উৎসব অনুষ্ঠানের মরসুমে কোলাঘাটে যেন অন‍্য মেলা, খুশি এলাকাবাসী।

পূর্ব মেদিনীপুর, নিজস্ব সংবাদদাতা:-  শীতের মরসুম মানেই চারদিকে উৎসব, বিভিন্ন সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, সংস্কৃতিক প্রতিযোগিতা, মেলার আয়োজন সহ একাধিক বিনোদনের আসরের পাশাপাশি পিকনিক সহ নানা বিনোদন মূলক আয়োজন করে থাকে বিভিন্ন সংগঠন । এর মধ্যেই পূর্ব মেদিনীপুর জেলার কোলাঘাটে এক স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার উদ‍্যোগে শুরু হল বিভিন্ন সমাজ সেবা মূলক কর্মসূচির বেশ বড় মাপের কর্মকাণ্ড। উদ্বোধনের দিন ৮ ই জানুয়ারি শীতের ভোরে কনকনে ঠান্ডাকে উপেক্ষা করেই বিভিন্ন জেলা থেকে আর্ত অসহায় অথর্ব এবং বয়স্ক মানুষ জন হাজির হয়ে যান কোলাঘাট নতুন বাজার রাধামাধব মন্দিরে। এখানে রাধামাধব মন্দির, জৈন ভবন, গৌরাঙ্গ ঘাট এবং নতুন বাজার হাটের সমগ্র এলাকা জুড়ে গড়ে তোলা হয়ে ছিল সম্পূর্ণ বিনাব‍্যায়ে বিভিন্ন পরিষেবা দেওয়ার পর্যাপ্ত ব‍্যবস্থা। সব মিলে এদিনের এই আয়োজন এক অন‍্য ধরনের মেলার পরিবেশ তৈরি করে ছিল বলা যায়। ব‍্যবস্থা ছিল, বিভিন্ন দূর্ঘটনায় যারা হাত ও পায়ের মত অঙ্গ চিরতরে হারিয়েছেন তাদের জন‍্য কৃত্রিম অঙ্গ প্রতিস্থাপন, জন্ম থেকেই যেসব শিশুদের ঠোঁট বা তালু কাটা তাদের জন‍্য প্লাস্টিক সার্জারি, মরণোত্তর চক্ষুদান অঙ্গীকার, ইসিজি – ব্লাড পেসার – ব্লাড সুগার ইত্যাদি পরীক্ষা, প্রাথমিক চক্ষু পরীক্ষা, ফেকো সার্জারি, পাওয়ার ম‍্যাচিং চশমা বিতরণ, ঔষধ বিতরণ , প্রতিবন্ধীদের সহায়ক সামগ্রী বিতরণ এবং স্বেচ্ছায় রক্তদানের মত বিভিন্ন সেবা মূলক ও জীবনদায়ী কর্মসূচি। এর জন‍্য নিয়োজিত ছিল ৩০জনের মেডিকেল টিম এবং প্রায় শতাধিক স্বেচ্ছা সেবক। উদ্যোগী সংস্থা সংকেতের পক্ষে শুভঙ্কর বোস জানান, “আমরা সারা বছর যে বিবিধ সেবামূলক কর্মসূচি নিয়ে থাকি, ২০২৩ সালের সেই কর্মসূচির আজকেই এইসবের মাধ্যমে সূচনা হল। সম্পূর্ণ বিনাব‍্যায়ে আর্ত, মুমুর্ষ, দুঃস্থ, বয়স্কদের জন‍্য বিভিন্ন পরিষেবায় আজ প্রায় দেড় হাজার মানুষ উপকার পেলেন বা পাবেন। আজকের আয়োজনে আমাদের সহযোগিতা করেছেন কলকাতার অ্যাসোসিয়েটেড চ‍্যারিটেবল ট্রাস্ট, কলকাতার এম পি বিড়লা হাসপাতাল এবং বিশিষ্ট সমাজ কর্মী বানোয়ারী লাল শর্মা। সমগ্র আয়োজনটি সম্পূর্ণরূপে শেষ হলে মোট ব‍্যায় হবে আনুমানিক প্রায় সতেরো লক্ষ টাকা। কৃত্রিম অঙ্গ তৈরির জন‍্য এসে ছিলেন পুরুলিয়ার বাঘমুন্ডি থেকে সড়ক দূর্ঘটনায় একটি পা হারানো মহিম মুর্মু। হাওড়ার খালনা থেকে মমতাজ বেগম এসেছিলেন তার জন্ম থেকে ঠোঁট কাটা সন্তানের প্লাস্টিক সার্জারির জন‍্য।কোলাঘাটে ছাতিন্দা গ্রামের নব্বই বছরের প্রফুল্ল বেরা এই শিবিরে নির্বাচিত হয়েছেন ফেকোসার্জারির জন‍্য। হুগলি জেলার বিরামপুর থেকে মধ‍্যবয়সি দম্পতি উজ্জ্বল দাস এবং মানসি দাস এদিন মরণোত্তর চক্ষুদানে অঙ্গীকার করলেন। কোলাঘাটের সুমন সর্দার এবং তার স্ত্রী স্বেচ্ছায় রক্তদনে সামিল হয়ে ছিলেন। সবমিলে এদিন স্থানীয় থেকে দূর দূরান্তের প্রায় দেড় হাজার মানুষ বিভিন্ন ভাবে উপকৃত হয়েছেন বলে আয়োজকদের পক্ষ হতে জানানো হয়। তবে এই সমাজসেবী সংগঠনের এই কর্মকাণ্ড তে আপ্লুত এলাকার সমাজসেবী মানুষ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *