ফেরা হলো না বাড়ি! মেদিনীপুর মেডিক্যালে স্যালাইন কাণ্ডে অসুস্থ নাসরিনের মৃত্যু হল কলকাতার SSKM হাসপাতালে।

পশ্চিম মেদিনীপুর, নিজস্ব সংবাদদাতাঃ-  ক্রমশ সুস্থ হয়ে উঠছিলেন পশ্চিম মেদিনীপুরের কেশপুরের ন্যাড়াদেউলের বাসিন্দা তথা মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজে স্যালাইন কাণ্ডে অসুস্থ প্রসূতি নাসরিন খাতুন,গত শনিবার তাঁর বাড়ি ফেরার কথা ছিল। কিন্তু গত শুক্রবার রাতে ফের অসুস্থ হয়ে পড়েন নাসরিন । শেষ পর্যন্ত, রবিবার রাত্রি ১১টা নাগাদ কলকাতার এসএসকেএম হাসপাতালেই মৃত্যু হল তাঁর। গত ১২ জানুয়ারি (২০২৫) থেকে সেখানেই চিকিৎসাধীন ছিলেন নাসরিন। জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য অধিকারিক ডঃ সৌম্যশঙ্কর সারেঙ্গী বলেন, “অত্যন্ত মর্মান্তিক ঘটনা। মাল্টি অর্গান ফেলিয়র হয়ে মৃত্যু হয়েছে নাসরিন খাতুনের। ডায়ালিসিস চলছিল। তার মধ্যেই মাল্টিঅর্গান ফেলিওর হয়ে মৃত্যু হয়েছে বছর ২২-র নাসরিন খাতুনের। সোমবার এসএসকেএম হাসপাতালেই দেহের ময়নাতদন্ত সম্পন্ন হবে। তারপর হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের তরফেই দেহ পৌঁছে দেওয়া হবে বাড়িতে।”

উল্লেখ্য, চলতি বছরের গত ৮ জানুয়ারি (বুধবার) মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের মাতৃমা বিভাগে সিজারের পরই ‘বিষ’ স্যালাইন (বিতর্কিত সংস্থার রিঙ্গার্স ল্যাকটেট/RL) প্রয়োগ তথা চিকিৎসা বিভ্রাটে অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন ৫ প্রসূতি। তাঁদের মধ্যে মামনি রুইদাস নামে এক প্রসূতির মৃত্যু হয় ১০ জানুয়ারি, শুক্রবার ভোরে। তুলনামূলকভাবে কম অসুস্থ রেখা সাউ নামে এক প্রসূতি মেদিনীপুর মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন। বাকি ৩ জনকে (মাম্পি সিংহ, মিনারা বিবি ও নাসরিন খাতুন) ১২ জানুয়ারি, রবিবার রাতে ‘গ্রিন করিডোর’ করে কলকাতার এসএসকেএম হাসপাতালে পাঠানো হয়। কেশপুরের মাজুরিয়ার মিনারা বিবি এবং শালবনীর সাতপাটির (দক্ষিণশোলের) মাম্পি সিংহ ইতিমধ্যেই সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন। তবে, বাড়ি ফেরা হলোনা নাসরিনের! নাসরিনের পরিবারের তরফে, তাঁর জামাইবাবু ইনসান আলি সোমবার সকালে বলেন, “দিন দশেক আগেই জেনারেল বেডে দিয়েছিলেন। ১০ মে বাড়ি ফেরার কথা ছিল। ৯ মে রাত থেকে ফের খিঁচুনি ও বমি শুরু হয়! ১১ মে, রবিবার রাতে চিকিৎসকরা জানান, ও আর নেই!” কেশপুরের ন্যাড়াদেউলের বাসিন্দা ছিলেন নাসরিন। তাঁর মৃত্যুতে ভেঙে পড়েছেন স্বামী সেলিম খান সহ পরিবারের সদস্যরা। সেলিমের বক্তব্য, “এবার আমার সদ্যজাত কন্যাসন্তানকে কিভাবে মানুষ করব?” উল্লেখ্য, মুখ্যমন্ত্রীর মেদিনীপুর সফরের (২১ এপ্রিলের) দিন দুয়েক আগেই তাঁর ঘোষণামতো মামনি রুইদাসের পরিবারের হাতে ক্ষতিপূরণ বাবদ ৫ লক্ষ টাকা তুলে দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছিলেন মামনির স্বামী দেবাশীষ রুইদাস। এক্ষেত্রেও তেমনটাই হয় কিনা, সেদিকেও তাকিয়ে নাসরিনের পরিবারের সদস্যরা!

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *