কলকাতা, নিজস্ব সংবাদদাতা :- রাজ্যের জনসভা থেকে ফের তৃণমূল কংগ্রেস ও রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে তীব্র আক্রমণ শানালেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি।
প্রধানমন্ত্রীর অভিযোগ, “আমরা বাংলার জন্য যে টাকা সরাসরি রাজ্য সরকারকে পাঠাই, তার বেশিরভাগটাই লুট হয়ে যায়। সেই টাকা মানুষের কল্যাণে খরচ হয় না, চলে যায় তৃণমূলের কর্মীদের হাতে। তাই বাংলার উন্নয়ন আটকে রয়েছে। একসময় ত্রিপুরা ও আসামেরও একই অবস্থা ছিল। কিন্তু বিজেপি সরকার ক্ষমতায় আসার পর সেসব রাজ্যের মানুষ আজ প্রকৃত কল্যাণমূলক প্রকল্পের সুফল পাচ্ছেন। তৃণমূল যতদিন ক্ষমতায় থাকবে, বাংলার উন্নয়ন ততদিন বন্ধই থাকবে।”
মোদি একে একে কেন্দ্রের বিভিন্ন সমাজকল্যাণমূলক প্রকল্পের কথা তুলে ধরেন। তারপর বলেন, “বঙ্গ প্রথমে কংগ্রেস, তারপর বামেদের শাসন দেখেছে। পনেরো বছর আগে ‘মা-মাটি-মানুষ’-এর উপর ভরসা করে পরিবর্তনের ডাক দিয়েছিলেন আপনারা। কিন্তু আগের থেকেও পরিস্থিতি খারাপ হয়েছে। এটা নিশ্চিত—তৃণমূল যতদিন থাকবে, উন্নয়ন আটকে থাকবে। তৃণমূলকে যেতে হবে, তাহলেই আসবে প্রকৃত পরিবর্তন।”
তিনি আরও বলেন, “এমন পরিবর্তন, যা মহিলাদের নিরাপত্তা দেবে, দোকান-ঘর পুড়িয়ে দেওয়া বন্ধ করবে, গরিবদের প্রাপ্য অধিকার পৌঁছে দেবে, কৃষকদের উন্নতি নিশ্চিত করবে।”
এরপরই মোদি স্লোগান তোলেন— “বাঁচতে চাই, তাই চাই বিজেপি।” এবং যোগ করেন, “আমরা জঙ্গিদের শিক্ষা দিয়েছি।”
সভামঞ্চ থেকে মোদি ‘অপারেশন সিঁদুর’-এর প্রসঙ্গও তোলেন। তিনি বলেন, “আমাদের সেনারা জঙ্গিদের এমন শিক্ষা দিয়েছে যে পাকিস্তানের ঘুম উড়ে গিয়েছে। দেশীয় অস্ত্র ব্যবহার করা হয়েছে। বাংলার সেনাদের স্যালুট জানাই।”
বাংলার উন্নয়নের রূপরেখা নিয়ে আশ্বাস দিয়ে মোদি বলেন, “বাংলায় বিজেপি সরকার গঠন করুন। আমরা গড়ব শ্যামাপ্রসাদ মুখার্জির স্বপ্নের বাংলা। উন্নত বাংলা—এটাই মোদির গ্যারান্টি। বিজেপির কাছে উন্নয়নের রোডম্যাপ আছে, কিন্তু তৃণমূলের কিছুই নেই।”
প্রধানমন্ত্রী এও দাবি করেন, “আমরাই বাংলাকে শাস্ত্রীয় ভাষার মর্যাদা দিয়েছি। বাংলা ভাষা ও সংস্কৃতিকে আরও শক্তিশালী করার জন্য গর্বের সঙ্গে কাজ করছে বিজেপি সরকার।”
এখানেই থেমে থাকেননি মোদি। তিনি বলেন, “বাংলায় অনুপ্রবেশকারীদের আশ্রয় দিচ্ছে তৃণমূল। প্রশ্ন হলো, অনুপ্রবেশকারীদের কি তাড়ানো উচিত নয়? কে তাড়াবে? বিজেপি তাড়াবে। বিজেপিকে ভোট দিন, বাংলায় অনুপ্রবেশকারীরা পালাবে। ভারতের সম্পদ সীমিত। সেই সম্পদ আমাদের যুবক-যুবতীদের চাকরি ও নাগরিকদের সুবিধা দিতেই ব্যবহার করতে হবে। অথচ অনুপ্রবেশকারীরা চাকরি ছিনিয়ে নিচ্ছে, নাগরিকদের অধিকার কাড়ছে, মায়েদের-বোনেদের মর্যাদা নষ্ট করছে। তৃণমূল ভোটব্যাঙ্কের রাজনীতির জন্য তাঁদের আশ্রয় দিচ্ছে। একই সঙ্গে চলছে ভূমি কেলেঙ্কারিও।”
কলকাতার সভায় বিস্ফোরক মোদি, তৃণমূলকে একহাত।

Leave a Reply