্র করে বাঁকুড়ার ইন্দাস মহাবিদ্যালয়ে উদযাপিত হলো বর্ণাঢ্য বসন্ত উৎসব, যার নামকরণ করা হয়েছে ‘রামধনু’।
ইন্দাস মহাবিদ্যালয়ের চত্বরে বসন্তের আগমনী বার্তা যেন রঙে, গানে ও নৃত্যে নতুন মাত্রা পেল। সকাল থেকেই শিক্ষার্থী, শিক্ষক এবং কর্মীরা রঙিন পোশাকে হাজির হন। হলুদ, সবুজ, গোলাপি, বেগুনির মেলবন্ধনে সেজে উঠেছিল কলেজ প্রাঙ্গণ। বসন্তের উচ্ছ্বাসকে আরও প্রাণবন্ত করে তোলে সংগীত ও নৃত্য পরিবেশনা।
উৎসবের সূচনা হয় প্রথা অনুযায়ী বসন্ত বন্দনার মধ্য দিয়ে। কলেজের অধ্যক্ষ মহাশয়ের উদ্বোধনী ভাষণ সকলের মন ছুঁয়ে যায়। তিনি বলেন, “বসন্ত মানেই সৌন্দর্য আর সম্প্রীতির উৎসব। এই উৎসব আমাদের জীবনে রঙ এবং আনন্দের বার্তা নিয়ে আসে।” এরপর শুরু হয় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান।
কলেজের ছাত্র-ছাত্রীদের পরিবেশিত রবীন্দ্রসঙ্গীত ও লোকগীতি পরিবেশকে আবেগে ভরিয়ে তোলে। নাচের ছন্দে আর গানের মূর্ছনায় মুগ্ধ হয় উপস্থিত দর্শকরা। শিক্ষার্থীদের মধ্যে ছিল উৎসাহের কমতি নেই। কেউ আবৃত্তি করেন বসন্তের কবিতা, কেউ বা মেতে ওঠেন দলীয় নৃত্যে।
এই উৎসবের বিশেষ আকর্ষণ ছিল “রামধনু রং প্রতিযোগিতা”। যেখানে শিক্ষার্থীরা রং ও তুলির মাধ্যমে বসন্তের অনুভূতি ফুটিয়ে তোলেন। রঙের বাহারে সেজে ওঠে পুরো অনুষ্ঠানস্থল। বিজয়ীদের হাতে তুলে দেওয়া হয় পুরস্কার, যা তাঁদের সৃজনশীলতাকে স্বীকৃতি দেয়।
বসন্ত উৎসব শুধু আনন্দেরই নয়, বরং সম্প্রীতি ও বন্ধুত্বের বার্তা বহন করে। ইন্দাস মহাবিদ্যালয়ের এই বর্ণময় আয়োজন শিক্ষার্থীদের মনে চিরস্থায়ী স্মৃতি হয়ে থাকবে। উৎসবের শেষ লগ্নে রঙ খেলায় মেতে ওঠেন সকলে। আবীরের রঙে রাঙিয়ে ওঠে চারপাশ।
এই উৎসব যেন সত্যিই রামধনুর মতো – যেখানে প্রতিটি রঙ একসঙ্গে মিশে তৈরি করে সৌহার্দ্য আর আনন্দের এক অপরূপ দৃশ্য।
Leave a Reply