দীর্ঘ কয়েক বছর ধরে বেহাল নিকাশি ব্যবস্থা, অবশেষে এলাকাবাসী হাতে হাত মিলিয়ে নিকাশি ব্যবস্থার সংস্কার আপাতত ভাবে সমাধান করল।

নিজস্ব সংবাদদাতা, মালদা:- দীর্ঘ কয়েক বছর ধরে বেহাল নিকাশি ব্যবস্থা। ড্রেন নিকাশি ব্যবস্থা ঠিক না থাকায়,অল্প বৃষ্টিতেই এলাকায় জমে যায় জল। ফলে ভোগান্তির সম্মুখীন হতে হয় সাধারণ মানুষকে। দীর্ঘদিন ধরে শাসকদল পরিচালিত গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রতিনিধিদের কাছে গেলেও হয়নি কোনো সুরাহা। তাই অবশেষে এলাকাবাসী হাতে হাত মিলিয়ে নিকাশি ব্যবস্থার সংস্কার আপাতত ভাবে সমাধান করল। এই ঘটনা নিয়ে তৃণমূলকে তীব্র কটাক্ষ করেছে বিজেপি। পাল্টা জবাব দিয়েছে তৃণমূল। তুঙ্গে রাজনৈতিক তরজা।

এমনই ঘটনা ঘটেছে মালদহ জেলার হরিশচন্দ্রপুর ১ নম্বর ব্লকের অন্তর্গত হরিশ্চন্দ্রপুর গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার হরিশ্চন্দ্রপুর ডেলি মার্কেট এলাকা। যাকে হরিশ্চন্দ্রপুরের সদর এলাকা বলা চলে। ব্যাবসায়িক দিক দিয়েও এই এলাকা যথেষ্ট গুরুত্বপূর্ণ। প্রত্যেক দিন আশে-পাশের এলাকার বহু মানুষ যাতায়াত করে এই রাস্তা দিয়ে। কিন্তু সমস্যা হয় একটু বৃষ্টি হলেই। এই সমস্যা প্রায় দীর্ঘ কয়েক বছরের। যেখানে হরিশচন্দ্রপুর গ্রাম পঞ্চায়েত শাসকদলের দখলে, জেলা পরিষদ থেকে বিধায়ক শাসকদলের, সেখানে এখনো পর্যন্ত কেন সমস্যার সমাধান হলো না তা নিয়ে প্রশ্ন তুলছে খোদ‌ এলাকাবাসী। রাত পোহালেই সরস্বতী পুজো। ছাত্র-ছাত্রী থেকে বহু মানুষ বেরোবে দেবী দর্শন করতে। স্কুল কলেজ পাড়ায় পাড়ায় হবে পুজো। তাই যাতে এই জমা জল নিয়ে মানুষকে সমস্যাই না পড়তে হয়‌ তার জন্যই এবার প্রশাসনের অপেক্ষা না করে উদ্যোগ নিতে দেখা গেল এলাকাবাসীকে। নিজেদের উদ্যোগে নিকাশি ব্যবস্থার সমস্যার সমাধান করল তারা। এই ঘটনাতে রাজনীতির রং খুঁজে পাচ্ছে বিজেপি। যদিও বিজেপির এই অভিযোগকে আমল দিতে নারাজ তৃণমূল।

স্থানীয় বাসিন্দা শান্তনু ঘোষ বলেন, দীর্ঘদিন ধরে এই সমস্যা। কিন্তু প্রশাসনকে জানালেও তারা কোনো কর্ণপাত করেনি। আগামীকাল সরস্বতী পুজো। বাচ্চা বাচ্চা ছেলে মেয়েরা পুজো করছে। তাই আমরা নিজেরাই উদ্যোগ নিয়ে এই সমস্যার সমাধান করলাম। প্রশাসন যদি স্থায়ী কোনো সমাধান করে খুব ভালো হয়।”

স্থানীয় বাসিন্দা চন্দ্রনাথ দাস বলেন, একটু বৃষ্টিতে জল জমে যায়। প্রচন্ড সমস্যার সম্মুখীন হতে হয় আমাদের। জন-প্রতিনিধি হোক বা প্রশাসন কেও সমস্যার সমাধান করে নি। তাই আমরা উদ্যোগ নিয়ে করলাম।”

জেলা বিজেপি সাংগঠনিক সম্পাদক রূপেশ আগরওয়াল কটাক্ষ করে বলেন, শাসকদল কাজের ক্ষেত্র রাজনীতি করছে। যেহেতু হরিশ্চন্দ্রপুর সদর এলাকা থেকে বিজেপি বেশি ভোট পায় তাই এই এলাকায় কাজ হচ্ছে না। এরা কাটমানির সরকার। মানুষ সব দেখে রাখছে সঠিক সময়ে জবাব দেবে।”

পাল্টা তৃণমূলের অঞ্চল চেয়ারম্যান সঞ্জীব গুপ্তা বলেন,ওই এলাকায় প্রত্যেকটা রাস্তা ঢালাইয়ের কাজ হয়েছে। ড্রেন টা ভেঙে যাওয়ায় একটু সমস্যা হচ্ছে। এই সমস্যা বেশি দিন হবে না। বিজেপি সব কিছুতে রাজনীতি করে তাই মানুষ ওদের জবাব দিচ্ছে।”l

হরিশ্চন্দ্রপুর ১ বিডিও অনির্বান বসু ফোন মারফত জানান, ড্রেনের জন্য ওখানে সমস্যা হচ্ছে। আমরা নজর রাখছি। যাতে সমাধান হয়। তবে এলাকাবাসী কারোর অপেক্ষা না করে নিজেদের কাজ নিজেরা করলো আমি সেটাকে সাধুবাদ জানাচ্ছি। ”

তবে রাস্তাঘাট, পানীয় জল থেকে শুরু করে ব্যবস্থা এইগুলি হল মানুষের প্রাথমিক চাহিদা। কারণ না তো মূলত সমস্যার সম্মুখীন হতে হয় সাধারণ মানুষকে। তাই এই ঘটনার মধ্যে রাজনীতি না এনে যাতে সুষ্ঠু ভাবে সমস্যার সমাধান হয় সেই দিকে নজর দেওয়া উচিত প্রশাসনের।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *