প্রয়োজনে মন্ত্রিত্ব ছেড়ে দিয়ে বাংলা ভাগের বিরুদ্ধে আন্দোলন করার ঘোষণা উদয়ন গুহের।

মনিরুল হক, কোচবিহার: বাংলা ভাগের বিরুদ্ধে লড়াই করতে গিয়ে প্রয়োজনে মন্ত্রিত্ব ছেড়ে ময়দানে নামতেও রাজি উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী উদয়ন গুহ। গতকাল তুফানগঞ্জে দলীয় একটি সভায় বক্তব্য রাখতে গিয়ে এমনটাই বললেন উদয়ন বাবু। শুধু তাই নয়, ওই লড়াই যদি রক্তাক্ত হয়, তার জন্য বিজেপি দায়ী থাকবে বলেও এক রকম হুশিয়ারি দেন তিনি। আগামী কাল অর্থাৎ ৬ সেপ্টেম্বর বাংলা ভাগের চক্রান্তকারীদের বিরুদ্ধে কোচবিহারে মহা মিছিল করবে তৃণমূল কংগ্রেস। তাঁর আগে জেলার বিভিন্ন এলাকায় প্রচার করছেন তৃণমূল কংগ্রেস নেতৃত্ব। তুফানগঞ্জে একটি প্রচার সভাতেই উদয়ন বাবু ওই বক্তব্য রাখেন।

তাঁর দাবি, তিনি ফরওয়ার্ড ব্লকে থাকা কালীন বিজেপি ও বাংলা ভাগের কট্টর বিরোধী ছিলেন। তখনও রাস্তায় নেমে রাজ্য ভাগের লড়াই করেছিলেন। এখন তৃণমূলে যোগ দিয়েছেন, মন্ত্রী হয়েছেন।

এখনও তিনি বিজেপি ও বাংলা ভাগের কট্টর বিরোধী বলে জানিয়ে বলেন, “ বাংলা ভাগের বিরুদ্ধে লড়াই করছি। আমার বাড়ি দিনহাটায়। সেখানকার সীমান্ত দিয়ে গরু পাচার হয়, তাই আমাকেও হয়ত গরু পাচারকারী তকমা দিয়ে জেলে ঢুকিয়ে দেওয়া হতে পারে।”

তুফানগঞ্জের তৃণমূল নেতৃত্বদের সতর্ক করে দিয়ে উদয়ন বাবু বালেন, “এখানকার সীমান্ত দিয়ে কয়লা পাচার। হয়ত আপনাদেরও কয়লা পাচারকারী বলে জেলে ঢুকিয়ে দেওয়া হতে পারে। সে আপনি বাড়িতে রান্নার গ্যাস আসার পর কয়লার ডিপোতে কোন দিন না গেলেও জেলের ভাত খেতে হতে পারে আপনাকে।”
গত বিধানসভা নির্বাচনে তুলনামূলক ভাবে উত্তরবঙ্গে ভালো ফল করে বিজেপি। তাই নির্বাচন পরবর্তী সময় বিজেপি নেতৃত্ব এক এক করে অনুন্নয়নের অভিযোগ তুলে উত্তরবঙ্গকে পৃথক রাজ্য করার পক্ষে মত দিতে শুরু করে। সম্প্রতি কোচবিহারে গ্রেটারদের একটি সভায় কেন্দ্রীয় মন্ত্রী নিশীথ প্রামানিক সহ জেলার বিজেপির প্রায় সমস্ত বিধায়ক উপস্থিত থেকে উত্তরবঙ্গকে পৃথক রাজ্য করার পক্ষে মত দেন। গ্রেটার নেতা অনন্ত রায় মহারাজ এক পা এগিয়ে কোচবিহার কেন্দ্র শাসিত অঞ্চল হয়ে গিয়েছে, এখন শুধু ঘোষণার বাকি বলে জানিয়ে দেন। এরপরেই বাংলা ভাগের বিরোধিতা করে বিজেপি বিরুদ্ধে তীব্র আন্দোলন গড়ে তোলার কথা ঘোষণা করে কোচবিহার জেলা তৃণমূল নেতৃত্ব। কোচবিহারে তাঁরা মহা মিছিল করার কর্মসূচী গ্রহণ করে। পঞ্চায়েত নির্বাচন আসন্ন। তার পরের বছর লোকসভা নির্বাচন। এর আগে যেভাবে পৃথক রাজ্যের পক্ষে ও বিপক্ষে জেলার দুই শক্তিশালী রাজনৈতিক দলের নেতারা যেভাবে নিজেদের বক্তব্য তুলে ধরছেন। তাতে নির্বাচন অনেক বেশী উত্তপ্ত হয়ে উঠতে পারে বলে রাজনৈতিক মহলের আশঙ্কা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *