গায়ত্রী ভাদুড়ী-র দুটি কবিতা।

শীত প্রহর

মনোরম রোদ পেড়িয়ে হাস্নুহানা বিকেল,
শুষ্ক শাখায় কাঠঠোকরার এফোঁড়ওফোঁড়,
চুঁইয়ে পড়ে নি:শব্দে চেনা প্রহেলিকা।
আঙুলের ভাঁজে লেগে থাকে সে শীত প্রহর

গোলাপি আঁচল জড়িয়ে আছে উঠোনশরীর
বুকের কাছে জমেছে কটা ঝরা পাতা
বাউলের একতারাতে বাজে পরিযায়ী সুর
উত্তরে হাওয়ায় কাটাকুটি খেলে নীরবতা।

শিশিরভেজা নিয়ন আলোর স্তব্ধ শহর,
আধবোজা চোখে খোঁজে নক্সীকাঁথার সুখ
জোনাকি সন্ধ্যা টিমটিমিয়ে জ্বলে দূরে…
আধখানা চাঁদ মাফলারে ঢাকে মুখ।

লক্ষ লক্ষ নীলচে তারার নহবত,
টুপটাপ ঝরে ধূসর স্মৃতিগন্ধ!
গতজন্মের বুকে কান পেতে শুধু শুনি
বয়ে যাওয়া চেনা জলপ্রপাতের ছন্দ।

কাহিনী

আজ আর একবার বৃষ্টি নামতে দেখলাম
লাল নীল সবুজ কত রঙের চোখ ধাঁধানো!
উড়ন্ত ভিজে গাঙচিলের মুখে একটা মৃত সরু সাপ।
চোখ ঠিকরিয়ে বেরিয়ে আসছে পদানত করবার উল্লাস!
কয়েকটা রঙহীন বৃষ্টিও গোচর হল,ওরা গা বাঁচিয়ে আশ্রয় নিয়েছে অনতিদূরে ঝাপসা কার্নিশে।
হয়তো রঙে বিতৃষ্ণা,কোনো কারণেই…
দিগন্ত ছেয়েছে অনামী গুল্মের বাড়বারন্ত।
বাতাসী ধূসর নির্জনতায় শোনা যায় সময়ের বহমান শব্দ।
দিনের আলোয় যে অবয়ব গুলো ঘুমিয়ে থাকে বর্ষারাত বাড়তেই জেগে ওঠে।
রঙীন বৃষ্টিতে ভিজতে থাকে!
আমার গায়ে লাগে রঙহীন বৃষ্টিছাঁট।
চার দেওয়ালে কসমিক শূন্যতা!
কাগজের ভাঁজে বৃত্তান্তের ইতিহাস থেকে উঠে আসে মুঠো ভর্তি পরাজয়ের কাহিনী।
চিক চিক করে ওঠে চোখ….
অন্য প্রান্তের আকাশে হয়তো জয়ের রৌদ্রজ্বল দিন…।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *