পঞ্চায়েত নিরব, বধির, হতদরিদ্র রেশমা বিবি তার দুই নাবালক সন্তান, ভাই ও বৃদ্ধ বাবা মাকে নিয়ে গভীর জঙ্গলে ভাঙাচোরা ঘরে অর্ধাহারে, অনাহারে লড়াই করছে মৃত্যুর সঙ্গে।

0
297

বাঁকুড়া, নিজস্ব সংবাদদাতা:-  বাঁকুড়া জেলার ওন্দা থানার পুনিশোল পঞ্চায়েতের গভীর জঙ্গলের মাঝে জরাজীর্ণ মাটির ঘরে অর্ধাহারে, অনাহারে জীবন্তমৃত অবস্থায় পরিবারকে নিয়ে লড়াই করে যাচ্ছেন রেশমা বিবি। জঙ্গলের বুক চিড়ে চলে গেছে একটি মরাম বিছানো পথ, যে পথে সারাদিনে হয়তো একটা মানুষও যাতায়াত করে না, গেলে হয়তো হাতে পায়ে ধরে 2-4 টাকা ভিক্ষা চেয়ে হলেও নাবালক দুই সন্তান, ছোট্টভাই এবং বৃদ্ধ বাবা-মার মুখে দুটো অন্ন তুলে দিতে পারতো কিন্তু জঙ্গলের মাঝে কেইবা যাবে, দরকারি বা কি ? অতএব রেশমা বিবি জীবন জুড়ে শুধু যন্ত্রনা আর চোখের জল।
বৃদ্ধা মা বাবা সহ 3 নাবালকের মুখের দিকে তাকিয়ে তোলপাড় হয় বুকের মাঝে কিন্তু নিয়তি চরম অভিশাপ হয়ে বিরাজ করছে তার জীবনে অতএব চোখের জলেই সম্বল জীবনের প্রতিটা মুহূর্তে।
রেশমা বিবি চোখের জলে গলেনা যেমন পাষাণ ঈশ্বরের হৃদয় তেমনি গলে না মানুষের মন অতএব জঙ্গলের মাঝে অর্ধমৃত পরিবারকে নিয়ে অসহায় আর্তনাদ আর আর্তনাদ।
অবশ্য এর জন্য
রেশমা বিবি লড়াই ছাড়েন নি, তিনি মাথার ছাদের জন্য বার বার ছুটেছেন স্থানীয় পঞ্চায়েতে,পঞ্চায়েত থেকে বলা হয়েছে একবার ত্রিপল দিয়েছি আর দেয়া যাবেনা, সরকার ঘর দেয় নি ঘর পাবে না, দিলে দেখা যাবে। সত্যি এ এক মধ্যযুগীয় ইতিহাসের ছেঁড়া পাতা যেন জীবন্ত হয়ে আধুনিক সভ্যতা কে ব্যঙ্গ বিদ্রুপ করছে।

আমাদের সাংবাদিকের ক্যামেরার সামনে কান্নায় ভেঙে পড়েছেন রেশমা বিবি।
তবুও বোঝে না কেউই রেশমা বিবির যন্ত্রণা,প্রাকৃতিক চরম বিপর্যয়ের সময় রেশমা বিবি বসে থাকেন সারারাত। পেটে নাই ভাত, মাথায় নাই ছাদ। মাটির দেওয়াল যেকোনো মুহূর্তে ধসে পড়ে ঘটতে পারে জীবন্ত সমাধি।
দেখেনা ঈশ্বর, শোনে না কথা মানুষ,, হাহাকার করে রেশমা বিবি, জঙ্গলের বাতাস হয় ভারী, সত্যিই কি নেই তেমন কোন মানুষ, যিনি পরম মমতায় তাঁর সাহায্যের দুই হাত বাড়িয়ে দেবেন রেশমা বিবি দিকে ?

বাঁকুড়া থেকে আবদুল হাই এর বিশেষ প্রতিবেদন

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here