বীরভূমের সিউড়ির বসাক বাড়ির পুজো।

0
1209

পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন বনেদি বাড়ির পুজোর মধ্যে অন্যতম হল বীরভূমের সিউড়ির বসাক বাড়ির দুর্গাপুজো। এই বছর ৬২ তম বর্ষে পদার্পণ করছে এই বাড়ির পুজো। ১৩৬৬ বঙ্গাব্দে বীরভূমের সিউড়িতে স্বর্গীয় যামিনী কান্ত বসাকের হাত ধরে শুরু হয় এই পুজো। তার আগে বাংলাদেশের ঢাকার ধামড়াই গ্রামে প্রথম শুরু হয়েছিল এই পুজো। তবে ১৩৬৬ বঙ্গাব্দে বাংলাদেশ থেকে সিউড়িতে এসে ঘট স্থাপনের মাধ্যমে শুরু হয় এখানের দুর্গাপুজো। প্রথম থেকেই এই বাড়িতে মাটির দুর্গা মূর্তি গড়ে পুজো করা হত। কিন্তু কালের নিয়মে একে একে কমেছে লোকবল। ফলে পরিবর্তন এসেছে চিরাচরিত কিছু প্রথায়। লোকবল কমে যাওয়ায় গত ২০১৭ সালে বসাক বাড়িতে স্থাপন করা হয় অষ্টধাতুর দুর্গা মূর্তি। সেই থেকে ওই মুর্তিকেই পুজো করা হয়। 
তবে এই বাড়ির পুজোর জৌলুস এখনও অক্ষুণ্ণ রয়েছে। প্রত্যেকবছর বেশ জাঁকজমকের সঙ্গে পারিবারিক রীতি মেনেই পুজো করা হয়। বিভিন্ন জায়গা থেকে এসে দর্শনার্থীরা ভিড় করেন এই বাড়ির পুজোয়। পঞ্চমীর দিন থেকেই শুরু হয়ে যায় নানা বিধি মেনে পুজো। যেহেতু এই বাড়িতে মা মনসাও বিরাজ করেন তাই পঞ্চমীর দিনেই মা মনসার ঘট স্থাপন করা হয়। সিউড়ির বসাক বাড়িতে দেবী দুর্গা বৈষ্ণবী মা হিসেবে পূজিত হন। ফলে পুজোর কয়েকদিন গোটা পরিবারে চলে নিরামিষ খাওয়া দাওয়া। মহাষষ্ঠীতে বোধনের ঘট বসানো হয়। ওইদিন মাকে নিজেদের বাড়িতে তৈরি নাড়ু,মুড়কি, বাতাসা ভোগ দেওয়া হয়। মহাসপ্তমীতে লুচি, পায়েসের ভোগ নিবেদন করা হয়। যেহেতু এখানে মা মনসা বিরাজ করেন তাই পঞ্চমী থেকে অষ্টমী প্রতিদিনই দুধ কলাও নিবেদন করা হয়। পুজোর প্রত্যেকটা দিনে নিয়ম মেনে হয় চণ্ডীপাঠ করা হয়। এরপর মহানবমীতে মহাযজ্ঞের আয়োজন করা হয় এবং তারপরেই মা মনসার ঘট বিসর্জন দেওয়া হয়। একইসঙ্গে নারায়ণ সেবাও করা হয়। দশমীর দিন মা দুর্গাকে পান্তা প্রসাদ যেমন চাল, কলা, দই, সিদ্ধি দিয়ে পান্তা প্রসাদ নিবেদন করা হয়। এরপর বাড়ির সকলে মেতে ওঠেন সিঁদুর খেলায়। সবশেষে মহাসমারহে পারিবারিক রীতি মেনেই ঘট বিসর্জনের মাধ্যম বিসর্জিত হন দুর্গা মা।

।।সংগৃহীত ইন্টারনেট।।