দৌলতাবাদে মর্মান্তিক সড়ক দুর্ঘটনায় প্রাণ হারালেন ৫৫ বছরের হাওয়ানূর বিবি।

মুর্শিদাবাদ, নিজস্ব সংবাদদাতা:- মুর্শিদাবাদ জেলার দৌলতাবাদ থানার কেওয়াতলা মোড়ে রাজ্য সড়কে এক মর্মান্তিক সড়ক দুর্ঘটনায় সোমবার সকাল ১০ টায় প্রাণ হারালেন হাওয়ানূর বিবি নামে ৫৫ বছরের এক মহিলা। ইসলামপুর থেকে বহরমপুর অভিমুখে চলা একটি ১৬ চাকা ডাম্পার গাড়ি বৃদ্ধা হাওয়ানূর বিবিকে পিছন দিক থেকে ধাক্কা মেরে পিষে দেয়। ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়। ঘটনাটির সিসিটিভি ফুটেজ ইতিমধ্যেই প্রকাশ্যে এসেছে, যা এই দুর্ঘটনার চাক্ষুষ প্রমাণ বহন করছে।

প্রত্যক্ষদর্শীদের মতে, স্থানীয় বাসিন্দারা ঘটনাটি দেখতে পেয়ে চিৎকার শুরু করেন, তবে ততক্ষণে গাড়িটি অনেক দূর চলে গিয়েছিল। খবর পেয়ে দৌলতাবাদ থানার পুলিশ দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে মৃতদেহটি উদ্ধার করে বহরমপুর মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠায়। পুলিশি তৎপরতায় ঘাতক গাড়িটিকে আটক করে থানায় আনা হলেও চালক ও খালাসী পলাতক রয়েছে বলে জানা গেছে।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, মৃত হাওয়ানূর বিবির পিতার নাম ছিল দাউদ শেখ (প্রয়াত), এবং স্বামী সিরাজুল চৌধুরী ধনাইপুর এলাকার বাসিন্দা। বিবাহ সূত্রে হাওয়ানূর বিবির শ্বশুরবাড়ি ধনাইপুর হলেও মানসিক সমস্যার কারণে তিনি দীর্ঘদিন ধরে বাবার বাড়ি বেণীদাসপুরে বসবাস করতেন। বিয়ের কয়েক বছর পর থেকেই তার মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে যায় এবং তিনি প্রায়ই বাড়ি ছেড়ে বেরিয়ে পড়তেন। তার এক ছেলে ও এক মেয়ে রয়েছে। বর্তমানে তিনি তার ছেলে ফিরোজ চৌধুরীর সঙ্গেই থাকতেন।

স্থানীয় বাসিন্দা সারজিনা বিবি জানান, হাওয়ানূর বিবি মাঝেমধ্যেই বাড়ি থেকে বেরিয়ে যেতেন এবং কয়েকদিন পর ফিরে আসতেন। ঘটনার দিন অর্থাৎ মৃত্যুর দুদিন আগে তিনি বাড়ি থেকে বেরিয়ে যান। সোমবার সকাল দশটার সময় খবর আসে, সড়ক দুর্ঘটনায় তার মৃত্যু হয়েছে।

দুর্ঘটনার স্থানীয় প্রত্যক্ষদর্শী নয়ন মণ্ডল বলেন, বৃদ্ধা রাস্তা দিয়ে হেঁটে যাচ্ছিলেন, সেই সময় ডাম্পার গাড়িটি তাকে পেছন থেকে ধাক্কা মারে। আরেক স্থানীয় বাসিন্দা ইয়াসিন শেখ বলেন, “গরিব পাগলী মানুষটি এইভাবে রাস্তায় প্রাণ হারাবে ভাবিনি। আমরা অত্যন্ত মর্মাহত। দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই।”

মৃতের স্বামী সিরাজুল চৌধুরী জানান, হাওয়ানূর বিবির শেষকৃত্য বেনীদাসপুর কবরস্থানেই সম্পন্ন হবে। স্থানীয় মহলে এই দুর্ঘটনা গভীর শোক ও ক্ষোভের সৃষ্টি করেছে। প্রশাসনের কাছে দ্রুত তদন্ত ও দোষীদের শাস্তির দাবি জানিয়েছেন সকলে।

এই দুর্ঘটনা আরও একবার পথ নিরাপত্তা ও যানবাহনের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *