বাংলা অস্মিতা বনাম অনুপ্রবেশ বিতর্ক: মমতা সরব হতেই পাল্টা কণ্ঠে মোদী, তীব্র রাজনৈতিক চাপানউতোর।

দুর্গাপুর, নিজস্ব সংবাদদাতা:- বাংলায় অনুপ্রবেশকারী ইস্যুতে যখন তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সরব হয়ে রাজপথে নেমেছেন, ঠিক সেই সময়েই পাল্টা সুরে বাংলার ‘অস্মিতা’-কে সামনে রেখে বিজেপির বার্তা তুলে ধরলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। শুক্রবার দুর্গাপুরে এক জনসভা থেকে মোদী দাবি করেন, বাংলা ভাষা ও সংস্কৃতির প্রতি প্রকৃত সম্মান জানায় বিজেপিই। তাঁর কথায়, “ভারতের যেসব রাজ্যে বিজেপি ক্ষমতায়, সেখানকার বাঙালিরা সম্মান পান। বাংলা ভাষাকেও যথাযোগ্য মর্যাদা দেওয়া হয়।”
প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, “বিজেপির জন্মের মূল বীজ বাংলাতেই নিহিত। বিজেপি সরকারের আমলেই বাংলা ভাষাকে ধ্রুপদী ভাষার স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছে।” পাশাপাশি মোদী কটাক্ষ করেন, “অনুপ্রবেশকারীদের স্বার্থে তোষামোদ করে তৃণমূল ‘বাংলা অস্মিতা’-র নামে ভুয়ো প্রচার চালাচ্ছে।”
মোদীর অভিযোগ, পশ্চিমবঙ্গ এখন ভুয়ো নথিপত্র তৈরির আঁতুড়ঘর হয়ে উঠেছে। “অনুপ্রবেশকারীদের জন্য জালি নথি তৈরি করা হচ্ছে। এর পিছনে রয়েছে গোটা একটা সিস্টেম। যা দেশের নিরাপত্তা এবং বাংলার সংস্কৃতির জন্য বিপজ্জনক। অথচ তৃণমূল তোষামদের স্বার্থে সব সীমা পেরিয়ে যাচ্ছে।” — বলেন মোদী।
তিনি আরও হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, “যারা ভারতের নাগরিক নয়, যারা অনুপ্রবেশ করে দেশে ঢুকেছে, তাদের বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ চলবে। বাংলার অস্মিতার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র চলতে দেওয়া হবে না। এটা মোদীর গ্যারান্টি।”
প্রসঙ্গত, তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সাম্প্রতিক সময়ে ভিনরাজ্যে বাংলা ভাষাভাষী মানুষের উপর হেনস্থার অভিযোগ তুলে প্রতিবাদে রাস্তায় নামেন। তাঁর অভিযোগ ছিল, বিজেপি-শাসিত রাজ্যগুলিতে বাংলায় কথা বললেই তাঁদের বাংলাদেশি বলে দাগিয়ে দেওয়া হচ্ছে, আটকে রাখা হচ্ছে, এমনকি জেলে পাঠানো হচ্ছে। এদিন এই প্রতিবাদ কর্মসূচির ঠিক পরেই মোদীর এই মন্তব্যে রাজনৈতিক উত্তেজনা আরও তুঙ্গে।
এই প্রেক্ষিতে তৃণমূল কড়া পাল্টা জবাব দিয়ে বলেছে, “অসম, দিল্লি, মহারাষ্ট্র, ওড়িশা, হরিয়ানা, মধ্যপ্রদেশ, গুজরাট— সব বিজেপি শাসিত রাজ্যেই বাঙালিদের হেনস্থা করা হচ্ছে। মোদী হয় অসাধারণ মিথ্যে বলছেন, অথবা মারাত্মকভাবে অজ্ঞ।”

সারসংক্ষেপে:
রাজ্যের রাজনীতি ফের তপ্ত ‘বাংলা অস্মিতা’ এবং ‘অনুপ্রবেশকারী বিতর্ক’ ঘিরে। একদিকে মমতা প্রতিবাদী মুখ, অন্যদিকে মোদীর হুঁশিয়ারি— বাংলার সম্মান ও নিরাপত্তা ইস্যুতে লড়াই এখন সরাসরি রাজনৈতিক যুদ্ধক্ষেত্রে পরিণত।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *