সরকারি প্রকল্পের অর্থ নয়ছয় করার অভিযোগে, তালা দিয়ে বিক্ষোভ।

নিজস্ব সংবাদদাতা, বাঁকুড়াঃ – স্বনির্ভর গোষ্ঠীর সংঘের পরিচালন বোর্ড পরিবর্তনের দাবিতে বিষ্ণুপুরের অযোধ্যায় সংঘের রুমে তালা বন্ধ করে বিক্ষোভ দেখান। তাঁদের অভিযোগ, সংঘের বর্তমান পরিচালকদের একাংশ সরকারি প্রকল্পের অর্থ নয়ছয় করছেন। তাই তাঁরা বোর্ড পরিবর্তনের দাবিতে এদিন তালা দিয়ে বিক্ষোভ দেখান। ঘটনায় এলাকায় চাঞ্চল্য ছড়ায়।
এপ্রসঙ্গে ডিআরডিসির বাঁকুড়া জেলা আধিকারিক পার্থ ভৌমিক বলেন, অযোধ্যায় সংঘে তালা দেওয়া নিয়ে আমার কাছে কোনও খবর নেই। খোঁজ নিয়ে দেখা হবে।
অযোধ্যা গ্রামপঞ্চায়েতের প্রধান মানস গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, শুক্রবার উপসংঘের নেত্রীরা আমার কাছে এবিষয়ে লিখিত আবেদন জানিয়েছেন। বিষয়টি নিয়ে সংশ্লিষ্ট বিভাগের সঙ্গে আলোচনা করা হবে।
স্থানীয় বিশ্বকর্মা উপসংঘের নেত্রী পল্লবি মুখোপাধ্যায় বলেন, স্কুল ড্রেস থেকে শুরু করে ধান কেনা সহ সরকারি নানা প্রকল্প বিষয়ে উপসংঘের নেত্রীদেরকে জানানো হচ্ছে না। বিভিন্ন খাতে সরকারের পক্ষ থেকে প্রচুর পরিমান টাকা আসে। তার হিসাবও আমাদের দেখানো হচ্ছে না। তাই আমরা চাই ভোটের মাধ্যমে নতুন পরিচালন বোর্ড ঠিক করা হোক।
অগ্নিবীনা উপসংঘের নেত্রী শিল্পী গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, অযোধ্যা স্বনির্ভর গোষ্ঠীর সংঘে দুর্নীতির বিষয়ে পঞ্চায়েত থেকে শুরু করে ব্লক ও জেলা স্তরে লিখিত আবেদন জানানো হয়েছে। কিন্তু আজ পর্যন্ত কোনও পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। তাই এদিন আমরা তালা দিয়েছি।
অপর এক উপসংঘের নেত্রী বলেন, কিছুদিন আগে আমরা জেলা আধিকারিকের কাছে গিয়েছিলাম। তিনি পঞ্চায়েত ভোটের পর এনিয়ে পদক্ষেপ নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছিলেন। ভোট মিটলেও কোনও পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। যতদিন না এর বিহিত করা হবে আমরা তালা খুলব না।
এপ্রসঙ্গে অযোধ্যা গ্রামপঞ্চায়েতের সংঘের নেত্রী চায়না কর্মকার বলেন, দুর্নীতির অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা। আর সমবায়ের নিয়ম অনুযায়ী নির্বাচনের মাধ্যমে বোর্ড ঠিক করা হয়। এবং তা জেলা প্রশাসনের নির্দেশে নিয়ম অনুযায়ী হয়। ২০১৬সালের পর তা বন্ধ রয়েছে। তা সত্বেও কিছু উপসংঘের নেত্রী উদ্দেশ্য প্রণোদিত ভাবে সংঘের রুমে তালা দিয়েছেন। প্রশাসনকে তা জানানো হয়েছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রতিটি গ্রামপঞ্চায়েতের মতো অযোধ্যাতেও স্বনির্ভর গোষ্ঠীদের জন্য একটি সংঘ রয়েছে। তাতে একটি পরিচালন বোর্ড রয়েছে। ২০১২সাল থেকে ওই বোর্ড চলছে। বোর্ডে ১২জন সদস্য রয়েছে। বুথ স্তরে উপসংঘের নেত্রীদের মধ্যে থেকে সংঘের পরিচালন বোর্ড গঠন হয়। সংঘের মাধ্যমে স্কুল ড্রেস, সহায়ক মূল্যে ধান কেনা সহ অন্যান্য সরকারি প্রকল্প চালানো হয়। অভিযোগ, পরিচালন বোর্ডের কয়েকজন সদস্য সংঘে এক নায়কতন্ত্র কায়েক করে সরকারি প্রকল্পের টাকা নয়ছয় করছেন। তাই তাঁদেরকে পরিবর্তন করে অন্য নেত্রীদেরকে সংঘ পরিচালনার দায়িত্ব নেওয়ার আর্জি জানিয়ে বেশ কয়েকজন উপসংঘের নেত্রী বিক্ষোভ দেখান। এর আগে তাঁরা একই অভিযোগে সংঘের রুমে তালা দিয়েছিলেন। এদিন আবারও তাঁরা তালা দিয়ে বিক্ষোভ দেখান।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *