এবার পূজোতে চমক দিতে প্রস্তুত বাংলা-বিহার সীমান্তবর্তী এলাকায় অবস্থিত মালদা জেলার হরিশ্চন্দ্রপুর থানার পিপলা এলাকার পিপলা রামকৃষ্ণ ফ্যান ক্লাব।

নিজস্ব সংবাদদাতা, মালদাঃ- সব থেকে বড় দুর্গা। এই স্লোগানটির সঙ্গে বাঙালি পরিচিত হয়েছিল বেশ কিছু বছর আগে। কলকাতার দেশপ্রিয় পার্কের পুজোর শ্লোগান ছিল এটি। এবার দুর্গা পুজোতেও সেই শ্লোগান। জানেন কী কোথায়? এবার পূজোতে চমক দিতে প্রস্তুত বাংলা-বিহার সীমান্তবর্তী এলাকায় অবস্থিত মালদা জেলার হরিশ্চন্দ্রপুর থানার পিপলা এলাকার পিপলা রামকৃষ্ণ ফ্যান ক্লাব। প্রায় ৬০ ফিট উচ্চ দুর্গা প্রতিমা বানিয়ে তাক লাগাচ্ছে তারা। মনে করা হচ্ছে যা শুধু মালদা জেলা বা উত্তরবঙ্গ নয় পশ্চিমবঙ্গের সব থেকে বড়ো প্রতিমা। পিপলা রামকৃষ্ণ ফ্যান ক্লাবে এই মুহূর্তে তুমুল ব্যস্ততা শিল্পী এবং উদ্যোক্তাদের মধ্যে। কারণ আজ দেবি পক্ষের সূচনা হয়ে গেল। হাতে গোনা আর মাত্র কয়েকটা দিন। চলছে শেষ মুহূর্তের চূড়ান্ত প্রস্তুতি। ৬০ ফিট উচ্চ দুর্গা প্রতিমা এমন ভাবে তৈরি হচ্ছে যাতে ঝড়, জল বৃষ্টিতে কোন রকম সমস্যা না হয়। প্রতিমা তৈরীর দায়িত্বে যৌথ ভাবে আছেন মালদা এবং কৃষ্ণনগরের শিল্পী। তবে শুধুমাত্র প্রতিমা নয় প্যান্ডেল এবং আলোকসজ্জাতেও থাকছে চমক। উদ্যোক্তাদের আসা এবার রেকর্ড সংখ্যক ভিড় হবে তাদের পুজো মণ্ডপে। সেই ভিড় সামলাতে সব রকম ব্যবস্থা করা হচ্ছে ক্লাবের পক্ষ থেকে। ধর্ম হোক যার যার উৎসব সবার। দুর্গা পুজোতে সম্প্রীতির এক অনন্য নজির তৈরি করছে পিপলা রামকৃষ্ণ ফ্যান ক্লাব। প্রত্যেকবারের মত এইবারও হিন্দু মুসলিম সকলে মিলেই এই পুজোর আয়োজন করছে। পুজোর সম্পাদক এলাকার বিশিষ্ট রাজনীতিবিদ বুলবুল খান এবং প্রধান পৃষ্ঠপোষক জম্মু রহমান। পুজোর বাজেট প্রায় ১৫ লক্ষ টাকা। গত দুই বছর ইচ্ছে থাকলেও করোনা আবহাওয়া তেমন ভাবে বড় পুজো করতে পারেনি। সেই জায়গা থেকে এবার সব খামতি পুষিয়ে দেওয়া হচ্ছে। এই পুজোকে কেন্দ্র করে সমগ্র হরিশ্চন্দ্রপুর এলাকা জুড়েই মানুষের মধ্যে তৈরি হয়েছে চরম উন্মাদনা।

রামকৃষ্ণ ফ্যান ক্লাবের সভাপতি অভয় চক্রবর্তী বলেন, গত দুই বছর ধরে ইচ্ছা থাকলেও সম্ভব হয়নি। এই বছর আমাদের সেই ইচ্ছে পূরণ হচ্ছে। উত্তরবঙ্গের সব থেকে বড় দুর্গা আমরা তৈরি করছি। তাতে আমরা সব সময় সম্প্রীতির বার্তা দি। ধর্ম বর্ণ নির্বিশেষে সকলে মিলে আমরা এই পুজো করি।

রামকৃষ্ণ ফ্যান ক্লাবের সম্পাদক বুলবুল খান বলেন, বাজেট দশ লক্ষ টাকারও বেশি। বাজেট যেটাই থাকুক সেটা কোন সমস্যা না আমরা সেরা পুজোটা করতে চাই। ৬০ ফিট উচ্চ দূর্গা প্রতিমা তৈরি হচ্ছে। আমরা সকলে মিলে অপেক্ষা করে থাকি পুজোর। হিন্দু-মুসলিম সকলে মিলে এখানে আনন্দ করি।

শিল্পী তন্ময় দাস বলেন, আমি এবং কৃষ্ণনগরের একজন শিল্পী মিলে এই প্রতিমা তৈরীর দায়িত্বে আছি। আশা করছি মানুষের মধ্যে সারা ফেলবে। এতবড়ো প্রতিমা আমরাও এর আগে করি নি। খুব ভালো লাগছে।

পিতৃপক্ষের অবসান এবং দেবীপক্ষের সূচনা হয়ে গেলো। আপামর বাঙালী প্রস্তুতি নিচ্ছে মা কে ঘরে বরণ করার। শহর থেকে গ্রাম সব জায়গাতেই ব্যস্ততা তুঙ্গে। তবে পিপলা রামকৃষ্ণ ফ্যান ক্লাবের পুজো যে এবার শহর গ্রাম সব জায়গা তেই তাক লাগিয়ে দেবে তা বলার অপেক্ষা রাখে না।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *