আসানসোল-পশ্চিম বর্ধমান, নিজস্ব সংবাদদাতা:- দেশের ইতিহাসে সম্ভবত এই প্রথমবার! বিচারালয়ের প্রতিনিধি দল পৌঁছে গেল যৌনপল্লিতে যৌনকর্মীদের জীবন, সমস্যা, অধিকার এবং
লচ্ছিপুর যৌনপল্লিতে। দেশের ইতিহাসে সম্ভবত এই প্রথমবার! বিচারালয়ের প্রতিনিধি দল পৌঁছে গেল যৌনপল্লিতে -যৌনকর্মীদের জীবন, সমস্যা, অধিকার এবং ভবিষ্যতের স্বপ্নগুলোকে কাছ থেকে বুঝতে। এই ঐতিহাসিক ঘটনা ঘটেছে আসানসোলের লচ্ছিপুর যৌনপল্লিতে।
বিচারপতির পদচারণায় আলো ছড়াল লচ্ছিপুর
কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি সোমেন সেন এর নেতৃত্বে একটি উচ্চ পর্যায়ের বিচার বিভাগীয় ও প্রশাসনিক দল বুধবার সরাসরি যৌনকর্মীদের সঙ্গে দেখা করে তাঁদের সমস্যাগুলি শোনেন।
দুর্বার মহিলা উন্নয়ন সমিতির উদ্যোগে লচ্ছিপুরের অফিসে আয়োজিত ছিল এক সংবর্ধনা অনুষ্ঠান।
বিচারপতিকে ফুলের তোড়া দিয়ে অভিনন্দন জানানো হয়।
বিচারপতির দল জানতে চান-
তাঁরা কিভাবে জীবনযাপন করেন?
সরকারি প্রকল্পের সুবিধা তাঁরা পাচ্ছেন কিনা?
ভবিষ্যতের নিরাপত্তা নিয়ে তাঁদের উদ্বেগ কী?
বিচারপতি নিজে যৌনপল্লি ঘুরে দেখেন, প্রত্যক্ষ করেন যৌনকর্মীদের দৈনন্দিন জীবনযাপন এবং তাঁদের দুঃখ-ব্যথা।
যৌনকর্মীদের একটাই দাবি:
“আমরাও শ্রমিক, আমাদেরও দেওয়া হোক শ্রমিকের স্বীকৃতি। যাতে আমরা পেনশনের আওতায় আসতে পারি, বৃদ্ধ বয়সে একটা নিরাপত্তা পাই।”
এই দাবিকে সামনে রেখেই যৌনকর্মীরা সুপ্রিম কোর্টে পিটিশন দায়ের করেছেন। বিচারপতির এই সফর সেই আইনি প্রক্রিয়ারই অংশ বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
দুর্বার-এর ফিল্ড কো-অর্ডিনেটর রবি ঘোষ বলেন:
“এই প্রথমবার যৌনকর্মীরা বিচারপতির মুখোমুখি তাঁদের কথা বলতে পারলেন। এত বছর ধরে যে স্বপ্ন দেখছিলাম, আজ তা বাস্তবের মুখ দেখল। আমরা বিশ্বাস করছি, পরিবর্তনের দিন খুব কাছে।”
২৯ মে রবি ঠাকুর ভবনে হবে বিস্তারিত সচেতনতা ও অধিকারভিত্তিক আলোচনা সভা, যেখানে কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি সোমেন সেন সহ অন্যান্য বিচারক ও DALSA সদস্যরা উপস্থিত থাকবেন।
উপসংহার:
যৌনকর্মীদের জীবনে প্রথমবার এসেছে ন্যায়ের আলো।
এই সফর শুধুমাত্র প্রশাসনিক পর্যবেক্ষণ নয়, বরং এটি এক নতুন সূচনা, যেখানে পরিত্যক্ত সমাজের মানুষগুলোকেও মূল স্রোতে ফেরানোর বাস্তব উদ্যোগ দেখা যাচ্ছে।
আসানসোলের যৌনপল্লিতে পৌঁছাল ‘ন্যায়ের মন্দির’, ইতিহাসে প্রথমবার!

Leave a Reply