বাঘ তাড়াতে গিয়ে বাঘের থাবায় জখম বনকর্মী, খাঁচা পাতা হল এলাকায়।

0
360

নিজস্ব সংবাদদাতা,ক্যানিং – বাঘ কে তাড়িয়ে সুন্দরবনের জঙ্গলে ফেরত পাঠাতে গিয়ে বাঘের থাবায় জখম হলেন এক বনকর্মী। আহত ওই বনকর্মীর নাম পার্থ হালদার। আহত ওই বন কর্মীকে চিকিৎসার জন্য শনিবার দুপুরে নিয়ে আসা হয় গোসাবা ব্লক হাসপাতাল। চিকিৎসার পর তাঁকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। আহত ওই বনকর্মীর বাড়ি বারুইপুর থানার চম্পাহাটি এলাকায়। বেশ কয়েক বছর ধরেই সুন্দরবনের সজনেখালি রেঞ্জ অফিসে পোস্টিং আছেন তিনি। লোকালয়ে ঢুকে পড়া বাঘকে এলাকা থেকে বের করতে হবে,সেই জন্য অন্যান্য কর্মীদের সঙ্গে তিনিও উপস্থিত হয়েছিলেন গোসাবার সাতজেলিয়া গ্রাম পঞ্চায়েতের পরশমনি এলাকাতে। শনিবার সকালে সেখানের লোকালয় সংলগ্ন জঙ্গলেই বাঘের থাবায় জখম হন ওই ব্যাঘ্র প্রকল্পের কর্মী।

বৃহস্পতিবার রাতে ঝিলার জঙ্গল থেকে একটি রয়েল বেঙ্গল টাইগার চলে আসে সুন্দরবনের গোসবা ব্লকের সাতজেলিয়া গ্রাম পঞ্চায়েতের চরঘেরি এলাকায়। এরপর সেখানেই বাঘটিকে জাল দিয়ে ঘিরে ফেলা হয় শুক্রবার সকালেই। কিন্তু রাতের অন্ধকারে সেই এলাকা থেকে বাঘ পালিয়ে চলে আসে আরও প্রায় ৫ কিলোমিটার পশ্চিম দিকের পরশমনি এলাকায়। ওই এলাকাটি জাল দিয়ে আপাতত ঘিরে ফেলেছে বনদপ্তর এর কর্মীরা। জাল দিয়ে ঘিরে ফেলার পর বাঘটিকে তাড়িয়ে জঙ্গলে ফেরত পাঠানোর জন্য একপ্রস্থ চেষ্টা করেন বনদপ্তরের কর্মীরা। কিন্তু বাজি, পটকার শব্দ ,এলাকার মানুষের চিৎকার সবকিছু উপেক্ষা করে বাঘ স্বমহিমায় ঝাঁপিয়ে পড়ে বনকর্মীদের উপরে। বাঘের থাবায় জল কাদার মধ্যে পড়ে যান আহত বনকর্মী পার্থ হালদার। তার ঘাড়ে ও গলার কাছে বাঘের নখের আঁচড় লেগেছে। এরপর তড়িঘড়ি তাকে উদ্ধার করে সেখান থেকে স্পিডবোটে করে আনা হয় তাকে গোসাবা হাসপাতালে। চিকিৎসার পর তাঁকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। অন্যদিকে বাঘটিকে ধরার জন্য দুটি খাঁচা পাতা হয়েছে ছাগলের টোপ দিয়ে। এলাকাটি জাল দিয়ে ঘিরে বনকর্মীদের সাথে নজরদারি চালাচ্ছেন গ্রামবাসীরাও। আহত বনকর্মী পার্থ হালদার বলেন, বিভিন্ন ছোট ছোট দলে ভাগ হয়ে আমরা বাঘকে লোকালয় থেকে জঙ্গলে ফেরত পাঠানোর চেষ্টা করছিলাম। আর ঠিক সেই সময় বাঘ আমাদের পাশ দিয়ে ছুটে পালিয়ে অন্যদিকে যাওয়ার চেষ্টা করছিল। আর সামনে পড়ে যাই আমি। বাঘটি তখন থাবা দিয়ে দেয়।
উল্লেখ্য গত সপ্তাহে কুলতলী লোকালয়ে ঢুকে পড়েছিল একটি রয়েল বেঙ্গল টাইগার। প্রায় সাত দিন লোকালয়ে থাকার পর বাঘটি কে ঘুমপাড়ানি গুলির সাহায্যে পাঠানো হয়েছিল জঙ্গলে। এ ক্ষেত্রেও গত দুদিন ধরে বাঘটি এলাকায় দাপিয়ে বেড়াচ্ছে। এখনো তাকে ধরা সম্ভব হয়নি।